বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের বাসিন্দা সিরাজ মোল্লার মেয়ে রেশমার সাথে পার্শ্ববর্তী উত্তর গেন্ডামারা গ্রামের মৃত্যু আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে সুমনের বিয়ে হয় সাত মাস পূর্বে। ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টায় জামাই ও তার এক বন্ধু জোরজবস্তি করে রেশমাকে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যান। রাত ১০ টায় জামাই সুমন ফোন করে শ্বশুরকে অসুস্থ স্ত্রীকে তাড়াতাড়ি দেখতে আসতে বলেন। জামাইর বাড়ি গিয়ে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে খাটের উপরে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন বলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রেশমা।
তবে মাত্র একঘন্টার ব্যবধানে এমন রহস্যজনক মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না বাবা সিরাজ মোল্লা। তার দাবি পরিকল্পিতভাবে রেশমাকে হত্যা করা হয়েছে।
বিয়ের সাত মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়ি থেকে রেশমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামাই সুমনসহ ৯ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় জামাই সুমন ও তার বন্ধু আল-আমিনকে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিলেও এখনো পলাতক রয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন বরগুনার পাথরঘাটা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালেহ।

রেশমার বাবা বলছেন, থানায় মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করেছেন। এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে আসামী পক্ষের লোকজনের মাধ্যমে। তিনি এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, মেয়ে বাড়িতে এসে বলেন কয়েকদিন বেড়ানোর পরে শশুর যাবেন। এরপর রাতে ৯ টায় জামাই সুমন ও তার এক বন্ধু আল আমিন বাড়িতে এসে ঝগড়াঝাটি করে রেশমাকে নিয়ে যায়। এরপর রাত ১০ টায় ফোন করে বলে আপনার মেয়ে অসুস্থ। আমরা গিয়ে দেখি মেয়ে আর নাই মারা গেছে। জামাই সুমন ডাক্তার নিয়ে আসার কথা বলে পালিয়ে গেছে। সুমনের চাচি মনসুরা বেগম ও সুমনের কয়েকজন চাচাতো ভাই ছাড়া বাড়িতে আর কোন লোকজন ছিল না। রেশমার বাম চোখের বুরুতে, গলায়, বাম বুকে, বাম পিঠে ও তলপেটে দাগ দেখা গেছে। জামাই সুমন ও তার বন্ধু আল আমিন মাদকের ব্যবসা করতো। এই ঘটনা জানার পরেই এমন রহস্যজনক পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সিরাজ মোল্লার পরিবারের অভিযোগ।

এ বিষয়ে রেশমার চাচি শাশুড়ি মানসুরা তাদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে রেশমা ঘরের মাচার আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পাথরঘাটা সার্কেল) মো. আবু সালেহ বলেন, সিরাজ মোল্লা বাদী হয়ে তার মেয়ে হত্যার জন্য আদালতে মামলা করেছেন। এই মামলার তদন্ত করছি, আশাকরি মাসখানেকের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তখন পুরো বিষয়টি জানা যাবে।