ভুয়া রিপোর্টে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দাতা সংস্থার অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ
০১ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৪ পিএম | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৪ পিএম
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির সামাজিক সম্প্রীতির নামে নয়ছয় করে দাতা সংস্থার টাকা আআত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেইভ দ্যা চিন্ডেন, পিএইচডি ,সিএনারেস ও বিটা নামের কয়েটি সংস্থার বিরুদ্ধে। চুক্তি অনুযায়ী সঠিক কাজ না করে ভূঁয়া রিপোর্টের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিয়োজিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার বিরুদ্ধে ক্যাম্পের রিপোজি ও হোস্ট কমিউনিটির কোন ধরনের সম্প্রীতির উন্নয়ন হচ্ছে না বরং দিনদিন অবনতি দিকে ধাবিত হচ্ছে । এধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দাতাদের অর্থ সহায়তা কমে যাচ্ছে বলে মনে করেছেন উখিয়ার সুশীল সমাজ।
সম্প্রতি উখিয়া-টেকনাফের হোস্ট কমিউনিটির লোকজন ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লোকজনের মাঝে সামাজিক সম্প্রীতির ঘাটতি রয়েছে বলে নানান অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগণদের মধ্যে ও তীব্র হানাহানি, মারামারি, হুমকি-ধমকি ও মাদক পাচারের মতো জঘন্য অপরাধ মুলুক কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়তই হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে অভিযোগের শেষ নেই।
এমতাবস্থায় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও রোহিঙ্গা কমিউনিটিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য দাতা সংস্থা বিএমজির অর্থায়নে কাজ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থা গুলো। ১লা নভেম্বর ২০২২ থেকে ৩১ডিসেম্বর ০২৩ শেষ করার কথা রয়েছে।
গতকাল উখিয়া উপজেলার হল রুমে প্রকল্পের প্রগ্রেস শেয়ারিং মিটিং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গত ৬ মাসের কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায় ছয় মাসে শুধুমাত্র ছয় জন ফিল্ড ফেসেলিটর দিয়ে ৫৪০ টি মা সমাবেশ,১৩৫টি তাদের ট্রেনিং,৩০ টি হেল্থ সাপোর্ট মিটিং,৩৬টি ইয়ুথ ক্লাবের মিটিং ,১৪৪ ইয়ুথ গ্রুপের মিটিং,১৩টি
কিশোরীদের মিটিং ৯৮৪ জন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাপোর্ট,১১টি ফোকশন ১১টি নাটক,৭টি ফ্লিম শো,২০টি রেডিও তে মিটিং,১৪৪দিন মাইকিং ১৬টি টিভি চ্যানেল প্রচারসহ অসংখ্যবার কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এত অল্প সময়ে এত অল্প সংখ্যক লোক দিয়ে কিভাবে এতগুলো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেন তা জিজ্ঞেস করিলে কোন সদোত্তর মেলেনি। সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত মেম্বার ও হোষ্ট কমিউনিটির লোক জনের কাছে ১৪৪ মাইকিং আপনারা শুনছেন কিনা জিজ্ঞেস করেন এবং সকলে শুনে নাই বলে জানান।
গ্রান্ডবারগেইন, চাটার এর চুক্তির আওতায় হোষ্ট কমিউনিটির লোক জনের সেবা নিশ্চিত করতে ২৫% বরাদ্দ রাখার স্বাক্ষর করেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কোন নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়না। স্হানীয় এনজিও ও সিবিও গুলো বাদ দিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশি মত দাতা সংস্থার অনুদান নয়ছয় করা হচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। অথচ উখিয়ার মানুষ আজ হুমকির মুখে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যে খুনখারাবি তে নিয়োজিত। অপহরণ বানিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এমতাবস্থায় বাহিরের এনজিও গুলো ফলাফল হীন কর্মসূচি পালন করে, অদৃশ্য প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
উখিয়া-টেকনাফবাসী মনে করেন সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনায় উখিয়ার সিবিও এনজিও গুলো কে সম্পৃক্ত করা উচিত। উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত। অন্যথায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবেনা এবং উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনমান দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।
উখিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা উখিয়াবাসী ক্ষতিগ্রস্ত একথা সবাই বলে কিন্তু কাজ করে উল্টো। গোটা কক্সবাজারকে হোষ্ট কমিউনিটি বলে এখন সারা বাংলাদেশকে হোষ্ট কমিউনিটি বলে উখিয়া টেকনাফকে উন্নয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী দের নিজের বাড়ি ঘর ছেড়ে দিয়ে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রথমে আমরাই তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছি। উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সকলে তাদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এখন উখিয়ায় কাজ করতে কারও সঙ্গে আলোচনা করা হয়না। যার যেমন সুবিধা ঠিক তেমনি ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উখিয়ার কোন এনজিও দিয়ে কাজ করা হয় না। নতুন নতুন কিছু সংখ্যক সংস্থার মাধ্যমে উখিয়াতে নামে মাত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা নতুন কিছু সংস্থার নাম দিয়ে সেবার নামে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অথচ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারনে আমাদের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,বননিধন, পানীয় জলের সমস্যা, যাতায়াত সমস্যা, চিকিৎসা সেবা সহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কিন্তু উখিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনায় আমাদের মতামত নেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, হোষ্ট কমিউনিটির ২৫ভাগ বরাদ্দের সাথে আমরা আপোষ করব না। আমি উখিয়া বাসীকে নিয়ে আমাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমি জাতীয় সংঘের সংস্থাগুলো সহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ঘোষিত ২৫ ভাগ টাকা হোষ্ট কমিউনিটির সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন অতিদ্রুত সেইভ দা চিইল্ড্রেন এর প্রকল্প গুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।
এদিকে উপজেলা প্রেসক্লাব-উখিয়া'র সভাপতি এম আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি একজন নির্ভীক কলম সৈনিক হয়ে অনেক বার পত্রিকায় রিপোর্ট করেছি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন প্রতিনিয়তই খুনাখুনি, অপহরণ ও গুম করে মুক্তিপণ দাবী করার মতো ঘটনা বৃদ্ধমান রয়েছে। হোষ্ট কমিউনিটির সাথে রোহিঙ্গাদের সম্প্রীতির ঘাটতি হচ্ছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তারুণ্যের ফুটবল প্রতিযোগিতার উৎসব
দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করল সরকার
কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী
বাউফলে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বহিষ্কার দাবি
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানালেন জয়
খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন : মির্জা ফখরুল
সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবেনা- কমিশন প্রধান
সিংগাইরে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মালি আছে, বাগান নেই
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
নতুন খেলোয়াড় চান গুয়ার্দিওলা
এস আলমের ৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জব্দ ১৬ সম্পদ
সিলেটসহ দেশের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
দৌলতপুরে নগদের মার্কেটিং অফিসারকে কুপিয়ে জখম
গোলের সুযোগ নষ্ট, হাভার্টজের পরিবারকে হত্যার হুমকি
ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে ভোলা জেলার উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
প্লট দুর্নীতি : শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা
নেছারাবাদে গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষন গ্রেফতার-৩
পিরোজপুরে অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী পরিষদের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
হামাসের নতুন নেতা কে এই মোহাম্মদ সিনওয়ার?