সাভার ও আশুলিয়ায় খাঁটি খেজুরের রস খেতে দূর দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ
০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২১ এএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২১ এএম
গ্রাম বাংলার শীতের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে খেজুর রসের মাদকতা। শীতের কুয়াশামাখা সকালে গাছ থেকে নামানো টাটকা এক গ্লাস খেজুর রসের স্বাদ যিনি নিয়েছেন, তিনিই জানেন এর তুলনা অন্য কোনো পানীয়ের সঙ্গেই চলে না। দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে আসছে, সেই সঙ্গে কমছে ‘গাছি’ বা খেজুরের রস সংগ্রহ করার মানুষের সংখ্যা।
তবে রাজধানী ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়াতে কিন্তু খেজুর রস এখনও পাওয়া যায়। তাই অনেকে টাটকা রসের স্বাদ পেতে প্রচণ্ড শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোরবেলা খেজুর রস খাওয়ার জন্য সাভার ও আশুলিয়াতে প্রতিদিনই ভিড় করছে মানুষ।
শীতের শুরুতে চাষিরা খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করে থাকেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আশুলিয়ায় গাছিরা এসে শীতের শুরুতেই এই রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ এবং মাঘ এই চার মাস গাছিরা চরম ব্যস্ত সময় পার করেন।
খেজুরের রস খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এই রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া যেন একটি চমৎকার শিল্পকর্ম। রস খেতে এসে গাছিদের রস সংগ্রহ মনোযোগ দিয়েই উপভোগ করেন রস প্রেমীরা।
আজ সকালে সাভারের হেমায়েতপুরে ঢাকার বনানী থেকে খাঁটি খেজুরের রস খাওয়ার আশায় এসেছেন জলিল সাহেব।তিনি বলেন,ঢাকা শহরে খাঁটি খেজুরের রস না পাওয়ার কারণে তিনি প্রতি বছর হেমায়েতপুর আসেন খাঁটি রস খেতে। আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের দিয়াখালী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খেজুর রস প্রেমীদের ভিড়। গাছি আসার আগে খেজুরের রস প্রেমীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। গাছিরা রস প্রেমীদের সামনে রস সংগ্রহ করে তাদের পান করতে দেন। পোকামাকড় এবং পাখ পাখালির সংস্পর্শে যাতে এই রস না আসে সে কারণে চাষিরা রসের সংগ্রহস্থলে বাঁশের চাটাই ব্যবহার করেন।
খেজুরের রস পান করতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, আমি অনেক দূর থেকে রস খেতে আসছি এখানে। রসের মান অনেক ভালো। কোন ভেজাল মেশানো হয় না।
আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর থেকে রস পান করতে আসা আরেক ব্যক্তি বলেন, এই রস খুব ভালো। আমি নিশ্চিন্তপুর থেকে আসছি রস খাওয়ার জন্য। রস খেলাম খুব ভালো।
আগের দিন বিকালে ‘গাছি’ খেজুর গাছে উঠে কলসি বেঁধে আসে রস সংগ্রহের জন্য। সারারাত সেই কলসিতে রস জমা হয় এবং ভোরবেলা তা নামানো হয়। সাধারণত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এই রস কাঁচা বা গরম করে খাওয়া হয়। খেজুরের রসকে ফুটিয়েই খেজুরের গুড় বা পাটালি তৈরি করা হয়, যা খাদ্যরসিক বাঙালির পিঠে-পুলি-পায়েসের অন্যতম একটি উপাদান।
এদিকে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বাদুড়ের মুখের নিঃসৃত লালা এমনকি তাদের মলমূত্র খেজুরের রসের সঙ্গে মিশে যায়। এ রস কাঁচা খেয়ে নিপাহ ভাইরাস সরাসরি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত করে। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এখনই সংক্রমণ ঠেকানো না গেলে এ রোগ মহামারি রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
শ্রীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিরাপত্তা কর্মী নিহত
জকিগঞ্জে আসছেন পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় আলেম আল্লামা মুফতি আব্দুল মান্নান
কুয়েটে ৪ মাসে ৫২ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
বেনাপোলে বিজিবির চিরুনী অভিযান, মাদকসহ ৯ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ
রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্কে পরিবর্তন আনবে না সরকার
তারাকান্দায় শীত বস্ত্র বিতরণ ও সেনাবাহিনীর কার্যক্রম পরিদর্শন সেনাপ্রধানের
আশুলিয়ায় জুলাই ঘোষণাপত্র ও ৭ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ
কটিয়াদীতে মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে মাদকাসক্ত ব্যক্তির মৃত্যু
দাউদকান্দি-মতলব সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকা সত্বেও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রীরা
ওয়েস্টার্ন গ্রুপ এ্যামেচার গলফ চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধন
সিলেটকে ‘হ্যাটট্রিক’ উপহার দিয়ে বরিশালের টানা দ্বিতীয় জয়
এনসিসি ব্যাংক এর ১১তম বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠিত
শেরপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, ১১ ইটভাটাকে ৬৫ লাখ টাকা জরিমানা
ঈশ্বরদীতে যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ
হারা ম্যাচে শাস্তিও পেল পাকিস্তান
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের নতুন উপদেষ্টা আহসান উল্লাহ
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন বিএসএমএমইউ ভিসি
মুসাফির অবস্থায় সুন্নত পড়া প্রসঙ্গে?
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের একান্ত বৈঠক
শুধু সংখ্যায় নয়, গবেষণার গুণগত মান বাড়াতে হবে: বিএসএমএমইউ ভিসি