ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নারী পাচারের পর কলকাতার এক যৌনপল্লীতে বিক্রি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পর থানায় মামলা দায়ের ভিকটিমের পরিবারের। আর সেই মামলার সূত্র ধরে পাচারের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন র্যাব সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরের দিকে র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া পাচারকারীরা হলেন-সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের ইমরান গাজী (৩০) সাবানা সুলতানা (২৫) ও খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের আব্দুস সালাম শেখ (৩২)।
র্যাব ৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের কমান্ডার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,
গত ২১ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকার শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন পাইপরাস্তা এলাকা হতে এক নারীকে আসামীরা সৌদিআরবে ভালো বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে নিয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে কলকাতার একটি যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়। অতঃপর ভিকটিম যৌনপল্লীর অত্যাচার সহ্য করতে না পারায় উক্ত যৌনপল্লী পরিচালনাকারী লোকজন তাকে আসামীদের নিকট ফেরৎ প্রদান করতে চায়। একই সাথে তাদের কাছ থেকে গৃহিত অর্থ ফেরত চাওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামীরা ওই নারীকে অন্য একটি হোটেলে নিয়ে বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। যাতে সে যৌনপল্লীতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে রাজি হয়। তখন ভারতীয় একটি এনজিও (বিডিএল স্মাইল চাইল্ড ফাউন্ডেশন) ঘটনা জানতে পেরে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। ভিকটিম বর্তমানে উল্লেখিত এনজিওর হেফাজতে আছে। আসামীরা সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের প্রধান ও সক্রিয় সদস্য। নিরীহ দরিদ্র মেয়েদেরকে সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশে ভালো বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে নগদ টাকা আত্মসাৎ করা ও দেশের বাইরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পতিতালয়ে বিক্রি করাই তাদের পেশা। এই ঘটনার বিষয় অবগত হয়ে ভিকটিমের স্বামী মোঃ ফয়সাল ডিএমপি, ঢাকা শ্যামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যব-৬, সিপিসি-১, সাতক্ষীরা এর একটি আভিযানিক দল আজ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানা এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নারী অপহরনণপূর্বক পতিতাবৃত্তি করানোর জন্য বিদেশে পাচার করা সংঘবদ্ধ চক্রের প্রধান এজাহারনামীয় আসামী মোঃ ইমরান গাজী, সাবানা সুলতানা, ও কয়রার আব্দুস সালাম শেখকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায় যে, ইতোপূর্বে কয়েকজন নারীকে তারা পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে ঢাকার শ্যামপুর থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।