ছেলে ও শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে আনসারদের হামলায় প্রাণ গেলো বাবার

বৈশম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহতের দাফন সম্পন্ন, চলছে শোকের মাতম

Daily Inqilab মোংলা সংবাদদাতা

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম

 


ছেলে বৈশম্য বিরোধী আন্দোলনে, তাই বসে থাকতে পারেননি বাবা। ছেলে ও শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে শেষমেশ প্রাণ গেলো বাবার। নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের লাশের জানাজা শেষে তার গ্রামে বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। চলছে শোকের মাতম। সরকারের কাছে পরিবারের দাবী অন্তত একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার।

গত ২৫আগস্ট ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করে আনসার সদস্যরা। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যান রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল। ঘটনার দিন বিকেলে ছেলে বিশাল আন্দোলনে যাওয়ার খবরে বাবা শাহিন হাওলাদার আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। রাতে তিনিও ছুটে যান ওই আন্দোলনে। গিয়ে দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর আনসার বাহিনীর হামলা চলছে। তখন তিনি তা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া শাহিন বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে ওই দিনই তার লাশ নেয়া হয় গ্রামের বাড়ী বাগেরহাটের মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ডে। সেখানে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর)
সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
বাড়ীতে লাশ নেয়ার পর কান্নায় ভারী হয়ে উঠে এলাকা। ছুটে আসেন শতশত মানুষ। বিএনপি সমর্থিত শাহিন পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। বিএনপির কর্মী হওয়ার তার জানাজায় শরীক হন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। আসেন পুলিশ প্রশাসনও। শাহিন ঢাকায় রেন্ট-এ কার চালক ছিলেন। থাকতেন পরিবারসহ ঢাকাতেই।

নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ভাই শিপন হাওলাদার বলেন, আনসাররা আমার ভাইর মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মাথায় অস্ত্রপাচারও হয়। তারপর আইসিইউতে থাকার পর মৃত্যু হয় তার।

নিহতের ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল বলেন, আমি ছাত্রদের সাথে আনসার বিরোধী আন্দোলন ছিলাম। সেই খবর শুনে তিনিও ছুটে আসেন। পরে সেখানে এসে বাবা দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে মারধর করছে আনসার সদস্যরা। হাসনাত আব্দুল্লাহকে ঠেকাতে গেলে সেখানে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী দীপ্তা বেগম বলেন, আনসার সদস্যরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি এর বিচার চাই। আর পরিবার নিয়ে বেচে থাকার জন্য একটি চাকুরীর দাবী জানাচ্ছি সরকারের কাছে।
মা কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের যেন বিচার হয়। আমার ছেলের পরিবার চলবে কিভাবে, সেজন্য একটা চাকুরীর ব্যবস্থা হলে ভাল হয়।
মোংলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান জানান,আওয়ামী লীগের নির্যাতনের কারনে৷ শাহিন হাওলাদার ঢাকায় বসবাস করতেন।সেখানেই সে আওয়ামী আনসার বাহিনীর হাতে নিহত হন।সে খুব ভালো মানুষ ছিলেন।

পরিবারের দাবী একটি চাকরির। যদিও শহীদ শাহিনের পরিবারকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলে জানান নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ছেলে শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই
লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১ আহত ২
ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন
বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র
পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া
আরও
X

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে  লিপ্ত  হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে  ঃ  মামুনুল হক

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে ঃ মামুনুল হক

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' -  ড. ফায়েজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' - ড. ফায়েজ

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১  আহত ২

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১ আহত ২

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে:  শিপন

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে: শিপন

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের

হটপটে মূত্রত্যাগ! চাপের মুখে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা চীনের বিখ্যাত রেস্তরাঁর

হটপটে মূত্রত্যাগ! চাপের মুখে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা চীনের বিখ্যাত রেস্তরাঁর

রাহুল নয়, দিল্লির নেতৃত্বে প্যাটেল

রাহুল নয়, দিল্লির নেতৃত্বে প্যাটেল

কিছু ধর্মান্ধের জন্য রঙের উৎসব মুসলমানদের ভীতির কারণ: মেহেবুবা

কিছু ধর্মান্ধের জন্য রঙের উৎসব মুসলমানদের ভীতির কারণ: মেহেবুবা

আছিয়ার ধর্ষকদের অতিদ্রুত বিচার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে টাঙ্গাইলে মশাল মিছিল

আছিয়ার ধর্ষকদের অতিদ্রুত বিচার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে টাঙ্গাইলে মশাল মিছিল