নৌ রুট উদ্বোধনের উপলক্ষ্যে রাজশাহীর ডিসির গোদাগাড়ী এলাকা পরিদর্শন।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:২২ পিএম | আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:২২ পিএম
ভারতের মায়া থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সুলতানগঞ্জ নৌ রুটের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। শুক্রবার সকালে উপজেলার সুলতানগজ্ঞ এলাকা পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আহমেদ। এ নিয়ে গোদাগাড়ীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দিতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। দু দেশের মাঝে সস্পর্ক আরও সুদৃড় হবে।
জেলা প্রশাসকের সাথে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান প্রমূখ।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিচালক রফিকুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, উদ্বোধনের দিন দুপুর ১২ টায় সুলতানগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী -১ আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার মি. প্রণয় ভার্মা, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর আফির আহমেদ মোস্তফা, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ও কাস্টমস এর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ।
ওই দিন ভারত থেকে একটি ভেসেলে পাথর আমদানির সম্ভবনা রয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতা সূত্রে জানা যায়, দু-এক দিনের মধ্যে একটি ফাঁকা ভেসেল বাংলাদেশ থেকে ভারতের মায়ায় পাঠানোর কথা। উদ্বোধনী দিন থেকে ৫টি ট্রিপ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই পথে ভারত থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, পাথর, মার্বেল, খনিজ বালু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী বাংলাদেশে আসবে।
অন্যদিকে এই পথে বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য ভারতে যাবে। এসব পণ্য মূলত বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়। সুলতানগঞ্জ থেকে মায়া নৌঘাটের নদীপথে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সুলতানগঞ্জ নৌঘাটটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক থেকে মাত্র এক কিলোমিটার ভেতরে পদ্মা মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত। সারা বছর সুলতানগঞ্জ পয়েন্টে পদ্মায় গভীর পানি থাকে।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের ময়া নৌঘাটটি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের কাছে ভারতীয় ৩৪ নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সুলতানগঞ্জ-ময়া পথে নৌবাণিজ্য শুরু হলে পরিবহণ খরচ অনেক কমবে। স্থানীয়রা জানান, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগপর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী ও ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বিপুল বাণিজ্য চালু ছিল। বাংলাদেশ থেকে এই পথে ভারতে বিপুল পরিমাণ পাট রফতানি হতো। বর্তমানে রাজশাহীতে প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এই মাছ এই নৌপথে ভারতে রফতানি করা সম্ভব হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর একান্ত সচিব (পিএস) মোহা. আমিনুর রহমান বলেন, রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ নদী বন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর পদ্মার তীরবর্তী সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর চালু হলে এই পথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার ময়া নৌবন্দরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই পথে ভারত থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, পাথর, মার্বেল, খনিজ বালু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী বাংলাদেশে আসবে।
অন্যদিকে এই পথে বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য ভারতে যাবে। এসব পণ্য মূলত বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়।
সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে এসব পণ্য ভারত থেকে আমদানিতে সময় ও খরচ বহুলাংশে কমে যাবে। এতে উপকৃত হবেন বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, বছরে এই নৌপথে দুই দেশের মধ্যে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, এর আগে নিয়ে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয় বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান নৌরুটে বাণিজ্য চালুর। রাজশাহী থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার একটি নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্যতা সংকটের কারণে কার্যকর করা হয়নি। ফলে রুটটি সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পণ্য আনা নেওয়া হবে। শুরুতে এই নৌপথে ভারত থেকে পাথর বালি ও বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সামগ্রী আনা হবে এবং ভারতের ময়া নৌঘাট থেকে বর্ষাকালে প্রতিটি নৌযানে ৩০০ টন পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান।
অন্যদিকে বাংলাদেশের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের জন্য প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ পাকুড় ব্র্যান্ডের পাথর ও খনিজ বালুর প্রয়োজন হয়। বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও যমুনা রেলসেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পে ব্যবহার হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের পাকুর ব্র্যান্ডের পাথর, যা সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। তবে সড়ক পথে এসব পণ্য আমদানিতে সময় যেমন বেশি লাগে তেমনি খরচ বেশি পড়ে। নৌপথে এসব পণ্য আমদানি করা গেলে পরিবহণ খরচ বহুলাংশে কম পড়বে।
উল্লেখ্য, পদ্মা-মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত সুলতানগঞ্জ পদ্মায় সারা বছর নৌ চলাচল উপযোগী পানি থাকে। বিপরীতে ভারতের ময়া বন্দরটিতেও সারা বছর পানি থাকে। শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার মধ্যখানে কিছু পথে নাব্যতা কমে যায়। তবে তেমন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে পদ্মায় ড্রেজিং করে নৌপথটি সারাবছর সচল রাখা হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ময়া থেকে বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আসতে পণ্যবাহী নৌযান মাত্র এক ঘণ্টায় আসতে পারবে।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর চালু প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত নৌপ্রটোকলের আওতায় নদীপথে দুই দেশের মধ্যে কম খরচে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহীর সুলতানগঞ্জে নৌবন্দরের কার্যক্রম চালু হলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ময়া নৌবন্দরের সঙ্গে নদীপথে বাণিজ্য শুরু হবে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই উপকৃত হবেন। সুলতানগঞ্জ-ময়া একটি লাভজনক ও চমৎকার নৌরুট হতে পারে। দুই পাড়েই অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা এখনো রয়েছে। তবে সুলতানগঞ্জ বন্দর চালু হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নৌপ্রটোকলের আওতায় ২০২০ সালের অক্টোবরে সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌপথটি চালুর কথা ছিল; কিন্তু করোনা মহামারির কারণে নৌপথটি চালুর কাজ পিছিয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, সুলতানগঞ্জ থেকে ময়া নৌঘাটের নদীপথে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সুলতানগঞ্জ নৌঘাটটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক থেকে মাত্র এক কিলোমিটার ভেতরে পদ্মা মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত। সারা বছর সুলতানগঞ্জ পয়েন্টে পদ্মায় গভীর পানি থাকে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের ময়া নৌঘাটটি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের কাছে ভারতীয় ৩৪নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সুলতানগঞ্জ-ময়া পথে নৌবাণিজ্য শুরু হলে পরিবহণ খরচ অনেকাংশে কমবে।
স্থানীয়রা আরও জানান, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগপর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী ও ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বিপুল বাণিজ্য চালু ছিল। বাংলাদেশ থেকে এই পথে ভারতে বিপুল পরিমাণ পাট রফতানি হতো। বর্তমানে রাজশাহীতে প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এই মাছ এই নৌপথে ভারতে রফতানি করা সম্ভব হবে। ভারত থেকে কয়লা, সিমেন্ট তৈরির উপকরণ ফ্লাই অ্যাশ, ক্লিংকার আমদানিও সম্ভব এই নৌপথে। কারণ ভারতে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পাকুড় থেকে মুর্শিদাবাদের ময়া বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৫৫ কিলোমিটার।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে: ফায়ার সার্ভিস
মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি মনিরুল, সম্পাদক প্রিন্স
খুলনায় ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ছাত্রলীগের মিছিল
দেশে বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৯০ হাজার, বেড়েছে পুরুষ বেকার
কুয়াকাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে সংঘর্ষ আহত- ১১,আটক ২
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির সাক্ষাৎ
সিটি ব্যাংক ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি স্বাক্ষর
কুড়িগ্রামে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন জানিয়ে ছাত্র সমাবেশ
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার দাবীতে নীলফামারীতে ছাত্রলীগের পদযাত্রা, সমাবেশ
মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নেমে আসবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিএনপির আরো ৩ জন বহিষ্কার
গাম্বিয়ার দায়ের করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসি’র সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চুয়াডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী গ্রামের শিশু মাইশা হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন
টাঙ্গাইল শাড়ী নিয়ে ভারতে আইনি লড়াইয়ের ল’ফার্ম নিয়োগ
অবৈধ টিভি চ্যানেল ও লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে কাজ শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
এয়ারটেল নিয়ে এলো ই-স্পোর্টসের বড় আসর
চাঁদপুরে পিকআপ-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা- ছেলে নিহত
গাছ কাটা-লাগানো বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত সেমিনারে মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী