নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চুরি করতে নয়, গৃহবধূকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে সিঁধ কেটে আসামিরা ঘরে ঢুকে। পরে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তারা চুরি করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা এ তথ্য জানায় বলে জানিয়েছেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।

এদিকে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় মেহেরাজ (৪৮) নামে এমামলার আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা চরকাজী মোখলেছ গ্রামের আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বারকে (৬৭) গ্রেপ্তার হয়। দু'জন আসামিই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, মুন্সি মেম্বার ওই গৃহবধূকে নাতনি বলে সম্বোধন করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই নারীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে আসছিলেন। নিজের স্ত্রী নেই, তাই তার প্রতি খেয়াল রাখতে গৃহবধূকে একাধিকবার কুপ্রস্তাবও দিয়েছেন। কিন্তু ওই নারী তাতে সাড়া না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয় মুন্সি মেম্বার। কিছুদিন আগে গরু বিক্রি করেন গৃহবধূর স্বামী। ওই টাকা ঘরেই আছে, মেহেরাজকে সেই লোভ দেখিয়ে আবুল খায়ের ও হারুন ঘরে ঢোকার পরিকল্পনা করে। যদিও তাদের দু'জনেরই উদ্দেশ্য ছিল গৃহবধূকে ধর্ষণ।

আসাদুজ্জামান বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার রাত দুটার দিকে সিঁধ কেটে ওই গৃহবধূর ঘরে ঢোকে তারা। এ সময় আবুল খায়ের ও হারুন প্রথমে গৃহবধূকে মুখ হাত-পা বেধে ফেলে ধর্ষণ করে। এ সময় মেহেরাজ পাশের কক্ষে থাকা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া গৃহবধূর মেয়েকে ধর্ষণ করে। পরে তারা ঘটনাটি চুরি বলে চালিয়ে দিতে ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু গৃহবধূ ও তার মেয়ে দু'জনকেই চিনে ফেলে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, সিঁধ কাটায় ব্যবহৃত কোদাল, একটি দা এবং ঘটনার সময় ব্যবহৃত মেম্বারের মানকি টুপি ও প্যান্ট জব্দ করা হয়। আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করতে এবং রিমান্ডের আবেদন করে বুধবার(৭ফেব্রুয়ারী)দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলার আরেক আসামি হারুন প্রকাশ গরু হারুন এখনো পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত:, ধর্ষণের ওই ঘটনার পরদিন গতকাল মঙ্গলবার ভুক্তভোগী নারী তিনজনকে আসামি করে সুবর্ণচর থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।