উখিয়া টেকনাফের ক্যাম্পসমুহে রোহিঙ্গাদের আসন্ন ঈদ ভাবনা
০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম
ঈদ আসে, ঈদ যায়। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৫ শে আগষ্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে আসা মিয়ানমার জান্তা সরকারের জোরপূর্বক বাস্ত্যুচ্যুত (মিয়ানমার নাগরিক) রোহিঙ্গাদের অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয় না।যতই দিন এগুচ্ছে, তাদের নিজভুমে ফিরে যাবার সম্ভাবনাও তত ক্ষীণ থেকে ক্ষীনতর হচ্ছে। তাদের চোখে, মুখে অনিশ্চয়তা, হতাশার ছায়া ঘিরে ধরেছে। উদাস চোখের দূ:ষহ স্মৃতি নিয়ে তারা আসন্ন ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছে। আসলেই কী তারা ঠিকঠাকভাবে ঈদ উৎসব পালন করতে পারবে?
এর পরেও ঈদ আনন্দে মেতে ওঠার অপেক্ষায় আছেন নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গাসহ এ দেশে আশ্রিতসহ মোট ১৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। গতকাল শনিবার দুপুরে কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের মাঝে ঈদের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা আলম ও তফুরা বেগমসহ অনেকে জানান, এবার তারা নির্ভয়ে ঈদ উদযাপনের পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী ঈদ উদযাপনের উপকরণ সমুহ পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো মন্দ খেতে পারবেন। এতে পরিবার পরিজনদের নিয়ে অন্তত ঈদের আনন্দ একটু হলেও ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন তারা।
বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যুবক মঞ্জুর ও বেলাল হোসেনের সাথে আসন্ন ঈদ উদযাপন প্রসঙ্গে কথা বলার এক ফাঁকে তারা বলেন, গত বেশ কয়েক বছর যাবৎ আমরা বিদেশের মাটিতে ঈদ উদযাপন করে আসছি। প্রতিবছর ভালো মন্দ ঈদ করতে পারলেও এ বছর ঈদ করতে গিয়ে অনেক সমাস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় পন্য, দ্রব্যসামগ্রী পাই না। আমাদের সঞ্চিত টাকা থেকে বা স্বর্ণালংকার বিক্রি বা বন্ধক রেখে ঈদের কেনাকাটাসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হচ্ছে। এ বছর আমাদের প্রয়োজনের অতি নগন্য সামগ্রী বরাদ্দ দিয়েছে যা দিয়ে খেয়ে পড়ে কোনভাবেই ঈদ উদযাপন করা সম্ভব নয়। আমরা দ্রুত সম্মানের সাথে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারলেই বাঁচি।
ইতিমধ্যেই দীর্ঘ ৬ বছরের অধিককাল রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন করছে। এবারও তারা তাদের সীমাবদ্ধ অবস্থান থেকে ঈদ পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদুল ফিতর উৎসব পালনের আমেজ তুলনামূলক কিছুটা কম বলেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশে পাশের বিভিন্ন শপিং মল, মার্কেট ও বিভিন্ন আউটলেট থেকে শত শত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, যুবক যুবতী, আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা তাদের নানা সীমাবদ্ধের মধ্যেও বাহারী রকমের পোশাক আশাক, নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য, সৌখিনপন্য, ঈদের মিষ্টান্ন সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের জন্য পণ্যসামগ্রী ক্রয়ে ব্যস্ত দেখা গেছে। তবে বেচা বিক্রি অন্যান্য বছরের চেয়ে কম বলে জানান কুতুপালং এলাকার জনৈক ব্যবসায়ী আলী।
অন্যদিকে, সবমিলিয়ে এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্প ও ভাসানচরে ১৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের বসবাস। তারা এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ঈদ কাটিয়েছেন ক্যাম্পে। রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারের ৩২টি ক্যাম্পে অবস্থিত প্রায় ১ হাজার ৪২০টি মসজিদ ও ৯৪০টি নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মক্তব) রয়েছে। এসব মসজিদ ও নূরানি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা ঈদের নামাজ আদায় করেবেন বলে জানা যায়।
ক্যাম্পের আশে পাশে মার্কেট, শপিংমল, বিভিন্ন আউটলেটে গিয়ে দেখা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী এলাকায় চলছে ঈদের কেনা কাটার ধুম। তাছাড়া টেকনাফের জাদিমুড়া, শালবন, নয়াপাড়া, লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশে পাশের কিছু অংশে বেলুন আর ঈদ মোবারক লেখা ব্যানারে গেইট বানিয়ে রঙ-বেরঙের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে ঈদ শপিং-এর আউটলেটগুলো।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনৈক কামাল অত্র প্রতিবেদককে জানান, ‘প্রিয় জন্মভূমিতে সত্যিই কি ফেরা হবে? ফেরলে কখন? — এমন সংশয় দানাবেঁধে আছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। তাদের প্রশ্ন, এই দেশের ( বাংলাদেশের) বোঝা হয়ে আর কত দিন থাকতে হবে? আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন- 'জানি না, আবার কখন ফিরে পাবো নিজ দেশে পালিত হারানো ঈদের দিনগুলো ও সুখের অনুভুতি।’
উখিয়া টেকনাফে অবস্থিত ৩২ টি ক্যাম্পের রোহিঙ্গা জনগোষ্টীর আসন্ন ঈদ উৎসবে সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করার সুযোগ না পেলেও অনেক প্রভাবশালী রোহিঙ্গা নেতা, প্রভাবশালী সদস্য, বিভিন্ন বৈধ-অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বুনে গেছে। যদিওবা এরুপ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা অতি নগন্য তথাপি তারাই সাধারণ রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে চলছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ট্রাম্প
ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে : সিইসি
অস্ত্র মামলায় মামুন খালাস
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা
ইনু-মেনন-সালমান-আনিসদের রিমান্ড, নতুন করে গ্রেপ্তার মন্ত্রী-এমপিসহ ১৬ জন
দলীয় নেতাদের একযোগে কাজ করার আহ্বান এবি পার্টির
হত্যা মামলায় মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ৫ দিনের রিমান্ডে
হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা
আমদানি মূল্য পরিশোধের সময় বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বকেয়া পরিশোধে জুন পর্যন্ত সময় বাড়লো আদানি
অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে : রিজভী
বেক্সিমকোর ১৬টি কারখানার ছাটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরি ফিরে পাওয়ার সিদ্ধান্ত ২৭ জানুয়ারি
যুদ্ধবিরতির কয়েক মিনিট আগেও ইসরায়েলের হামলা গাজায় বিলম্বিত সময়ের মধ্যে নিহত ১৯
আমেরিকার স্বর্ণযুগ শুরু হচ্ছে
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ছাত্রদল নেতার শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ
এবার মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল স্থগিত
চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এলডিপি মহাসচিবের বৈঠক
সরিষাবাড়ী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ