ঢাকা   শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৬ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচন যত দ্রুত হবে, জনগণের কাছে তত গ্রহনযোগ্য হবে- মির্জা ফখরুল

Daily Inqilab যশোর ব্যুরো

২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচন যত দ্রুত হবে, জনগণের কাছে তত গ্রহনযোগ্য হবে। নির্বাচনের জন্য যে সব সংস্কার দরকার তা দ্রুত করতে হবে। কেন না নির্বাচিত সরকারই পারে দেশের স্থিতিশীলতা। এককভাবে সরকার গঠন নয়, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে তাদের সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবে বিএনপি। বর্তমান সরকার তো বিপ্লবী সরকার না, সাংবিধানিক সরকার, আপিল বিভাগ থেকে অনুমোদিত হয়েছে’। শুক্রবার রাতে জিলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা বিএনপির আয়োজিত ফ্যাসবাদ বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন : আজকের প্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

আওয়ামী লীগের ভয়ে এতদিন কেউ কথা বলতে পারেনি মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেছেন, এখন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামছে মানুষ। তাদেরকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। তরুণদের বাদ দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, শেষ লাথিটা গোলপোস্টে ছাত্ররাই করেছে। শেষ গোলটা তারাই দিয়েছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সামনে বড় ক্রান্তিকাল। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ফ্যাসিস্টকে বিদায় দিয়েছি। আমাদেরকে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমাদেরকে সঠিকভাবে রূপান্তর ঘটাতে হবে। যে রূপান্তরের মধ্যদিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, চেতনাকে ফিরে এনে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক, মানবিক মূল্যবোধ, কল্যাণকর দেশ গড়তে পারি। এটাই আমাদের সামনে এটাই লক্ষ্য।

 

ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্ররা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছে। তারা বলছে সংবিধানও সংস্কার করতে হবে। সংবিধান পরিবর্তন কিভাবে করবেন ? একটা সংস্কার কমিটি দিয়েই সংবিধান সংস্কার হবে না। ওটা করতে গেলে সাংবিধানিক কিংবা সংসদের প্রতিনিধি লাগবে। সেটার জন্য ধৈর্র্য্য ধরতে হবে। একই সঙ্গে সবচেয়ে প্রধান যে জিনিসটা দরকার, সেটি হলো নির্বাচন। একদিকে যেমন পরিবর্তনের জন্য জীবন দিয়েছে, তেমনি নির্বাচনের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। একি সাথে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। হঠাৎ করেই কোন কিছু পরিবর্তন করে ফেললে হবে না। সেটা কতটা টেকসই সেই চিন্তাও করতে হবে। তার জন্য গণতান্ত্রিক পথে যেতে হবে। তারা যদি বলত বিপ্লবী সরকার গঠন করেছি, তাহলে বিপ্লবী সরকার করত। আমাদের কিছু বলার ছিল না। এটা (অন্তর্বতীকালীন সরকার) বিপ্লীব সরকার নয়, সাংবিধানিক সরকার। আপিল বিভাগ থেকে এই সরকারের বৈধতা নেয়া হয়েছে। ওটাকে ধরে রেখেই আমাদের এগোতে হবে।

 

বিগত দেড় দশকে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম, হামলা, মামলার কথা তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের গোলটা দিয়েছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। এটা অস্বীকার করা যাবে না। এজন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

 

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা যাবে না। একাত্তরকে ধারণ করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতান্ত্রিক, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে দিয়ে আমরা এই ভূ-খণ্ড পেয়েছি। যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। ত্রিশ লক্ষ শহিদ, দুই লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম দিয়েছে। সেই গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ ধংস করেছে। অনেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে বলছে। আমরা এটাকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে পারি না। একই সাথে ৭ই নভেম্বরকে আমরা ভুলতে পারি না।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, মানবাধিকার সংগঠক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, ক্রীড়া সংগঠক চিন্ময় সাহা , যশোর আদালতের জিপি শেখ আবদুল মোহায়মেন, কওমী মাদরাসা খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি শ্যামল দাস, চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধি ডা. রবিউল ইসলাম যশোর জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদত হোসেন খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সাবেরুল হক সাবু। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, সাবিরা নাজনীন মুন্নী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মনিরুল হুদা প্রমুখ।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

এবার রিপাবলিক বাংলাকে তুড়িতেই উড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশের নরেন্দ্রনাথ

এবার রিপাবলিক বাংলাকে তুড়িতেই উড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশের নরেন্দ্রনাথ

কার্টারকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে একসঙ্গে পাঁচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট

কার্টারকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে একসঙ্গে পাঁচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট

দেশের সেরা ব্র্যান্ড ওয়ালটনের এসি রপ্তানি হচ্ছে ক্যামেরুনে

দেশের সেরা ব্র্যান্ড ওয়ালটনের এসি রপ্তানি হচ্ছে ক্যামেরুনে

রূপপুর প্রকল্পের ভবন থেকে আরো এক রুশ নাগরিকের লাশ উদ্ধার

রূপপুর প্রকল্পের ভবন থেকে আরো এক রুশ নাগরিকের লাশ উদ্ধার

লন্ডনে যাওয়ার সময় চিত্রনায়িকা নিপুণ আটক

লন্ডনে যাওয়ার সময় চিত্রনায়িকা নিপুণ আটক

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে আটক করবে না পোল্যান্ড !

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে আটক করবে না পোল্যান্ড !

মুঠোফোন গ্রাহকদের ওপর বাড়তি করের বোঝা না চাপানোর আহ্বান

মুঠোফোন গ্রাহকদের ওপর বাড়তি করের বোঝা না চাপানোর আহ্বান

শ্রীলঙ্কায় ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের অভিযোগে বৌদ্ধ ভিক্ষু গনানসারার কারাদণ্ড

শ্রীলঙ্কায় ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের অভিযোগে বৌদ্ধ ভিক্ষু গনানসারার কারাদণ্ড

ট্রাম্পের ঘুষের মামলায় সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ

ট্রাম্পের ঘুষের মামলায় সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ

সৎ ভাইকে ফাঁসাতে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে হত্যায় অভিযুক্ত বাবার আত্মসমর্পণ

সৎ ভাইকে ফাঁসাতে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে হত্যায় অভিযুক্ত বাবার আত্মসমর্পণ

৭ ডিগ্রীতে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা,বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

৭ ডিগ্রীতে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা,বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি

শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি

সীমান্তে বাংলাদেশি নিহত : পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে বিজিবির কড়া প্রতিবাদ

সীমান্তে বাংলাদেশি নিহত : পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে বিজিবির কড়া প্রতিবাদ

নিকোলাস মাদুরোর তৃতীয় শপথ, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের আশঙ্কা

নিকোলাস মাদুরোর তৃতীয় শপথ, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের আশঙ্কা

সুপার কাপ ফাইনালে বার্সা-রিয়াল মহারণ

সুপার কাপ ফাইনালে বার্সা-রিয়াল মহারণ

কার সাথে সংসার করছেন জয়া?

কার সাথে সংসার করছেন জয়া?

২৪ বিপ্লবের শহীদদের মতো বিডিআরের নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে

২৪ বিপ্লবের শহীদদের মতো বিডিআরের নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে

টানা চার ম্যাচে রোনালদোর গোল,নতুন বছর জয় দিয়ে শুরু নাসেরের

টানা চার ম্যাচে রোনালদোর গোল,নতুন বছর জয় দিয়ে শুরু নাসেরের

শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দেওয়া সম্ভব নয় : উপদেষ্টা মাহফুজ

শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দেওয়া সম্ভব নয় : উপদেষ্টা মাহফুজ

টঙ্গীবাড়ীতে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে জখম

টঙ্গীবাড়ীতে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে জখম