ক্ষমতার অপব্যবহারে দুর্নীতির পাহাড়, সিলেটে এখনো বেপরোয়া ডা: জাকি ইব্রাহিম
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৭ পিএম

শেখ হাসিনার সরকারের আমলে অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাঠের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। লুটপাঠের নাটের গুরু ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা: জাকি ইব্রাহিম। সিনিয়র প্রভাষকদের পেছনে ঠেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িতœ নিয়েছিলেন তিনি। তার এই নিয়োগ নিশ্চিত করেন কথিত এডহক কমিটি। তার অনিয়মন দুর্নীতির ছায়া ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা: ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। দললীয় প্রভাবে একেরপর এক অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্য, ভূমিখেকো ভূমিকায় অবর্তীন হন ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এছাড়া চাকুরী নিয়মিত না থাকা সত্বেও বিধিবহির্ভূতভাবে দুইটি টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেড নেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগদান করে পদায়ন অপেক্ষামান থাকাবস্থায় আওয়ামীলীগের নেতাদের ছত্রছায়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদও জুঠে তার কপালে। তার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে একাধিক তদন্ত হলেও দমানো যায়নি তাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বৎসরে সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ঔষধ ক্রয়ে তুঘলকি কান্ড ঘটনা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা: জাকি ইব্রাহিম। হাসপাতালের এ্যালোপ্যাথিক ও আয়ূর্বেদিক মেডিকেল অফিসার না থাকা সত্ত্বেও কমিশন লুঠতে দরপত্রে সিডিউল ভুক্ত করেন একটি কোম্পানীর এ্যালোপ্যাথিক এবং আয়ূর্বেদিক প্রোডাক্ট। চলতি বছরের ০৭ মে ২০২৪ আহবানকৃত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির ৪ নম্বর কলামের দরপত্র ক্রয় বাবদ চালানের কোড নম্বর ১৪২২৩২৮ থাকার পরও সেই টাকা জমা করেনি তিনি। এছাড়া ১৪ নম্বর কলামে দরপত্র খোলার তারিখ ও সময় ১৯ মে নির্ধারনের কথা উল্লেখ থাকলেও ২০ মে দরপত্র খোলেন তিনি। অথচ দরপত্রে অংশগ্রহণকারীদের কাছে গোপন রাখেন সেই তথ্য। সেই সুযোগে জমাকৃত সবকটি দরপত্রের সিডিউল ঘষা-মাজা করে পছন্দের ঔষধ কোম্পানীর নিকট তুলে দেন প্রতিষ্টানের ঔষধ ক্রয়ের কাজ। এমন অনিয়মের ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব পান স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। পরিকল্পনা-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিন। রহস্যজনক কারনে এখনো থেমে রয়েছে সেই তদন্তের কাজ। এছাড়া বহু অনিয়মের ঘটনার অভিযোগ প্রদান করা হয় সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে। সেই পেক্ষিতে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেন সিলেটের জেলা প্রশাসকে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন গত ২৮ ফ্রেব্রুয়ারী এক পত্র তদন্তের নির্দেশে সিলেটের সিভিল সার্জন ডাঃ মনিসর চৌধুরীকে। সিভিল সার্জনের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: জম্মে জয় দত্তের তদন্তে ধরা পড়েÍ ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি। কিন্তু তৎকালীন আ’লীগ সরকারের প্রভাবশালীদের চাপে সেই তদন্ত প্রতিবেদন এখনো অন্ধকারে। ডাঃ জাকি ইব্রাহিমের অনিয়ম দুর্নীতির ঢালপালার বিস্তৃতি ব্যাপক। কলেজে ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল হাজিরা না থাকায় ডাঃ জাকি কলেজে না এসেও একদিনে সারা মাসের হাজিরা দিয়ে চলে যান ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্টানে। কর্মস্থলে না এসেও হাজিরা খাতায় উপস্থিত শীর্ষক শিরোনামে স্থানীয় সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পর ঘটনার সত্যতা তদন্তের জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট্ কমিঠি গঠন করেন কর্তৃপক্ষ। কলেজের তা: ০৩/৩/২০২৪ খ্রিঃ; স্মারক নং এফ-১৮২/সইআ(মকহা/ ২০২৪/২৭৩ নম্বরপত্রে তদন্ত কমিঠি গঠন হলেও তদন্ত কাজ বানচাল করা দেন ডা: জাকি ইব্রাহিম দলীয় প্রভাবে।
এছাড়া নগরীর কুমারপাড়া ও মিরাবাজারে পৃথক দু’টি হিজমা সেন্টার খুলেছেন তিনি। লাইসেন্স বিহীনভাবে সুন্নাহ এন্ড ট্রাডিশনাল মেডিসিন সেন্টার গড়ে তুলে সাধারণ মানুষের সাথে রীতিমতো প্রতারণা করছেন তিনি। এছাড়া ইব্রাাহিমের পরিবার সিলেটের মেট্রো সিকিউরিটিজ কোম্পানীর সমগ্র টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, পরবর্তীতে সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি। ডা: জাকি ইব্রাহিমের আপন ছোট ভাই রাফি ইব্রাহিম সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়স গোপন করে, জাল সনদ তৈরি করে চাকুরী নেয়ার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয় দূর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)।
অপরদিকে, ডাঃ জাকি ইব্রাহিমের প্রত্যক্ষ সহায়তায় কলেজের নগরীর চালিবন্দরের সমতা-৮ পুরাতন ক্যাম্পাসের ২৬ শতক জমি বেদখল হয়, একই সাথে আরো ৩২শতক ভূমি বেদখল। ভূমিখেকোদের সাথে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা সকলের কাছে ওপেন সিক্রেট। এমনকি এ নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তদন্তে তার সর্ম্পৃক্ততা উঠে এসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। ডা: জাকি ইব্রাহিম কলেজের নামে বরাদ্দকৃত মোবাইল ফোন এবং মডেম এবং হিজামা যন্ত্রপাতির সেট নিজের বাসায় নিয়েছেন এবং ডাঃ জাকি ইব্রাহিম স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারী কাজে ফাঁকি দেওয়া এবং সরকারী সম্পত্তি আত্মসাত এর অভিযোগ তদন্তের জন্য কমিঠি গঠিত হয় সিলেট জেলা প্রশাসকের স্মারক নং৫৯.০০.০০০০.১১১.৯১.০৪০.২৩.৪৬: তাং ০৭.০৩.২০২৪ ইং। কিন্তু সেই তদন্তের অগ্রগতি থমকে যায় শেখ হাসিনা সরকারে থাকায়। এখন পেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় অভিযোগ দ্রুততদন্তের দাবী করছেন সংশ্লিষ্ট ভূক্তভোগীরা।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

নোয়াখালীতে বিআরডিবির অর্থ কেলেঙ্কারি: আওয়ামীলীগ নেতার ১১ বছর জেল, ৩১ লাখ টাকা জরিমানা

ন্যাটোর অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান রুটের

৯ মিনিটেই শেষ ট্রেনের আগাম টিকিট, আধাঘণ্টায় ২০ লাখ হিট

যুক্তরাষ্ট্রে বিমানবন্দরে ১৭৮ আরোহীবাহী বিমানে ভয়াবহ আগুন

প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল মতিনের প্রথম জানাজায় মুসল্লিদের ঢল

যুবদলের সভাপতির পায়ের রগ কেটে দিলেন শ্রমিক দল নেতা

সহিংসতা থেকে বাঁচতে রুশ বিমানঘাঁটিতে আশ্রয় নিলেন ৯ হাজার সিরীয়

মসজিদের সামনে মুসলমানদের ওপর হামলা ভারতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়

বদলি নেমে মেসির গোল, শেষ আটে মায়ামি

ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের

পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ইতালির বিপক্ষে জার্মান দল ঘোষণা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ইতিবাচক বললেন ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা

ফিরলেন এমবাপে, প্রথমবার ফ্রান্স দলে ডুয়ে

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিবের সফর: নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সফর এলাকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠক

মেহেরপুরে ৯ বছরের শিশু ধর্ষণ: আসামিদের জামিন, প্রতিবাদে থানা ঘেরাও

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের কক্সবাজার সফর আজ, লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার

লালপুরে স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ইভটিজিং, থানায় অভিযোগ দেওয়ায় বাবাকে পেটালো বখাটে

পরমাণু ইস্যুতে বেইজিংয়ে চীন-ইরান-রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা শুরু