শীত এলেই বাড়ে আতঙ্ক, রাতে বসাতে হয় পাহারা মাদারীপুরে প্রতি রাতে ডাকাতদের হানা
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৮ পিএম | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৮ পিএম
শীত চলে আসায় মাদারীপুর সদরসহ চরঞ্চাল শিবচর এলাকার অনেক জনবসতি কম এলাকায় ডাকাতদের আতংক বেড়ে গেছে ।ডাকাতরা প্রতিরাতেই নিরীহ ব্যক্তিদের বাড়ীতে হানা দেয়। পুলিশী অভিযান অব্যাহত থাকলেও আতংক যেন নিরীহ ব্যক্তিদের পিছু ছাড়ছেনা ।সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাবের অনুসন্ধানে এসব তথ্য এসেছে। মাদারীপুর সদর ও রাজৈর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম এখন ডাকাতদের হানা দেয়া উম্মুক্ত স্থান হিসাবে বিবেচিত ।এর মধ্যে সদর থানার শ্রীনাথী কেন্দুয়া,বাজিত নিজ বাজিত শ্রীনদী, কবিরাজপুর শিরখাড়া শিবচরের নিলূখীর সীমানা বহেরাতলা এলাকা ডাকাতদের হানা দেয়ার নিরাপদ স্থান ।এসব এলাকায় অনেকস্থানে পুলিশ ফাড়ী রয়েছে ।প্রতিরাতে পুলিশীদের নিরাপত্তার কাজে রাতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। পাশাপাশি সাধারন মানুষদের রাতে পালা করে পাহারা দেয়ার জন্য পরামর্শ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পদ্মানদী বেষ্টিত চরজানাজাত ইউনিয়ন। পদ্মার ভাঙনে ইউনিয়নটির ভূ-খণ্ডের বেশির ভাগই বিলীন হয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই চরে কমপক্ষে তিন শতাধিক লোকের বসবাস। শুকনো মৌসুমে গবাদিপশু পালনের জন্য এই চর এলাকা বেশ উপযুক্ত। তাই এই এলাকার প্রায় অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ ও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিটি পরিবারই একাধিক গবাদিপশু লালনপালন করে থাকেন। কোরবানিকে সামনে রেখে অধিকাংশ পরিবার ষাঁড় গরুর পাশাপাশি গাভিও পালন করেন। তবে শীত মৌসুম এলেই আতঙ্ক শুরু হয় চর এলাকায়। কারণ প্রায় রাতে ডাকাতদল হানা দেয় গরু নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য।
চরবাসীর অভিযোগ, পদ্মা নদীতে ট্রলার যোগে ডাকাতদল এসে গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে ট্রলারে করে পালিয়ে যায়। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাত এসে হানা দেয় এ চর এলাকায়। এ কারণে প্রতি বছরই পাহারা বসাতে হয় চরের বাসিন্দাদের। বিগত বছরগুলোতে গরু চুরির একাধিক ঘটনাও ঘটেছে। তাই শীত এলেই বাড়ে আতঙ্ক!।
জানা গেছে, অতি সম্প্রতি চরজানাজাত ইউনিয়নের কান্দি গ্রামে টিটু সরকারের বাড়িতে গরু ছিনতাইয়ের জন্য হানা দেয় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবেশী এক যুবক এগিয়ে গেলে ১৫/২০ জনের মধ্যে চারজনকে চিনতে পারে। এসময় রায়হান নামের ওই যুবককে কুপিয়ে জখম করে ডাকাত দলের সদস্যরা। লৌহজং থেকে ট্রলার নিয়ে এসে গরু ছিনতাই করে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শিবচর থানায় মামলাও হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, চর এলাকার বাড়িঘর বেশ ফাঁকা ফাঁকা স্থানে। ঘনবসতি নেই। প্রতিটি বাড়িতেই গরু-ছাগল রয়েছে। বসতঘরগুলো বিচ্ছিন্নভাবে থাকায় ডাকাতদল সহজেই ডাকাতি করতে পারে। নদীতে ট্রলার রেখে গ্রাম থেকে গরু-ছাগল নিয়ে যায়। প্রতি বছরই এমন ঘটনা ঘটে থাকে। এই এলাকার কৃষকদের সম্বল এই গবাদি পশু। লাখ টাকার গরু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় অনেকেই। এ কারণে গত শীত মৌসুমে ১০/১৫ জনের একেক দল করে পাহাড়ায় থাকতে হয় ডাকাতি রোধে।
স্থানীয় কৃষক টিটু সরকার বলেন, গত ১৯ নভেম্বর রাতে আমার গরু নিয়ে যাচ্ছিল ডাকাতদল। চরের মানুষ রাত ৮টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে আমার ভাতিজা রায়হান বাইরে এসে দেখে গরুর বাঁধন ছাড়া। বাড়ির বাইরে হাঁটছে। এসময় ঘরের পেছনে লোকজনের শব্দ পেয়ে লাইট দিয়ে দেখি ১০/১৫ জন। আমার ভাতিজা তাদের চিনে ফেলার কারণে তাকে কুপিয়ে আহত করে ডাকাতদল।
সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানান চরের মানুষেরা। চরজানাজাত নৌ পুলিশ ফাঁড়িটি এই চরে হলেও চুরি-ডাকাতি রোধ হতো বলে তারা মনে করেন।
চরজানাজাত ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. নাসির সরকার বলেন, ইউনিয়নটির ১ নম্বর ওয়ার্ড বাদে সবগুলো ওয়ার্ড নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ইতঃপূর্বে। চরের মধ্যে এখনও কিছু বসতি রয়েছে। বিভিন্ন সময় গরু চুরি, ডাকাতি হয়ে থাকে এ এলাকায়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার জানান, অতীতের চেয়ে এখন চর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। পদ্মার চর এলাকায় আমাদের বিট পুলিশিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পুলিশের একাধিক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। যেহেতু পদ্মানদীর মাঝে বিচ্ছিন্ন একটি জনপদ। তাই ওখানে ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড সদস্যসহ সবার সমন্বয়ে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এর আগে গরু চুরি-ডাকাতি হয়েছে। বর্তমানে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সদর থানার ওসি এইচ এম সালাহউদ্দিন বলেন,ডাকাতদের হানা বাড়লেও এখন পুলিশের তৎপরতা বাড়ছে। নির্বাচনে লোকজনের সমগমের পাশাপাশি সাধারন লোকদেরকে বিশেষ পাহারা রাখার এবং পুলিশের সহায়তায় ডাকাত চোরদের ধরা কৌশলতা অবলম্বন করা হচ্ছে । ইতিমধ্যে ১৫ টি চুরি হয়ে গরু উদ্ধার করে তা লালন পালন করা হচ্ছে। যেকোন ভাবেই চোরডাকাতদের হানা রুখতে পুলিশ সদা তৎপর রয়েছে।বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই মাকিং করে সকলকে সর্বদা সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। আশা করি তাড়াতাড়ি এ অবস্থার নিরসন হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল
ভারতের কাছ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা
মেজর জে. অব. তারেক সিদ্দিকসহ ১০ জনের নামে মামলা
বহিঃশক্তি শকুনের মত শিল্প কলকারখানায় থাবা দেয়ার চেষ্টা করছে : শিমুল বিশ্বাস
বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বরদাশত করা হবে না: আইন উপদেষ্টা
মূল সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার অঙ্গীকার