ঢাকা   শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৬ পৌষ ১৪৩১

আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর বুকে আড়াআড়ি বাঁধ, দেশী মাছ নদ শূন্য হওয়ার উপক্রম

Daily Inqilab ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জাহিদ

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মধুমতি নদীতে বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে।
দেশী মাছ নদ শূন্য হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ছে।


উপজেলার বানা ইউনিয়ন দিঘলবানা গ্রামের খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশে আধা কিলোমিটার দুরে এ বাঁধ নির্মাণ করে মাছ শিকার করছে।

 

এতে মাছের চলাচলে বাঁধা ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে।অপরদিকে সাধারণ জেলেরা নদে মাছ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন ।

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মধুমতি নদীতে এখন পানি তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ মিটার।


নদীর এ পাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত বাঁশের বাঁধের মাঝ দিয়ে পাতা হয়েছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল,কাঁথা জাল। এরই একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বে জাল দিয়ে বিশেষ ধরনের ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এসব ফাঁদে মাছ এসে আটকে যায়। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার মাছ আহরণ করা হচ্ছে এ বাঁধ থেকে।

 

কয়েক বছর ধরে এভাবে মাছ শিকার করা হলেও প্রশাসনের থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী মোহম্মদপুর উপজেলার বাসিন্দা সজিবের নেতৃত্বে ১২ জন মিলে এ বাঁধটি দিয়েছেন। বাঁধটি দিতে প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রধানত বেলে(বাইল্যা মাছ) মাছ শিকার করার জন্য এ ধরনের বাঁধ দেওয়া হয়। বাঁধ দেওয়ার পর আর খুব একটা খরচ ও কষ্ট করতে হয় না। নৌকা নিয়ে বসে থেকেই মাছ পাওয়া যায়।

 

তারা আরো জানান, পাঙ্গাশ থেকে শুরু করে ইলিশ,বেলে মাছ , খসল্লা, পাবদা, আইড়, রিটা সব ধরনের মাছও পাওয়া যায়। মূল ফাঁদে একবার আটকে গেলে মাছ আর বের হতে পারে না। এভাবে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেওয়ার কারণে অন্য জেলেরা স্বাভাবিকভাবে মাছ ধরতে পারে না। এতে অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও গরিব জেলেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
পাশাপাশি মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে মিঠা পানির নদ।এই বিষয় কথা হয় আলফাডাঙ্গা

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে তিনি ইনকিলাব কে বলেন, জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। জলাশয়ে পানিপ্রবাহ ও মাছের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

বাঁধটির মালিক সজিব বলেন ইনকিলাব কে বলেন কয়েক মাস আগে বাঁধটি দেওয়া হয়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার ১২ জন মিলে বাঁধটি দিয়েছি, খরচ হয়েছে তিন-চার লাখ টাকা মতো৷ তিনি আর কথা না বাড়িয়ে বলেন, আপনি ঘাটে আসেন দেখে জান, ভাগি কয়জন বলা যাবে না।
সকল প্রশ্নের উত্তরও দেওয়া যাবে। আমি আল আমিনের বাড়ির পাশে থাকি সে দেখাশোনা করে।তবে বেলে মাছ বেশি শুধু ধরা পরে।


আল আমিন একটু দম্ভো নিয়ে বলেন, আপনি লেখালেখি করে আমার যা পারেন তাই কইরেন। এই বাঁধ পারলে কেটে দিয়েন।

 

তবে সালথা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অঃদাঃ) শাহ মো: শাহরিয়ার জামান সাবু ইনকিলাব কে বলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি।

 

তিনি ইনকিলাব কে বললেন, মোবাইলে বক্তব্য দেওয়া যাচ্ছে না, অফিসে আসবেন সাক্ষাত হবে। বাঁধ অপসারণের পদক্ষেপ নেবেন কি না উত্তর হা না জানতে চাইলে বারবার বলনে কোন কিছুই শোনা যাচ্ছে না।

 

আলফাডাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার ভূমি একেএম রায়হানুর রহমান ইনকিলাব কে বলেন, বলেন, নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা কোনো সুযোগ নেই। নদীতে বাধ আছে আমার জানা নেই।দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, আমি ১৭ নভেম্বর এ্যাসিল্যান্ড ও ১ ডিসেম্বর ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করি,অভিযোগ পাওয়ার পর সার ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা,টিটা বাওড়ে অবৈধ্য ভাবে কাঠা দিয়ে মাছ শিকার অপসারণ,সরকারি রাস্তায় জায়গা মুক্তকরা এবং যে কোন ধরনের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্হা গ্রহন করেছি।অভিযান চলমান থাকবে।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

স্বৈরাচারের সহযোগীদের রাজনৈতিক দলে ঢোকালে প্রতিরোধ করা হবে : ড. রিপন

স্বৈরাচারের সহযোগীদের রাজনৈতিক দলে ঢোকালে প্রতিরোধ করা হবে : ড. রিপন

দশ বছর পর ফের পুরষ্কৃত মালালা, ফিরছেন পাকিস্তান

দশ বছর পর ফের পুরষ্কৃত মালালা, ফিরছেন পাকিস্তান

ভারতে এক মাসে এক গ্রাহক পেলেন ২১০ কোটির বিদ্যু‍ৎ বিলের কপি

ভারতে এক মাসে এক গ্রাহক পেলেন ২১০ কোটির বিদ্যু‍ৎ বিলের কপি

সাতক্ষীরায় ইজিবাইকের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে কিশোরী নিহত

সাতক্ষীরায় ইজিবাইকের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে কিশোরী নিহত

সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই

সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, মৃদু শৈত্য প্রবাহের কবলে গোট জেলা

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, মৃদু শৈত্য প্রবাহের কবলে গোট জেলা

খলনায়ক এআই, একধাক্কায় বেকার হতে চলেছেন ২ লাখ কর্মী

খলনায়ক এআই, একধাক্কায় বেকার হতে চলেছেন ২ লাখ কর্মী

মক্কায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল গাড়ি, ৪ জনের মৃত্যু

মক্কায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল গাড়ি, ৪ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানে অস্ত্রের মুখে ১৭ সরকারি কর্মীকে অপহরণ

পাকিস্তানে অস্ত্রের মুখে ১৭ সরকারি কর্মীকে অপহরণ

যুক্তরাষ্ট্রে দাবানল নেভানোর কাজে এবার নামানো হলো কারাবন্দিদের

যুক্তরাষ্ট্রে দাবানল নেভানোর কাজে এবার নামানো হলো কারাবন্দিদের

পোল্যান্ড সীমান্তে বেলারুশের সেনা উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা

পোল্যান্ড সীমান্তে বেলারুশের সেনা উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশে ১৩ কিলোমিটার যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশে ১৩ কিলোমিটার যানজট

আগুনে পুড়ে ছাই হলিউড তারকাদের বাড়ি-ঘর

আগুনে পুড়ে ছাই হলিউড তারকাদের বাড়ি-ঘর

লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত, সতর্কবার্তা জারি

লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত, সতর্কবার্তা জারি

লাকসামে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা, মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত

লাকসামে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা, মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত

মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন

মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন

হলুদ রঙে সেজেছে ক্ষেত

হলুদ রঙে সেজেছে ক্ষেত

গোপালগঞ্জে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই স্কুল ছাত্র নিহত

গোপালগঞ্জে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই স্কুল ছাত্র নিহত

অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন সোহান

অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন সোহান

ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ায় সাংবাদিক ও আইনজীবী নির্যাতনের অভিযোগ

ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ায় সাংবাদিক ও আইনজীবী নির্যাতনের অভিযোগ