নির্বাচনের কাজে প্রশাসন ব্যস্ত থাকায় গোদাগাড়ীর মাংশের বাজার অস্তির।
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম
ঢাকা, বগুড়া, পাবনা, নওগাঁ,চিটাগাং সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গরুর মাংশের দাম কমলেও রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পেঁয়াজ সিন্ডকেটের মত কসাইগণ ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে দেদারসে বিক্রি করছেন। গাভী ও মহিষ জবাই করে ষাঁড়/বাছুর গরুর মাংশ বলে বিক্রি করছেন ফলে ক্রেতাসাধারণ প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাজার হাজার টাকা, মাংশের দোকানে মূল্য তালিকা ঝুলানোর সরকারী নির্দেশনা থাকলেও সেটা মানা হচ্ছে না। নির্বাচনের কাজে ভোক্তাধিকার, স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ব্যস্ত থাকার সুযোগে বীরদাপটে বেশী দামে মাংশ বিক্রি করছেন।
উত্তর শাজাহানপুর, ঢাকায় গরুর মাংশ ৫৯৫/ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন জাত কসাই মোঃ খলিল ভাই তিনি প্রতিদিন ৪০/৪৫ টি গরু প্রতিদিন বিক্রি করছেন। হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে মাংশ কিনছেন। কম দামে মাংশ কিনতে পেরে লাখ লাখ মানুষ দোয়া করছেন খলিল ভাইয়ের জন্য। তিনি কম দামে বিক্রি করে রীতিমত ভাইরাল হয়েছেন। তিনি আরও বলছেন, সরকার যদি চামড়ার দাম বৃদ্ধি করেন, তবে আরও ২০/২৫ টাকা কমে মাংশ বিক্রি করতে পারতাম। দেশে এক জোড়া জুতার দাম ৩৫০০/ টাকা থেকে ৭০০০/ টাকা সেখানে গরুর চামড়ার দাম কি করে ৩০০/ ৪০০ হয় এটা আমি বুঝতে পারছিনা।
কেউ কেউ বলছেন খলিল ভাই বাংলাদেশে অন পিস, তার কারনে গরীব মানুষ মাংশ কিনে খেতে পারছেন। তার জন্য হাজার হাজার মানুষ দোয়া করছেন। খলিল কসাই পারলে গোদাগাড়ীর কসাইগন পারছে না কেন?
প্রথম শ্রেণীর গোদাগাড়ী ও কাঁকনহাট পৌরসভায় গবাদিপশু জবাই করার পূর্বে ডাক্তারী পরীক্ষা নীরিক্ষা করার কথা থাকলেও তা রহস্যজনক কারনে মানা হচ্ছে না। এ সুযোগে কসাইগণ রাতের আধারে রোগাক্রান্ত, হাড্ডিসার গাভী, বকনা, মহিষ জবাই করে ষাড় গরুর মাংশ বলে বিক্রি করছেন।
শনিবার ও গত শুক্রবার গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিশালবাড়ী, গোদাগাড়ী, রেলওয়ে বাজার, রেলগেট সুলতানগঞ্জ, কামারপাড়া, বিদিরপুর, গোগ্রাম, কাঁকনহাট, রাজাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে কাসাইগণ ৭৫০ টাকা থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংশ বিক্রি করছেন।
সারা দেশে গরুর দাম কমলেও গোদাগাড়ী গরুর মাংশের দাম কমছে না। গোদাগাড়ীর মাংশ ব্যবসায়ীগন পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের মত সিন্ডকেট তৈরী করে গরুর মাংশ চড়া দামে অব্যাহতভাবে বিক্রি করছেন। তাদের সরাসরি কথা বেশি দরে মাংশ বিক্রি করলে কেউ কিছু করতে পারবে না।
মহিশালবাড়ী বাজারে শহিদুল গোস্তো বিতানের মালিক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ৬ মাস থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করচ্ছি। তার সরাসরি বক্তব্য যারা ঢাকা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ৫৫০/৫৯৫/৬৫০/ টাকা কেজি দরে মাংশ বিক্রি করছেন তাদের মাংশ ভাল নয়, ভাল মাংশ ৭৫০ টাকার নীচে দিতে পারবে না। বেশী মাংশ নিলে ৭৪০/ টাকা কেজি হিসেবে দিতে পারবো। আপনাকে ওইভাবে মাংশ দিলে আপনিও নিবেন না।
গোদাগাড়ী এলাকার কয়েকজন মাংস বিক্রেতা এ প্রতিবেদককে জানান, তারা ৭৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন। তবে বেশী মাংশ নিলে ৭৩০/৭৪০ টাকা কেজি মাংশ দিচ্ছি।
গোদাগাড়ী এলাকার এক মাংস বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, গরুর দাম কমলেও পাইকারী কসাইগনের নিকট হতে 'আগের মতো একই দামে গরু কিনতে হচ্ছে। তাই মাংসের দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।'
রেলওয়ে বাজারের এক মাংশ বিক্রেতা ( কসাই) বলেন, ঈদুল আজহার পর মাংসের চাহিদা আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি।' 'তাই গরুর দাম কমে গেলেও তারা কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করতে পারছেন না। চামড়া ব্যবসায়ীগণ সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার টাকা লোপাট করছেন এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হলে চামড়ার দাম বৃদ্ধি মাংশের দাম কমানো সম্ভব বলে সচেতন মহল মনে করেন।
মহিশালবাড়ী বাজরের মুদি দোকান মালিক আব্দুল্লাহ এ প্রতিবেদক জানান, পেঁয়াজ, লবন তেল সিন্ডকেটের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে, ব্যবসা করতে ইচ্ছে করছেনা। কয়েক দফায় ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছি। কিছু মালের দাম কমে যাওয়ায় ১০/১২ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। কিছুদিন আমি ভারত থেকে আসলাম, সেখানে মাংশের কেজি ১৫০/১৮০/ কেজি বিক্রি হচ্ছে, গরুর দামও কমেছে। বাংলাদেশের ঢাকা, বগুড়া, চিটাগাংসহ বিভিন্ন স্থানে ৫৫০ থেকে ৫৯০ টাকা কেজি দরে মাইকিং করে, ফেসবুক লাইভ করে মাংশ বিক্রি করছেন। অথচ মহিশালবাড়ী রেলবাজার, গোদাগাড়ীর বিভিন্ন মাংশ ব্যবসায়ীগণ সিন্ডকেট করে ৭৫০/৭৮০ টাকা কেজি দরে মাংশ বিক্রি করছেন, গাভী, মহিষ জবাই করে ষাঁড়ের ( বছুর গরু) মাংশ বলে বিক্রি করছেন। সেখানে ভোক্তা অধিকার, প্রশাসনের কর্মকর্তাগন দেখতে পান না। অভিযান পরিচালনা করেন না।
মাংশের বাজারের এমন পরিস্থিতি কেন বা দামের তরতাম্যের কারণ জানতে চাইলে বাজার মনিটরিংকে দায়ী করেন ক্রেতাসাধারণ। তারা বলছেন, বাজার মনিটরিং হয় না, রহস্যজনক কারনে মাংশের বাজারে অভিযান কোন অভিযান পরিচালিত হয় না, গরু জবাই করার পূর্বে পৌরকতৃপক্ষ কোন খোঁজখবর রাখেন না, কোনও শৃঙ্খলা নেই। যার যেমন ইচ্ছা দাম হাঁকাচ্ছেন। মানুষ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গোদাগাড়ীর গরুর মাংশের দাম বেশী, মনগড়া দাম বাড়িয়ে কেউ পার পাবে না। মাংশ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইন অনুয়ায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল