সাভারের আশুলিয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ভাড়াটিয়াদের ভয়ভিতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
এঘটনায় ভুক্তভোগী জমির মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। উল্টো প্রভাবশালীদের পক্ষ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অসহযোগিতারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আশুলিয়ার কাঠগড়ার এলাকায় সোনা ভানু নামে এক নারী ওয়ারিশ সুত্রে ও দলিল মুলে ১৯ শতাংশ জমির মালিক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ীঘর নির্মান করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে। গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর থকে স্থানীয় প্রভাবশালী শুকুম আলীর ছেলে আব্দুর রহমান নবী (৪৫), শামছু সরকারের ছেলে মামুন সরকার হিরু (৫৫), তাইজুদ্দিন সরকারের ছেলে শফিকুল ইসলাম সরকার (৫০), ইয়ন সরকার আমজাদের ছেলে শরিফ সরকার, রহমত আলী সরকারের ছেলে ইব্রাহিম সরকার (৬০), শংকুর ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু (৪৫), ছাবেদ আলীর ছেলে জনাব আলী, বাবর আলী সরকারের ছেলে ইয়ন সরকার (৫০), আমজাদ (৬০) ও রহমত আলীর ছেলে তাইজুদ্দিন সরকার তাজুসহ (৭০) অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিরা আমাদের সোনা ভানুর বাড়িটি জোরপূর্বক দখলের পায়তারা করে আসছে। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকালে উপরোক্ত ব্যক্তিসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন ব্যক্তি সোনভানুর বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর ও কয়েকটি কক্ষ ভাংচুর করে জমিটি দখলে নেয়। এর আগে বুধবার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ভয়ভিতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দিয়ে ঘর খালি করা হয়।
ভুক্তভোগী সোনা ভানু বলেন, আমি পৈতৃক সুত্রে জমির মালিক হয়ে পরিচার নিয়ে এখানে থাকি। কিন্তু আব্দুর রহমান নবী, মামুন সরকার, শফিকুল সরকারসহ আরও লোকজন এসে আমার বাড়িটি দখল করার পায়তারা করছে। এরমধ্যে তারা কয়েকটি ঘরের ভাড়াটিয়াদের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে এবং লোকজন দিয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচির ভেঙ্গে দখল করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। উল্টো দখলকারীরা আমাদের হুমতি দিচ্ছে, আমরা আতঙ্কে আছি।
সোনা ভানুর ছেলে জুবায়ের আহমেদ বলেন, আমার নানার সম্পত্তি ওয়ারিস সুত্রে আমার মা মালিক হয়ে বসবাস করছে।
এর মধ্যে একটি চক্র জালজালিয়াতি করে জমিটি দখলের পায়তারা করায় আদালতে একটি সিআর মামলা চলমান রয়েছে। সেই মামলায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও বিবাদীরা সীমানা প্রাচির ও ৫টি কক্ষ ভাংচুর করে জোরপূর্বক বাড়ি দখল কর নিয়েছে। এঘটনায় আমাদের প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতির বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
বাড়ির ভাড়াটিয়া দিপা রানী বলেন, সকালে অনেক লোকজন এসে আমাদের রান্নাঘরসহ বাড়ির ৫টি ঘর ও বাউন্ডারি দেয়াল ভাংচুর করে। এসময় তারা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয় এবং বাসা ছেড়ে যেতে বলেন। তারা মাটির চুলা ভেঙ্গে ফেলায় রান্না করতে না পেরে আমরা এখন না খেয়ে আছি। এছাড়া তারা আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিবে বলেও হুমকি দিয়েছে। ভাংচুর এবং দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান নবী বলেন, জমিটি আমরা ক্রয় সুত্রে মালিক কিন্তু যারা জমি বিক্রী করছে তারা আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছেনা। তাই আমরা জোরপূর্বক সেখানকার স্থাপনা ভেঙ্গে দখল করেছি। তবে জমির কাগজ দেখাতে বললে তিনি অস্বীকার করে বলেন কাগজ জায়গামতো দেখাবো।
বিষয়টি জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসাআই) সোহেল রানা বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে আমি দেয়াল ও ঘর ভাঙ্গা অবস্থায় পেয়েছি, তবে আমি কাউকে ভাংগতে দেছিনি। এছাড়া বিষয়টি ওসি স্যার জানেন। তিনি দুই পক্ষকে ডেকেছেন বিষয়টি মীমাংসার জন্য। আপনি একটু কথা বলেন।
এব্যাপারে জানতে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকের সরকারী নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।