সেন্টমার্টিনে পর্যটক জাহাজ চলাচলে বাধা-নিষেধ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
সেন্টমার্টিনের (নারিকেল জিঞ্জিরা) দ্বীপে পর্যটক জাহাজ চলাচলে বাধা-নিষেধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, বিদেশীদের কাছে দ্বীপ বিক্রির কূটকৌশলের অংশ বলে দাবি করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর মালিবাগ মোড় ফালইয়াফরাহু চত্বরে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজিত বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে সংগঠনটির সদস্যরা এমনটি দাবি করেন।
সমাবেশে সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য মুহম্মদ সাদমান বলেন, বর্তমানে টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপগামী পর্যটক জাহাজ যাতায়াতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এতে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল দ্বীপটির ১০-১২ হাজার লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। মূলতঃ এই শীতকালীন সময়টাই নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপে পর্যটক যাওয়ার সময়কাল। অন্য সময় সাগর উত্তাল থাকায় পর্যটকবাহী জাহাজ সেখানে যেতে পারে না। কিন্তু এই ভরা মৌসুমেই যদি পর্যটক যাওয়া বাধাগ্রস্ত করা হয়, তবে সারা বছর দ্বীপবাসী খাবে কী? তাদেরকে তো না খেয়ে থাকতে হবে।
সচেতন নাগরিক সমাজের আরেক সদস্য মুহম্মদ মারুফ আবীর বলেন, ইসরাইলি দখলদাররা যেমন খাদ্য-পানি আটকে ফিলিস্তিনকে জনশূন্য করতে চায়, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের নারিকেল দ্বীপের জনগণের রূটি-রুজি আটকে দ্বীপটি জনশূণ্য করার পায়তারা চলছে, যা দ্বীপটি বিদেশীদের কাছে বিক্রির কূটকৌশলের অংশবিশেষ। অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে অবরোধ তৈরী করে নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপকে আরেকটি ফিলিস্তিন বানাতে চায়।
সচেতন নাগরিক সমাজের মুহম্মদ ফাইয়াজ বলেন, ভূ-রাজনৈতিক কারণে নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপের দিকে বহু আগে থেকেই বিদেশী শকুনীদের দৃষ্টি রয়েছে। নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপের জনগণকে কর্মহীন করে দ্বীপ ত্যাগে বাধ্য করতে পারলে, তারা সহজেই দ্বীপটি বিদেশীদের কাছে বিক্রি করতে পারবে। এই ষড়যন্ত্র কখনই বাস্তবায়ন হতে দেয়া যাবে না। কোন মতেই পর্যটক যাতায়াত বাধাগ্রস্ত করে দ্বীপের জনগণকে কর্মহীন করা যাবে না।
সংগঠনের সদস্য সালমান বলেন, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ বাংলাদেশের অংশ। একজন বাংলাদেশী নাগরিক যেভাবে সারা দেশ যেকোন সময় ভ্রমণ করতে পারেন, ঠিক তেমনি নারিকেল দ্বীপও ভ্রমণ করতে দিতে হবে। বাংলাদেশের দুই এলাকার জন্য দুই আইন থাকতে পারে না। তাই নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
সচেতন নাগরিক সমাজের আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক কাজী আহমদ বলেন, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপে যেতে সরকারি বাধা জাতিসংঘের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র-১৯৪৮ এর চরম লঙ্ঘন। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ধারা ৯ মতে, কাউকেই খেয়াল খুশী মত গ্রেপ্তার বা অন্তরীণ করা কিংবা নির্বাসন দেওয়া যাবে না। ধারা ১৩ তে বলা হয়েছে, নিজ রাষ্ট্রের চৌহদ্দির মধ্যে স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং বসবাস করার অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে। কাজেই, নারিকেল দ্বীপে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের বাঁধা জাতিসংঘ গৃহীত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২, ৩, ৯ ও ১৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণের অজুহাতে যদি নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ খালি করতে হয়, তবে রাজধানীর ব্যস্ততম শহর ঢাকাকে আরো আগে খালি করা উচিত। কারণ রাজধানী ঢাকা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ দূষিত শহর।
তিনি আরো বলেন, পরিবেশবাদের নাম দিয়ে যারা দেশের মানুষকে কর্মহীন করতে চায়, দেশের অর্থনৈতিককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, তারা বিদেশীদের দালাল। এদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং এদের সংগঠনসমূহকে (যেমন বেলা, পবা ইত্যাদিকে) নিষিদ্ধ করতে হবে। এদেরকে কোনো মতেই ছাড় দেয়া যাবেনা। এদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশবিরুদ্ধে এসব সংগঠনের হোতা পরিবেশ উপদেষ্টাকেও বহিষ্কার করতে হবে, গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এই ধরণের জনস্বার্থ বিরোধী কাজের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। যদি অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষা না করে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে কাজ করে তাহলে উড়ে এস জুড়ে বসা এই অন্তর্বর্তী সরকারকেও বহিস্কার করতে হবে। এদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তাগণ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার জন্য। কিন্তু কোন আইন প্রণয়নের অধিকার দেয়া হয়নি এবং আইন প্রণয়নের কোন অধিকারও তার নেই। কিন্তু তারপরও তারা একের পর এক দেশ ও জনবিরোধী আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও সংশোধন করে যাচ্ছে, যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই। কিছুতেই জনগণের স্বাধীনভাবে ভ্রমণের অধিকার হরণ করা যাবেনা এবং জনস্বার্থ বিরোধী কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবেনা।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেরপুরে ডিসি লেকে ফের চালু হলো প্যাডেল বোট
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সাংবাদিক ডালিমের লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধান বিচারপতি
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীনদের আন্দোলন : সারজিসের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার
৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দনিয়া কলেজ ছাত্রদলের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন সেনাপ্রধান
কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে প্রতিশ্রুত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
তারকাখচিত বরিশালকে উড়িয়ে রংপুরের তিনে তিন
নতুন ছয় লাখ টিসিবি কার্ড বিতরণ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
সিংগাইরে শীতার্তদের মাঝে ইউএনও’র কম্বল বিতরণ
বিস্ফোরক মামলায় নিক্সন চৌধুরীর অন্যতম সহযোগী জব্বার মাস্টার গ্রেপ্তার
২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেল রিজার্ভ
সাবেক এমপি কবির উদ্দিন আহমেদ আর নেই
রেকর্ড ৫,৬৩৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা সোনালী ব্যাংকের
১৪৮ চিকিৎসককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বদলি
৭ উইকেট ছেলেকে দিলেন তাসকিন
প্রধান উপদেষ্টার রাজবাড়ী সফর স্থগিত
ভিসা সত্যায়নের বেড়াজালে বিপুল সংখ্যক সউদীগামী কর্মী বায়রা নেতৃবৃন্দের সাথে বিএমইটির ডিজি
মোবাইলের ব্যাককভারে প্রিন্ট করা ছবি লাগানো প্রসঙ্গে
প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন জনপ্রিয় গায়ক আরমান মালিক
সরকারি দপ্তরে তদবির বন্ধে সচিবদের উদ্দেশে পত্র দিয়ে তথ্য উপদেষ্টার অনন্য দৃষ্টান্ত