ডলু,শঙ্খনদী ও হাঙ্গর খালের বাঁধ ডিঙ্গিয়ে আসছে পানি:বাড়ছে আতংক
০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৩:২১ পিএম | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৩:২১ পিএম
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ায় বির্স্তীণ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শঙ্খনদী,ডলুনদী ও হাঙ্গরখালের পানি বাঁধ ডিঙিয়ে ও অনেক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় সাতকানিয়াতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার দুপুর থেকে সাতকানিয়ার ছদাহা ও কেওচিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তিস্থল দস্তিদার হাট এলাকায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে পড়েছে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ।
প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, উপজেলার বাজালিয়া, কালিয়াইশ নলুয়া ও চরতী এলাকায় শঙ্খ নদীর পানি প্রবেশ করছে। সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন,সাতকানিয়া পৌরসভা,পশ্চিম ঢেমশা,এওচিয়া ও আমিলাইষ ইউনিয়নের একাংশে বাঁধের প্রবেশ করছে ডলু নদীর করাল স্রোত। অপরদিকে উপজেলার ছদাহা, কেওচিয়া ও বাজালিয়ার একাংশে হাঙ্গর খালের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। ফলে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধি অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছে উপজেলা প্রশাসন।
সরজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়,
সাতকানিয়া পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়,সাতকানিয়া ভূমি অফিস,সাতকানিয়া থানাসহ আরো বেশ কিছু সরকারি অফিসে পানি প্রবেশ করেছে। দেওয়ান হাট বাজারে কোমর পরিমাণ পানি লক্ষ্য করা গেছে। বন্ধ রয়েছে দোকান-পাট। সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে যোগাযোগ। উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের এফ রহমান সড়ক অনন্তত তিনফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এছাড়াও গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ৪,৫,৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড়ের একাংশের বসত ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ কার্যত গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের জরুরী ভিত্তিতে উদ্ধার করা প্রয়োজন। এছাড়াও তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। ছদাহা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ শফি সওদাগর জানান, রবিবার দিবাগত রাত থেকে হাঙ্গর খালের পানি বাঁধ ছিড়ে লোকালয়ের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। ফলে প্লাবিত হয় কয়েকটি গ্রাম। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে দস্তিদার হাট-ফকিরহাট সড়ক ডিঙ্গিয়ে পূর্বদিকে চলে যাচ্ছে। এ সময় প্রবল স্রোতের তোড়ে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে। দস্তিদার হাট বাজারের অধিকাংশ দোকানে পানি প্রবেশ করায় মালামাল নষ্ট হয়ে বলেও জানান তিনি।
চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াররম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী বলেন, চরতী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের কেউ কেউ নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যত্রে অবস্থান নিয়েছে। পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য লোকজনকে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে চলে যাওয়ার জন্য ব্যাপক মাইকিং করা হয়।
পুরানগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমার এলাকায় বাজালিয়া-ধোপাছড়ি সড়কটির সুয়ালক খালের উপর নির্মিত সেতুর এক পাশের মাটি সরে যাওয়ার কারণে ওই সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। এছাড়াও নতুন হাটের পূর্ব পাশে নয়াহাট-ফকিরখীল পর্যন্ত সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় একাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সাতকানিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা কামাল উদ্দিন জানান,ডলুনদীর পানি বাঁধ উঁপচে সাতকানিয়া পৌর সদর বন্যার পানিতে সয়লাব হয়েছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমী) আরাফাত সিদ্দিকী বলেন,সোমবার ভোর থেকে সাতকানিয়া ভূমি অফিসসহ আশপাশ এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে ব্যাহত হয় কার্যক্রম।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার পানি বন্দি থাকা লোকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় অস্থায়ী ভাবে ঘোষিত আশ্রয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের মাঝে বিতরণের জন্য দশ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেয়ে হয়েছে। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে বন্যা মোকাবেলায় জরুরী বৈঠক করেন উপজেলা প্রশাসন। বৈঠক প্রসঙ্গে ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে উপজেলা প্রশাসন সমন্বিত ভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করর জন্য আমরা জরুরী বৈঠক করেছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। পরবতির্তে পরিস্থিতি বুঝে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা