গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়
২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ পিএম | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম
গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর দেশের বৃহত্তর বিরোধীদল বিএনপি দলকে সুসংগঠিত করাসহ জনসাধারনের সাথে সম্পৃক্ততার বাড়ানোর জন্য কাজ শুরু করেছে।
প্রায় ১৭ বছর পর বিএনপি সম্প্রতি জেলার বিভিন্নস্থানে সংগঠনের কার্যালয় বসিয়ে হররোজ জনগনের সাথে সামাজিক আচার অনুষ্ঠান শূরু করেছে।কিন্তু দলের মধ্যে মতানৈক্য সৃস্টি হওয়ায় ব্যক্তিগত অফিস খুলে বসেছে কেউ কেউ ।তার ধারাবাহিকতায় গোপালগঞ্জ শহরে ১ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দুইটি ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা বিএনপির কার্যালয় দাবি করা হচ্ছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। দুইটি কার্যালয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন বহিষ্কৃত ও পদত্যাগকারী জেলা বিএনপির সাবেক দুই সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু ও সিরাজুল ইসলাম সিরাজ । অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে অফিস দুইটিতে তাদের বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সরব।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলা বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বর্তমান জেলা বিএনপিসহ সহযোগী কোনো সংগঠন ওই দুই নেতার রাজনীতি সমর্থন করে না। আর জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্ববায়ক বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসিত করতেই বিএনপির ব্যানার ব্যবহার করে তারা ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা কার্যালয় দাবি করছে। দৈনিক ইনকিলাবের অনুসন্ধানে ও বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের লঞ্চঘাট এলাকায় জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু তার তিনতলা বিশিষ্ট ব্যক্তিগত অফিস কে জেলা কার্যালয় দাবি করে উদ্বোধন করেন।
মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যেই চলতি মাসে শহরের গেটপাড়া এলাকায় একটি টিনের ঘরে অপরএকটি জেলা কার্যালয় দাবি করে উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির পদত্যাগকারী সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। । এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে বিভ্রান্তি।
আর ১কিলোমিটার দূরত্ব ব্যবধানে দুইটি কার্যালয়ের মধ্যেই জেলা কার্যালয় কোনটি সেই প্রশ্ন সারাক্ষণ ঘুরপাক খাচ্ছে এখন জনমনে। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় ইমেজ নস্ট হচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা কার্যালয় হচ্ছে সেটি যেখানে সভাপতিসহ কমিটির সবাই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কিন্তু তারা দুজনই ৫ তারিখের পর গোপালগঞ্জ এসে অফিস দুটি খুলে বিএনপির জেলা কার্যালয় দাবি করছে। তাদের এই দাবি আমরা সমর্থন করি না এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কিছুদিনের মধ্যেই দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে আমাদের জেলা কার্যালয় উদ্বোধন হবে। সেটিই হবে জেলা কার্যালয়।
গোপালগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন সিকদার বলেন, ৫ আগস্টের আগে যেসব নেতাকর্মী রাজপথে ছিলাম তারা কেউই ওই দুই নেতার রাজনীতি সমর্থন করি না। তারা যে কার্যালয় খুলে বসেছেন, সেখানে আমরা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেউ যাই না। এককথায় বলা যায় তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই ব্যক্তিগত অফিস খুলে জেলা বিএনপির কার্যালয় দাবি করছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, ওই দুই নেতা বিগত সরকারের নানা সুবিধা নিয়েছে। তারা উভয়ই আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের সঙ্গে লুকিয়ে দেখা করতেন। গত কয়েক বছরে বিএনপির বিভাগীয় কোনো প্রোগ্রামে তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি জেলার কোনো প্রোগ্রামেও তাদের পাওয়া যায়নি। এখন তারা দলের সুবিধা নিতে রাজপথে নেমেছে। জেলা কার্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদন হয়ে আসে এবং সেখানে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলে আহ্ববায়ক কমিটি সেখান থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কিন্তু সেখানে বর্তমান আহবায়ক কমিটি বা জেলা বিএনপির সহযোগী কোনো সংগঠন যায় না। তাহলে কীভাবে ওই দুইটি ব্যক্তিগত অফিস জেলা কার্যালয় হয়? তারা তাদের ব্যক্তিগত অফিস খুলে যদি জেলা কার্যালয় দাবি করে, তাহলে সেটি জেলা বিএনপি ঘৃণ্যভাবে প্রত্যাখান করে। এবং তাদের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয় জানতে চাইলে জেলা বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, আমি বিগত দুইবারের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলাম। জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলাম। তবে বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটি আমার পছন্দ হয়নি, যার কারনে আমি ওই কমিটি নিয়ে অনাস্থা দিয়েছি। তবে পদত্যাগ করিনি। আর বিগত কয়েক বছরে মামলা হামলার জন্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারিনি। তবে আমার অফিসটাই জেলা কার্যালয়। কারণ আগামী দিনে আবারো আমি সভাপতি হবো। এটি দলের হাইকমান্ড থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তখন আর আমার অফিস নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না।
এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জেলা বিএনপি বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জুকে কল করা হলে প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দেন । উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১৯ গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্ববায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় এ সেই থেকে গোপালগঞ্জ জেলার বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আহ্ববায়ক কমিটি দিয়েই চলছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
স্ত্রী পর্দা করতে না চাইলে করণীয় প্রসঙ্গে।
কক্সবাজার প্রেসক্লাবের নির্বাচন সম্পন্ন
ঘুষ ১০০ টাকা খেলেও চাকরি থাকবে না : নৌপরিবহন উপদেষ্টা
সংস্কার কমিশনের কাছে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন দুদক চেয়ারম্যান
মানিকগঞ্জে প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করলেন ইয়াছমিন খাতুন
ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতৃবিয়োগ বিভিন্ন মহলের শোক জ্ঞাপন
মির্জাপুরে নিখোঁজের পাঁচ মাস পরও খোঁজ মিলেনি
মোরেলগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ
জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে