নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় যৌন হয়রানি: আন্দোলনে শিক্ষার্থী, সম্মানহানির অভিযোগ শিক্ষকদের
১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলকারিরা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেইটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করে।
তবে একটি মহল যৌন হয়রানির ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে কিছু শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে শিক্ষকদের সম্মানহানির মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিনষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছেন। যা দুঃখজনক ও মানহানিকর বলেও দাবি করেন শিক্ষকরা।
রোববার (১০ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে এসব দাবি করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিগত পাঁচদিন ধরে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেইটে তালা দেওয়া এবং বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করে জড়িতদের বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে বিশ^বিদ্যালয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ওই বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহা বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু তদন্ত কমিটি গঠনের পর দিন আন্দোলনকারিরা ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র’র বিরুদ্ধে অসহযোগিতা ও হয়রানির অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় এনে আন্দোলন শুরু করে। এরপর বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয়।
কিন্তু এরপরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় বিগত পাঁচদিনের ধারাবাহিকতায় রোববার দুপুর ১১টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহা এবং অসহযোগিতা ও হয়রানির অভিযোগে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র’র শাস্তি দাবি করে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে দুই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা তৈরী করে অপমাননাকর শ্লোগান দিয়ে জুতার মালা পড়ায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালকবৃন্দ আন্দোলনকারিদের কাছে এসে ঘটনার তদন্তপূর্বক বিচারের আশ^াস দেয়। পরে দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়ধ্বনি মঞ্চের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করে একটি মৌন মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্রিয়াশীল সকল সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এদিকে আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে এবং অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের ‘সম্মান হত্যা’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। এ ঘটনায় এদিন দুপুর ২টায় তালাবদ্ধ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সামনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষক। মানববন্ধনে তারা বলেন- ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ঘটনায় আমরাও বিচার চাই। কিন্তু একটি ষড়যন্ত্রকারি মহল কিছু শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিনষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেন সহযোগী অধ্যাপক মো: রফিকুল আমিন।
তিনি বলেন, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ‘সম্মানিত’ শিক্ষকদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। এতে শিক্ষকদের এবং বিভাগের সম্মান নষ্ট হয়েছে।
সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান খান বলেন, একটি মহল তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে। এ সময় একাধিক শিক্ষক আরও বলেন, আন্দোলনের প্রথমদিন অভিযুক্ত এক শিক্ষককের বিচার ও শাস্তি দাবি করা হলেও একদিন পর হঠাৎ ওই ঘটনার সাথে বিভাগীয় প্রধানকে জড়ানো হয়। এই ঘটনাটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলেই আমরা মনে করছি।
জানতে চাইতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনায় বিচার চাই। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনার সাথে আমাকে জড়ানো হয়েছে। অথচ ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে জানার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপের সুপারভাইজার পরিবর্তন করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীর হয়রানি লাঘবে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছি। এরপরও একটি মহলেরও ইন্ধনে আমার সম্মানহানি করা হচ্ছে। এতে আমি মর্মাহত।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেছে বলে আমি মনে করি না। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। প্রতিবেদন হাতে পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত চলমান আছে। তবে শিক্ষকদের সম্মানহানি করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সম্মানমূলক শ্লোগানের বিষয়টি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সুনামগঞ্জে সীমান্তজুড়ে কঠোর অবস্থানে বিজিবি
শামি-বুমরাহকে নিয়েই ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল
ঝিনাইদহে নিখোঁজের ৭দিন পর সেপটি ট্যাংকে মিললো যুবকের লাশ
ইসলামী আইনজীবী পরিষদের ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন রবিবার
কমলনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ৩
কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির ১২টি ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা
তারাকান্দায় বাসের ধাক্কায় আহত-৪
কুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো ন্যাশনাল আইডিয়া কেস কম্পিটিশন ‘বিজব্যাটেল’
ভারতের ড্রেসিংরুম চ্যাপেল যুগের মতো বিধ্বস্ত: হরভজন
জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান
আন্দোলনের ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে বাঁশ ও বেত শিল্প প্রায় বিলুপ্ত
দুই যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ৪ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে- গ্রেপ্তার- ১
হবিগঞ্জে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করেছে বিজিবি
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শুরু
শুরু হয়েছে 'শার্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সিজন–২ এর রেজিষ্ট্রেশন; কি থাকবে এবারের পর্বে?
‘২০ বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন’
বাংলাদেশে ঢুকে গাছের ডাল কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা
নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ৬ জন গ্রেফতার, ড্রেজার জব্দ
ইরানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুই বিচারক