ফেনীতে নিজঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে পৌর শহরের ৪ নং ওয়ার্ড মধ্যম বিরিঞ্চি ফকিরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মাইদুল ইসলাম শাহাদাত (১৩) সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ও রাহাদুল ইসলাম গোলাপ (১১) দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। রাতেই তাদের মরদেহগুলো ময়নতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। চোখের সামনে দুই ছেলের মৃত্যু শোকে পাগল প্রায় মা পলি আক্তার ও বাবা রনি। পরিবারের স্বজনদের দাবি পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘরে আগুন দিয়ে সবাইকে একসাথে মেরে ফেলতে চেয়েছিল দুর্বৃত্তরা। তারা এ ঘটনার সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামিদেরকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো রাতে খাবার খেয়ে মা-বাবা একরুমে ঘুমিয়ে পড়েন ও তাদের দুই সন্তান পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। মঙ্গলবার মাঝরাতে আনুমানিক ১টার দিকে তাদের দুই সন্তানের রুমে আগুন লাগে। ভিতর থেকে সন্তানদের চিৎকার শুনে মা-বাবার ঘুম ভেঙে যায়। ভিতর থেকে দরজার খিলি লাগানো থাকায় তারা রুমে ঢুকতে পারেনি। তবে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন। পরে তাদের চিৎকারে আগুন জ্বলতে দেখে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হোন। মুহুর্তেই দুই ছেলে আগুনে পুড়ে যায়,পরে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপতালে নিলে তাদের মৃত্যু হয়।

এদিকে প্রতিবেশীদের মধ্যে কয়েকজন জানান, আমরা তাদের ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আগুন নেভানোর জন্য গেলে দেখি ঘরের বাহির থেকে দরজায় তালা মারা ও রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। এতেই বুঝা যায় তাদেরকে দুর্র্বৃত্তরা ঘরে আগুন দিয়ে মারার প্লান করেছিল পূর্ব থেকে।

নিহতদের বাবা রনি বলেন, গত শনিবার আমাদের এক প্রতিবেশি চাচা মারা য়ায়। উনার স্বজনরা বিনা অনুমতিতে আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করতে গেলে আমরা বাঁধা দিই। পরে আমার বড়ভাইকে তারা মারধর করে। এরপর থেকে তারা একের পর এক হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। রনির অভিযোগ তার দুই ছেলেকে পেট্রল মেরে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে প্রতিবেশি আনোয়ার,জনি, আরাফাত,জয়নাল, ফারুক ও বাদল। তিনি তার দুই সন্তানকে হত্যার বিচার চেয়েছেন।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,রাতে আগুনে পুড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের দগ্ধকৃত মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।