ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৯ আশ্বিন ১৪৩১

মিয়ানমারে ফেরাতে ইনানীতে পৌঁছেছে ৩৩০ বিজিপি সদস্য

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪২ এএম | আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪২ এএম

কক্সবাজারের হ্নীলা এবং নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির কাছে আশ্রয়ে থাকা ৩৩০ জন বিজিপি সদস্যকে ইনানী সৈকতে আনা হয়েছে। সৈকতের নৌবাহিনীর জেটি ঘাটে তাবু টাঙিয়ে রাখা হয়েছে তাদের। বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর উপলক্ষে ইনানী ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিজিবি ছাড়াও রয়েছে র‌্যাব-পুলিশের সশস্ত্র সদস্যরা। বন্ধ রাখা হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে বিজিবির কঠোর পাহারায় ঘুমধুম থেকে ছয়টি গাড়িতে করে ১৬৪ জনকে ইনানী সৈকতে আনা হয়েছে। বাকি ১৬৬ জনকে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আনা হয়। হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর পর্যটকবাহী দুটি জাহাজে করে তাদের গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাহাজে নিয়ে যাওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের কাছে বিজিপি সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন।

এদিকে সকালে ঘুমধুম এবং হ্নীলা থেকে বিজিপি সদস্যদের বহন করা প্রতিটি গাড়ির সামনে পেছনে ছিল দুটি করে বিজিবির গাড়ি। গাড়ি থেকে নামানোর সময়ও প্রতিটি বিজিপি সদস্যের সঙ্গে ছিলেন একজন করে বিজিবি সদস্য। সৈকতে নৌবাহিনীর জেটির পাশে তাবু টাঙিয়ে রাখা হয়েছে বিজিপি সদস্যদের। বিজিবির মহাপরিচালক এসেই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে বিজিপি সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন।

এরইমধ্যে তাদের নিতে আসা জাহাজটি রাত একটার দিকে মিয়ানমার সিটু বন্দর থেকে বাংলাদেশের জলসীমায় এসে অবস্থান নিয়েছে।

সেন্টমার্টিন-টেকনাফ রুটের পর্যটকবাহী কর্ণফুলি এবং বারো আউলিয়া নামে দুটি জাহাজে করে তাদের গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা মিয়ানমারের জাহাজে নিয়ে যাওয়া হবে।

বিজিবিসহ একাধিক সূত্র বলছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েক দিনে এই ৩৩০ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বিজিবির অধীনে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। উভয় দেশের আলোচনার প্রেক্ষিতে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জনকে হস্তান্তর করা হবে।

তথ্য মতে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। তারা শান, রাখাইন, চীন ও কেয়াহ রাজ্যে লড়াই চালাচ্ছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সেনাপোস্ট দখল করেছে।

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের জনগোষ্ঠীর মধ্যেও। যুদ্ধের গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। এতে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তায় সৈকতে আনা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণে টিকে থাকতে না পেরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, উখিয়া উপজেলার পালংখালীর রহমতের বিল এবং টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় আশ্রয় নেন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ছাড়াও সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে ১৪৮ জন, উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে ১১৪ জন এবং উলুবনিয়ার সীমান্ত দিয়ে ৬৮ জন বিজিপি সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্র করে আশ্রয় দেয়।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত, সুনামি সতর্কতা জারি

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত, সুনামি সতর্কতা জারি

রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের একার উদ্বেগের বিষয় নয়   পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের একার উদ্বেগের বিষয় নয়   পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ক্ষতিকর ভারী ধাতু লাল শাকে বেশি, লিচুতে উচ্চমাত্রার কীটনাশক

ক্ষতিকর ভারী ধাতু লাল শাকে বেশি, লিচুতে উচ্চমাত্রার কীটনাশক

নিরাপদ নয় অ্যাপেলের গ্যাজেটও, তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় সতর্কবার্তা ভারতের

নিরাপদ নয় অ্যাপেলের গ্যাজেটও, তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় সতর্কবার্তা ভারতের

ডুলহাজরায় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনা কর্মকর্তা নিহত, ৭ ডাকাত আটক

ডুলহাজরায় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনা কর্মকর্তা নিহত, ৭ ডাকাত আটক

৬ বছরের শিশুর ধর্ষণ ঠেকাল বাঁদর বাহিনী!

৬ বছরের শিশুর ধর্ষণ ঠেকাল বাঁদর বাহিনী!

বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা: ছাত্রলীগ নেতা সিয়াম গ্রেফতার

বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা: ছাত্রলীগ নেতা সিয়াম গ্রেফতার

চলতি হেমন্তকালই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করবে: জেলেনস্কি

চলতি হেমন্তকালই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করবে: জেলেনস্কি

নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশিদের জরুরি বার্তা দূতাবাসের

লেবানন প্রবাসী বাংলাদেশিদের জরুরি বার্তা দূতাবাসের

সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না: ওয়াকার-উজ-জামান

সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না: ওয়াকার-উজ-জামান

শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার আসামি স্বপন মিয়া গ্রেপ্তার

শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার আসামি স্বপন মিয়া গ্রেপ্তার

প্রস্তরযুগের শতাধিক জেড ড্রাগনের সন্ধান

প্রস্তরযুগের শতাধিক জেড ড্রাগনের সন্ধান

নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূস-বাইডেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ

নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূস-বাইডেন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ

জাপানকে হারিয়ে উত্তর কোরিয়ার রেকর্ড

জাপানকে হারিয়ে উত্তর কোরিয়ার রেকর্ড

তৌ‌হিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক: আলোচনায় যে সব বিষয়

তৌ‌হিদ-জয়শঙ্কর বৈঠক: আলোচনায় যে সব বিষয়

ভারতে পালানোর সময় সীমান্তে আওয়ামী লীগ নেতা আটক

ভারতে পালানোর সময় সীমান্তে আওয়ামী লীগ নেতা আটক

১,০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে ফিরল হারানো বিড়াল!

১,০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে ফিরল হারানো বিড়াল!

গাজীপুরে নারী নিহত : বাসে আগুন

গাজীপুরে নারী নিহত : বাসে আগুন

চোটে মৌসুম শেষ রদ্রির

চোটে মৌসুম শেষ রদ্রির