ঢাকা   শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৬ পৌষ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘন ঘন অগ্নিকান্ডের ঘটনা কি নিছক দূর্ঘটনা নাকি কোন পরিকল্পিত ‘স্যাবোটাজ’-ভাবার বিষয়

Daily Inqilab কক্সবাজার ব্যুরো

০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:২০ পিএম | আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:২০ পিএম

 

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় বেশিরভাগ সময়ই পুড়ছে রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল। অনেক সময় ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বড় ধরনের প্রাণহানি নজিরও রয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রিত শিবিরে গত ছয়বছরে ছোট বড় প্রায় ৩ শতাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার ঘর পুড়েছে, নিঃস্ব হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। ঘুরেফিরে কেন ক্যাম্পেগুলোতে আগুন লাগছে, এর কারণ কী এমন নানা প্রশ্নও গোরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে।
এদিকে সর্বশেষ গত শনিবার (৬ জানুয়ারি-২০২৪) দিবাগত রাত ১টার দিকে কুতুপালং ৫ নম্বর ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অগ্নিকান্ডে প্রায় সহস্রাধিক শেড পুড়ে যায়, আরও অনেক শেডের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এটি কি স্বাভাবিক অগ্নিকান্ড নাকি কে বা কারাঅগ্নিকান্ড ঘটিয়েছে-তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল এর মতে হঠাৎ কুতুপালং ক্যাম্প-৫ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে এপিবিএন এর টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিটের প্রায় ৩ ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তাৎক্ষনিক কিছু জানা না গেলেও অসাবধানতাবশত: আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে জানা যায়। অনেক শেড পুড়ে গেছে, অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণ মানুষ তাদের আসবাবপত্র, মুল্যবান সম্পদ, ঘরবাড়ি হারিয়ে এই শীতের রাতে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এ ব্যাপারে, উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। কক্সবাজার, রামু ও উখিয়ার প্রায় ১০টি ইউনিট চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে এক হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ও তার পরিবারের সদস্যরা রাতে আগুন পোহানোর সময় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি আরো যোগ করেন।
এদিকে সবকিছু হারিয়ে, প্রচন্ড শীতে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জন গোষ্টি। একে তো প্রচণ্ড শীত, তার ওপর বসতি হারিয়ে চরম কষ্টে পড়েছে এসব বাস্তুহারা মানুষগুলো। তবে দ্রুত রোহিঙ্গাদের শেল্টার নির্মাণ করে দেওয়াসহ সমস্যা লাঘবে কাজ করছে বলে জানিয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (RRRC)।
গত ৩১ ডিসেম্বর-২০২৩ দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-ব্লকে ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০টি রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘর। আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএন কমান্ডার অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর বলেন, ‘আগুনে ২৫-৩০ ঘর পুড়েছে। আশপাশের ঘরে যেন আগুন না লাগে অনেক ঘর টেনে নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশপাশের অর্ধশতাধিক ঘর। আগুন কীভাবে ছড়াল খোঁজ নিচ্ছি আমরা। অগ্নিকাণ্ডটি পরিকল্পিত নাকি দুর্ঘটনা সেই রহস্য উদ্ঘাটনে তৎপরতা অব্যাহত আছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি ইউনিট প্রায় ৩০ মিনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে’।

গত বছর ৫ মার্চ-২০২৩ একই ক্যাম্পের অন্য একটি ব্লকে আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় দুই হাজার ২০০ ঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।
এর আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ তিনটি ক্যাম্পে এক সঙ্গে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১১ জন নিহত ও ৫ শতাধিক আহত হন। পুড়ে গেছিল ৯ হাজারের বেশি ঘর।

৯-জানুয়ারী-২০২২ তারিখে, কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীর শফিউল্লাহ কাটা নামক রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৬ এ, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৬ শতাধিক ঘর পুড়ে অঙ্গার হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনধিক ১৫টি ঘরও ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়াও আগুন নেভাতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও দেড় শতাধিক ঘর আংশিক কিংবা পুর্ণাঙ্গভাবে।
উল্লেখ্য, ৯-জানুয়ারী-২০২২ রোববার সন্ধ্যার পুর্বে ৫টার দিকে ৮ এপিবিএন’র আওতাধীন রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৬ শফিউল্লাহ কাটা বি, সি ব্লকে আগুন লাগে। মুহূর্তে আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে আগুনে পুড়ে প্রায় ৬০০টি শেড। ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক মো. নাইমুল হক অর্ধশত অফিসার ও ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোতে সহায়তা করেন। সাথে এপিবিএন-৮ এর চৌকষ জোয়ানরা অগ্নি নির্বাপণে যোগ দিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে রাতে ও সকালে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী বিতরণ করেছে। ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা ক্যাম্প: ১৬-এর অন্তর্ভুক্ত সকল লার্নিং সেন্টার, মাদ্রাসা/মক্তব, ওমেন ফ্রেন্ডলি স্পেস, আত্মীয়-স্বজন ও পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। অনেকেই আশে পাশে ক্যাম্পে আত্মীয় স্বজনদের শেডে গিয়ে আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। অতিরিক্ত প্রত্যাবাসন কমিশনারকে প্রধান করে গঠন করা কমিটিতে ৮ এবিপিএন, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ও সিআইসিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর ক্ষতিগ্রস্ত বসতি ও ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ক্যাম্পে অগ্নিকান্ডের পর খুব কষ্ট করে, কাঁটা তারের বেড়া কেটে, এক কাপড়ে কোনো রকম পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় গিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন ভোক্তভোগীরা। বসতি ছাই হওয়ার পাশাপাশি, তাদের পুড়ে গেছে মুল্যবান কাপড়-চোপড়, আসবাবপত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী। পরের দিন সকাল না হতেই পুড়ে অঙ্গার হওয়া বসতি পর্যবেক্ষণে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা তাদের বসতিতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন অবশিষ্ট কিছু পাওয়া যায় কিনা। অনেকের চোখের নোনা জলে ভাসাচ্ছেন বুক, অনেকে গগন বিদারী আর্তনাদ আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তুলছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আগুনে কেড়ে নিয়েছে তাদের সব সহায় সম্বল, ঘর-বাড়ি, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় মুল্যবান সামগ্রী। শুধু নীরব স্বাক্ষী হিসেবে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে তাদের বসতির আরসিসি পিলারগুলো।

তবে গত ২২-শে মার্চ-২০২১ তারিখে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আগুনে পুড়ে গিয়েছিল, শতশত শেড, ঘরবাড়ি, মহামুল্যবান সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ০৮টি মত আগুনের ঘটনা ঘটে কিন্তু ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে উল্লেখিত কয়েকটি। গত বছরের ২২শে মার্চ-২০২১ তারিখে রাতে উখিয়ার ৮ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে বহু বসতি পুড়ে যায় এবং ১১ জন নিহত হয়েছিল। উক্ত আগুনের ঘটনায় উখিয়া উপজেলার বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আগুন রাত পৌনে ১০টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, এ ঘটনায় ৯ হাজার ৬০০ ঘর পুড়ে গেছে। তবে তাৎক্ষণিক হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও, পরে ১১ জন নিহত হয়েছিল। শিবিরের একটি ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল, সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে একের পর এক রোহিঙ্গা বসতি পুড়ে যায়। রাত পৌনে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে আগুন জ্বলছিল।

গত ২রা জানুয়ারি-২২ উখিয়ার বালুখালী ২০ নম্বর ক্যাম্পে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত করোনা হাসপাতালে আগুন লাগে। এতে কেউ হতাহত না হলেও হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারের ১৬টি কেবিন পুড়ে যায়।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারো আগুন সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
ঘন ঘন ক্যাম্পে আগুন, জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব হচ্ছে। এই আগুনের ঘটনা নিছক দূর্ঘটনা? নাকি অন্য কোন কারণ? নাকি কোন গোষ্ঠীমহলের পরিকল্পিত স্যাবোটাজ? জাতি ও দেশের স্বার্থে প্রশ্নটি আজ খুবই বড় হয়ে আছে। অগ্নি কান্ডের ঘটনা 'নিছক দূর্ঘটনা নাকি স্যাবোটাজ' এটা বের করা সাংবাদিকদের যেমন কাজ, তেমনি রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নিরপেক্ষ তদন্ত ও গবেষনারও প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি। অগ্নিকান্ড সংঘটিত হবার পেছনে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, মোটিভ সংগ্রহ করে রীতিমতো গবেষনার প্রয়োজন রয়েছে। উক্ত গবেষণার অথেন্টিক প্রতিবেদন দাখিল করার প্রয়োজনও রয়েছে।
কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে বা স্থানীয় সচেতন মহলের মতামতের মধ্যে বরাবরই আগুন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে। শফিউল্লা কাটার জনৈক ইব্রাহিম অত্র প্রতিবেদককে বলেন, " রোইগ-গারা টীন সেডত আর থাই ত ন চা র, ইতারা এই অবস্থার উন্নয়ন চা-র, ইতারা চাদ্দে নোয়াহালীর হাতিয়ার ভাসন চরর ডেইক্কা ঘর বাড়ি, থাইবার জাইগা উখিয়া টেকনাফতও, চা-র। ইতারার ইন্ডিল্লা চাইবার হারনে হামিশা গর পুড়ার ঘটনা চলের " ('রোহিঙ্গারা ঝুপড়ি ঘরে আর অবস্থান করতে চাচ্ছে না, তারা এ অবস্থার উন্নতি কামনা করছে। তারা নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের আদলে এখানেও অর্থাৎ উখিয়া টেকনাফেও পাকা শেড, পাকা বাড়ি নির্মানের প্রত্যাশা করছেন। তারই অব্যক্ত আশাবাদ থেকে থেমে থেমে নিজেরাই আগুনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে')।
জনৈক রোহিঙ্গা যুবক আবুল শামা বলেন, “ আইএনজিও, এনজিও সাব অক্কল প্রজট ফুরাই গেইলই নুয়া প্রজট পাইবল্লায় আরার রূইজ্ঞা মইসন লই আত মিলাই অইন জ্বালাই দেগই। অইন জালাই ইতারা নুয়া প্রজট পা-য়,ইতারার চ রি থাহে ( অর্থাৎ 'বিভিন্ন আইএনজিও, এনজিও কর্মকর্তারা তাদের নির্ধারিত প্রজেক্ট শেষ হবার অব্যবহিত পূর্বে তাদের (রোহিঙ্গাদের) সহায়তায় বিভিন্ন ক্যাম্পে আগুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। কারণ আগুনের অজুহাতে তারা নতুন প্রজেক্ট পায়, তাদের চাকুরী হারাতে হয় না'।
আবার ক্যাম্প-১৬ এর শামশু বলেন, " রুইজ্ঞা অক্কল নিজেরা নিজেরা এলাহা দহল লইবার লায়, নিজেরা নিজেরা মাইরপিট গরে। ক্যাম্পর ভিতরত কি অই যার গই তোয়ারা হইত পারন্নে? এড়ে রাতিয়া রুইজ্ঞা অক্কলর দহল থাহে।লাল গুটি, নেশা, মত, ইনরলাই ইতারা ইতারা মারামারি গরে। এক পক্ক অন্য পক্করে লাগাই দিবল্লাই, নিজেরা নিজেরা আহাম কুহাম গরিওরে ঐতারারে লাগাই দেয়। বেইক্কনর সুজা হাম অইলদে গর জ্বালাই দন (অর্থাৎ 'রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিভিন্ন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে ব্যবসা, মাদক, ইয়াবা বা অন্যান্য ব্যাপারে বিরোধ সৃষ্টি হলে, সেই বিরোধের অবসানকল্পে নিজেদের মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, দাঙ্গা হাঙ্গামা, খুনাখুনী ঘটনা সংঘটিত করে এবং সহজ উপায় হিসেবে একে অন্যের শেডে আগুন লাগিয়ে অথবা নিজেরা নিজেদের শেডে আগুন লাগিয়ে অন্যদের ঘায়েল করার কু-মতলবও থেকেও আগুনের সুত্রপাত হতে পারে')।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বার বার আগুনের ঘটনা আসলে কিসের আলামত? রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এত এত দেশি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার অবস্থান। বিশেষ করে আমাদের দেশীয় গোয়েন্দা সংস্থাসমুহের নক দর্পনে অন্তরালের সব ঘটনা জানা থাকার কথা।গোয়েন্দা সংস্থাসমুহ পুর্ব সতর্কতামূলক কোন সাবধান বাণী ঘোষণা করেন কিনা আমাদের জানা নেই। অনেকের মতে গোয়েন্দা সংস্থার কার্যকলাপ স্পষ্ট হওয়া উচিত। (হয়ত স্পষ্ট, কিন্তু আমাদের অবধি হয়ত আসে না!) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিটি অপ্রীতিকর ঘটনার বিপরীতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে জবাবদিহীতা চাওয়া হয় নিশ্চয়ই। আর আমাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনা বাহিনী, বিজিবির সদস্যরা, এপিবিএনসহ অন্যান্য বাহিনী নিশ্চয়ই সন্তোষজনক কাজ করে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গা বিষয় এখন শুধু রাষ্ট্রীয় বিষয় নয়, এটি এখন আন্তর্জাতিক বিষয়।

এদিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডগুলো নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। স্থানীয়দের দাবি, বিশেষ কোনো গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির মাধ্যমেই আগুনের প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
স্থানীয়রা জানান, ক্যাম্পকে ঘিরে কিছু বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠন রয়েছে। তারা হয়ত পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন। অগ্নিকাণ্ডে ঘরবাড়ি হারানোদের দাবি, এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি পরিকল্পিত স্যাবোটাজ ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বগুড়ায় বিএনপি নেতা সাজুর ওপর হামলার প্রতিবাদে সভা

বগুড়ায় বিএনপি নেতা সাজুর ওপর হামলার প্রতিবাদে সভা

ডিআরইউ সদস্য ও সদস্য সন্তানদের উশু প্রশিক্ষণ শুরু

ডিআরইউ সদস্য ও সদস্য সন্তানদের উশু প্রশিক্ষণ শুরু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১৫, ভাংচুর ও ব্যাপক লুটের অভিযোগ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১৫, ভাংচুর ও ব্যাপক লুটের অভিযোগ

গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করে আবারো ঘুরে দাড়াতে চায় ই'কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ

গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করে আবারো ঘুরে দাড়াতে চায় ই'কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ

দেবোত্তর বাজারে লিফলেট বিতরণ করলেন জেলা সমন্বয়ক প্রধান ফাহাদ

দেবোত্তর বাজারে লিফলেট বিতরণ করলেন জেলা সমন্বয়ক প্রধান ফাহাদ

‘আগস্ট বিপ্লবে ইসলামপন্থিদের বাদ দিয়ে কোনো ইতিহাস রচিত হতে পারে না’

‘আগস্ট বিপ্লবে ইসলামপন্থিদের বাদ দিয়ে কোনো ইতিহাস রচিত হতে পারে না’

পালালেন এক ওসি, প্রত্যাহার আরেক ওসি

পালালেন এক ওসি, প্রত্যাহার আরেক ওসি

মাগুরার শ্রীপুরের কোদলা গ্রামে দু দলের সংঘর্ষে আহত ১৭ একাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর

মাগুরার শ্রীপুরের কোদলা গ্রামে দু দলের সংঘর্ষে আহত ১৭ একাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর

২০১৮ এর  কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান হতো না : আবু হানিফ

২০১৮ এর কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান হতো না : আবু হানিফ

বগুড়ায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা মামুন

বগুড়ায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা মামুন

আলফাডাঙ্গায় হালি পেঁয়াজের চাড়া রোপনের ধুম পড়েছে

আলফাডাঙ্গায় হালি পেঁয়াজের চাড়া রোপনের ধুম পড়েছে

শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ড. সোহেল, সদস্য সচিব ড. মাসুদ

শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ড. সোহেল, সদস্য সচিব ড. মাসুদ

মাস্ক, ঘোমটা ও ভুয়া পাসপোর্টসহ 'কট' নিপুণ! তদন্তে রহস্যময় তথ্য

মাস্ক, ঘোমটা ও ভুয়া পাসপোর্টসহ 'কট' নিপুণ! তদন্তে রহস্যময় তথ্য

খুনিরাই খুনিকে সহযোগিতা করেছে : সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ

খুনিরাই খুনিকে সহযোগিতা করেছে : সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ

নাটোরে মহাশ্মশানের মন্দিরে তরুণ দাস হত্যার মূল আসামি গ্রেপ্তার

নাটোরে মহাশ্মশানের মন্দিরে তরুণ দাস হত্যার মূল আসামি গ্রেপ্তার

টাকাটাই শেষ কথা বাকি সব বাতুলতা! শফিক রেহমান সম্পর্কে যা বললেন ডা: জাহেদ

টাকাটাই শেষ কথা বাকি সব বাতুলতা! শফিক রেহমান সম্পর্কে যা বললেন ডা: জাহেদ

উত্তরা পশ্চিম থানার জামায়াতের সহযোগী সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

উত্তরা পশ্চিম থানার জামায়াতের সহযোগী সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতার্তদের পাশে জামায়াত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতার্তদের পাশে জামায়াত

সালথায় রাতের আঁধারে কৃষকের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন

সালথায় রাতের আঁধারে কৃষকের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন

রাণীশংকৈলে মারামারি ও ভাংচুরের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির শুটিং

রাণীশংকৈলে মারামারি ও ভাংচুরের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির শুটিং