শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী আদনানুজ্জামান
২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২০ পিএম | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেটির নাম আদনানুজ্জামান। অদম্য মেবাধী ছেলেটি আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে। তার বাসা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আরওয়া পাড়ায়। বাবার নাম মোহাম্মদ আজগর আলী ও মায়ের নাম সাবিনা সুলতানা লিলি। তারা দুই ভাইবোন। তার বাবা ও মা দুজনই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
আদনান শারীরিক ভাবে নানা সমস্যায় জর্জরিত। ঠিকমত হাটতে পারেন না, কথা বলতেও বেগ পেতে হয়, এমনকি হাতেও রয়েছে প্রতিবন্ধীজনিত সমস্যা ও হাতের কাঁপুনি। হাজারো সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র দমে যাননি তিনি। নিজের প্রবল ইচ্ছে শক্তি ও পারিবারিক সহায়তায় সে আজ শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছে।
অদম্য এ আদনান কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে প্রস্তুতি নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধের। তার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্নছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়াশোনা করবে। সে স্বপ্ন থেকে ভর্তি যুদ্ধে অংশও নিয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী ও হাতের কাঁপুনি সে এ যাত্রায় ব্যর্থ হয়ে যান।
আদনান জানান, আমি ঢাবিতে যখন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি শ্রুতিলেখককে সাথে নিতে পারেননি। কারণ এরকম কোন অনুমতি সে পায়নি। যার ফলে হাতের কাঁপুনি থাকায় বৃত্ত ভরাট করতে গিয়ে একটার সাথে আরেকটা গুলিয়ে ফেলেছি। পরবর্তীতে আমার ফলাফল ফেইল আসে।
আদনান বলেন, আমার বিশ্বাস যদি শ্রুতিলেখক বা প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদাভাবে পদ্ধতিতে খাতা দেখা হত। তাহলে আমার এ স্বপ্ন পূরণ হত।
তিনি আরো জানান, যেহেতু ঢাবিতে আমার সুযোগ হয়নি। ইন-শা-আল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবোই। ইচ্ছে আছে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে আমি একটি সরকারী জব করবো। আমার এ যাত্রায় পিতামাতাকে সবসময় পাশে পেয়েছি। যারা হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও আমার পাশে থেকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
আদনানের মা সাবিনা সুলতানা লিলি বলেন,
অনেক কষ্ট করে এই ছেলে নিয়ে পথচলা। প্রাথমিক পর্যন্ত ওকে কোলে করে স্কুলে নেওয়া লেগেছে। এক হাতে ব্যাগ অন্য হাতে ও, তবুও হাল ছাড়ি নাই। এই ছেলেকে মানুষ আমার করতেই হবে। সবাই আমরা সুস্থদের দিকে তাকাই অসুস্থদের দিকে কেউ তাকাই না! তবে মায়েরা ভিন্ন! একজন মা ইচ্ছে করলেই, তবে একজন সন্তান কে মানুষ করতে পারে।
আমি আমার এই ছেলেকে দীর্ঘ আট বছর কোলে করে স্কুলে নিয়েছি। ওর পিছনে ওর শিক্ষকদের ও অনেক অবদান রয়েছে। এই ছেলে ১৮ মাস বয়সে বসতে শিখেছে, ৭ বছর বয়সে বসতে শিখেছে এবং ৯ বছর বয়সে হাটা শিখেছে। এমনকি ছোটো সময় ও কথাও বলতে পারতো না। ওর নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ওর স্বপ্ন ও আমাদের ইচ্ছেশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ছেলেকে মানুষ করার চেষ্টা করছি। আমি মন থেকে চাই আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হোক এবং ওর অদম্য ইচ্ছেশক্তির মাধ্যমে অন্যরাও তাদের প্রতিভা বিকশিত করুক এই প্রত্যাশাই রাখছি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
খুলনা জহুরুল হক হাসপাতালে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
কুষ্টিয়ায় গ্যাস লাইট বিস্ফোরণে ঝলসে যাওয়া কিশোরের মৃত্যু
শুক্রবার টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের এক পাইলট নিহত
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
মাগুরায় রানা আমীর ওসমানের বিজয় মিছিলে সাকিব আল হাসান
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে জিডি করেছেন বুবলী
গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জয়ী গায়কের বাড়িতে হামলা, একজন গুলিবিদ্ধ
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা : ৩ জনের যাবজ্জীবন, ৬ জন খালাস
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা রাশিয়ার, অন্ধকারে ইউক্রেন
দুবছর ধরেই ভারতে বন্ধ কোভিশিল্ড, বিতর্কের মধ্যে দাবি সিরামের
ফের জেলেনস্কিকে খুনের ছক, ষড়যন্ত্রে শামিল ইউক্রেনেরই দুই কর্নেল!
‘গণছুটি’ নেয়া কেবিন ক্রুদের একসঙ্গে বরখাস্ত করল এয়ার ইন্ডিয়া
রেফারিং নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে বায়ার্ন
হিজবুল্লাহর হামলায় উত্তর ইসরাইলে এক ইহুদিবাদী সেনা নিহত
বাইডেনের স্বীকারোক্তি, মার্কিন বোমায় মারা গেছেন ফিলিস্তিনিরা
কর্ণফুলীতে বিধ্বস্ত বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান
ইসরাইলকে তথ্য দিতে গাজায় ব্রিটেনের ২০০ গোয়েন্দা ফ্লাইটের ১০০০ ঘণ্টা নজরদারি