ঝালকাঠির ন্যাশনাল গ্রীড উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজ স্থগিত
০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৫ পিএম | আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৫ পিএম
একনেকের সভায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝালকাঠিতে ১৩২/৩৩ কেভি ন্যাশনাল গ্রীড উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে অধিগ্রহণকৃত পাঁচ একর জমির ওপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু সৃষ্ট জাটলতায় প্রকল্পটির আশার প্রদীপ ক্ষীণ হয়ে আসছে। এক বছরের বেশি সময় পার হলেও জমি হস্তান্তরের কাজই শেষ করা সম্ভব হয়নি। মেয়াদের সময়ে কাজ শুরু করা সম্ভব না হলে এ প্রকল্প বাতিল করা হবে বলে গ্রীড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ঢাকা এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রীড সঞ্চালন ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণের আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও এডিবিসহ আরো দুইটি সংস্থার অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলার মধ্যে ঝালকাঠিতে গ্রীড উপকেন্দ্র না থাকায় একনেকের সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এক হাজার ৪১৫ কোটি টাকা ব্যায় নির্ধারণ করে ২০১৯ সনের ১৫ ডিসেম্বর মোট আটটি গ্রীড স্টেশনের অনুমোদন দেওয়া হয়। তার মধ্যে ঝালকাঠির পাঁচ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে প্রকল্প ব্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। বাকি সাতটির কাজ শুরু হলেও ঝালকাঠির প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
প্রকল্পের একাধিক সূত্র জানায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা সড়ক সংলগ্ন সংগ্রামনীল জেএল-১১০ মৌজায় প্রকল্পের জমি নির্ধারণ করা হয়। এরপরই শুরু হয় জটিলতা। অধিগ্রহণ করা জমিতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা করেন ২১ জনের মধ্যে ১২ জন মালিক। প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ২০২১ সনের ১৫ নভেম্বর মালাটি খারিজ করেন। এদিকে স্থান নির্ধারণের পর ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে জমির দখল চেয়ে ২০২২ সনের ২৯ জুন অধিগ্রহণের এক কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জমা দেয় গ্রীড কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের ডেপুটি ডিরেক্টর সঞ্জিব বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছি। এখন শুধু জমি হস্তান্তারের অপেক্ষায় আছি। ইতিমধ্যেই নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় দ্বিতীয় দফায় ২০২৪ সনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ এ নেওয়া হয়। কিন্তু জমি হস্তান্তর না করায় কাজ শুরু করতে পারছি না।
ঝালকাঠি ওজোপাডিকো নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, গ্রীড উপকেন্দ্রটি চালু হলে বরিশাল রুপাতলী পাওয়ার স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হবে না। ওজোপাডিকো ঝালকাঠির পাঁচটি ফিডারের মাধ্যমে জেলা শহরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের এক লাখ ২০ হাজার গ্রাহককে নির্বিঘেœ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তখন অব্যাহত লোডশেডিং সমস্যার সমাধান হবে।
জমির মালিক পক্ষের একজন নয়ন চন্দ্র বলেন, জমি অধিগ্রহণ কর্তৃপক্ষ নাল জমিকে পুকুর দেখিয়ে আমাদের কম টাকা ধার্য্য করে। তাই আমাদের দাবি শ্রেণি পরিবর্তন না করে নাল জমির মূল্য নির্ধারণ করা হোক। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করায় একটি পক্ষ লাভবান হতে পায়তারা চালাচ্ছে। এসব কারণে নি¤œ আদালতে আমাদের মামলা খারিজ হওয়ায় উচ্চ আদালতে রীট করতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভ‚মি অধিগ্রহণ শাখার সাথে কথা বলে জানা যায়, জমি মালিকদের বক্তব্য অযৌক্তিক। সরকার এ জমি রেজিষ্ট্রি অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী মালিক পক্ষের ক্রয় করা মূল্য অনুযায়ী শতাংশ ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। তাই অধিগ্রগণের মূল্য সঠিক প্রক্রিয়াই হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, জমির মালিকরা রীট করলেও জমি হস্তান্তরে কোন বাঁধা আছে কিনা সে বিষয়ে উচ্চ আদালতে সলিসিটর শাখার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাব পেলেই জমি হস্তান্তরের পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকার পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. গোলাম কিবরিয়া ঝন্টু বলেন, আইনত সরকার প্রয়োজনে যে কোন সময় যে কোন জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। বাদী পক্ষ এটাকে চ্যালেঞ্জ করে মাছের ঘের থাকায় ব্যাপক ক্ষতিপূরণের কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। কিন্তু সরকারের অধিগ্রহণ করা জমিতে বাদী পক্ষের দাবির কোন যৌক্তিকতা নেই। তাই জেলাবাসির বৃহত্তর স্বার্থে সরকারি উন্নয়ন কাজ চলমান রাখতে মামলাটি খারিজ করেছে আদালত। এরপর ২০২২ সনের ১২ জুন হাইকোর্টে মালিক পক্ষের একটি রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পরে। তবে রীট হলেও তাতে উচ্চ আদালতের এ কাজে কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় আইনত কোন বাধা নেই। প্রকল্পটির কাজ শুরু হতে বিলম্বের বিষয়ে ঢাকা ন্যাশনাল গ্রীডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। জমি মালিকদের দাবি গ্রহনযোগ্য না হওয়ায় আদালত তাদের মামলাটি খারিজ করে দেয়। জমি অধিগ্রহণের টাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে চাওয়া হলে জিওবি ফান্ড থেকে চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। এরমধ্যে মালিক পক্ষ উচ্চ আদালতে রীট করে। তবে রীটে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসকের ভ‚মি শাখা থেকে জমি হস্তান্তর না করার কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছে না। এভাবে কাজের মেয়াদ শেষ হলে প্রকল্পটি বাতিল হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা