কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডব চলছে। দুপুর ১২টার পর থেকে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের আকিয়াব বন্দর ও সিট্টোএ অতিক্রম করছে মোখা। আবহাওয়া দপ্তরের মতে দুপুর ৩টায় সময় মোখার অবস্থান কক্সবাজার থেকে ২০০ কিমি, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৮৫ কিমি এবল মংলা বন্দর থেকে ৪৪৫ কিমি দূরে।
মোখার প্রভাবে কক্সবাজার
সাগরে পানি বেড়েছে ৩-৫ ফুট মত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি সন্ধ্যা নাগাদ টেকনাফ সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমার এলাকা দিয়ে অতিক্রম করে যেতে পারে। এই রির্পোট লেখার সময় টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে জোরেশোরে বাতাস বইছে। অনেক জায়গায় গাছপালা ভেঙে পড়ছে।
তবে মোখা বিষয়ে ব্যাপক ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়টি পরিকল্পিত কোন নাটক কিনা তা খতীয়ে দেখা দরকার। এতে জানের ক্ষতি না হলেও জনগণের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রচুর।
এদিকে আজ সকালে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানিয়েছেন,
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মূল আঘাত হানবে মিয়ানমারের ওপর। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা টেকনাফ থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বে দক্ষিণ মিয়ানমারের সিটুই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হবে।
রোববার (১৪ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর ভবনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল ঝুঁকিটা চলে যাবে মিয়ানমার অঞ্চল দিয়ে। টেকনাফ, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের অঞ্চলগুলো ঝুঁকিমুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে শুরু থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আমাদের যে ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল, এখন আর ততটা ঝুঁকি নেই।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার হবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এসময়ে দ্রুত বেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে, যা বর্তমানে (সাড়ে দশটায়) রয়েছে ৬০ কিলোমিটার পার আওয়ার।
তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এর পরেও মোখার প্রভাব আরো কয়েক ঘণ্ঠা থাকতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার মিয়ানমার উপর দিয়ে অতিক্রম এবং ব্যাপক হাঁকডাক করে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। তাদের মতে ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশে আঘাত না করে মিয়ানমারের উপর দিয়ে অতিক্রম করার গতিপথ আগেই জানা থাকলে খামখা কক্সবাজার সহ উপকূলের লাখ লাখ মানুষকে ঘর-বাড়ি ছাড়া করার কী দরকার ছিল।শুধু কক্সবাজার উপকূলের ৫৭৬ আশ্রয় কেন্দ্র, অর্ধশতাধিক হোটেলে (যেগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে) এবং নিজেদের উদ্যোগে হোটেল মোটেল ও বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন পাঁচ লাখেরও বেশী মানুষ। এতে একদিকে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বড় ধরণের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
এছাড়াও এবিষয়ে সরকারের প্রচার প্রচারণা ও নানা প্রস্তুতিতে নষ্ট হয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। সচেতন মহল পুরো বিষয়টি কেন যেন ড্রামা বা রহস্যজনক বলেই মনে করছেন।