জবিতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় প্রতিবাদ

Daily Inqilab জবি সংবাদদাতা

০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৩ পিএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৩ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা, শিক্ষার্থী জিহানের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা।
 
 
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স ফ্যাকাল্টি থেকে শুরু হয়ে কলা ভবন ঘুরে এসে ভাস্কর্য চত্বরে এসে এ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় 'শিক্ষা ফ্যাসিজম, একসাথে চলে না' ; 'আমার ভাইকে মারল কেন, প্রশাসন জবাব চাই' ; 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' এসব স্লোগান দেন তারা।
 
 
সমাবেশে বখতিয়ার ইসলাম বলেন, আমাদের সহপাঠী  জিহানকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অত্যাচার করেছে। কিন্তু এবিষয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রশাসনের এই আচরণ ফ্যাসিস্টের আমলে ছাত্রলীগের হামলার বিচার না হওয়ার সমতুল্য। প্রশাসন থেকে যদি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা আরো জোরদার আন্দোলন করবো।
 
 
সিয়াম আন নুফাইস বলেন, ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিহানকে মারার ঘটনায় প্রশাসনকে জানানো হয়নি বলে মিথ্যাচার করা হয়েছে। যেখানে প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করা। প্রশাসন ভুলে গেছে এই শিক্ষার্থীদের রক্তের উপর দাঁড়ানো। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর রাজনৈতিক কর্মীদের দমন-পীড়নের দায়ভার এই প্রশাসনকে নিতে হবে। যদি তা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যেমন শিক্ষার্থীরা এই প্রশাসনকে চেয়ারে বসিয়েছে তেমন চেয়ার ছাড়তে বাধ্য করবে।
 
 
জুনায়েদ মাসুদ বলেন, জুলাইয়ে যারা আন্দোলন করেছে তারা এই কারণে করেনি যেন বিপ্লবোত্তর পরে চাঁদাবাজি, শোডাউন করবে, মামলা দিয়ে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিবে। আমি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে জিহানকে মারার প্রতিবাদ করতে গেলে সেখানে বিশৃংখলা করার চেষ্টা করা হয়। আমার দায়িত্ব যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় সেখানে আওয়াজ তোলা। কিন্তু আমার আওয়াজকে রুখে দেওয়া চেষ্টা করা হয়। এছাড়া আমাকে আমার সংগঠন নিয়ে ট্যাগিংও করা হয়। এখনও এই ট্যাগিংয়ের রাজনীতি কীভাবে ক্যাম্পাসে চলতে পারে? এই জবাব প্রশাসনকে দিতে হবে।
 
 
আসিকুর রহমান বলেন, আমার বড় পরিচয় আমি এই ক্যাম্পাসের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। কিন্তু একদল রাজনৈতিক কর্মীরা এটা ভুলে যায়। তারা ভুলে গেছে ৫ আগস্টের আগেও ছাত্রলীগের দ্বারা তারাও একইরকম হামলার শিকার হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দায় নিতে হবে এই প্রশাসনকে। অভিযোগ উঠার পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। শিক্ষার্থীরা তাদের বসিয়েছে। তারা যদি এই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
 
 
মাসুদ রানা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সংস্কারের কথা বললেও তা করা হয় নি। সাজিদ, আবু সাইদ মুগ্ধরা কারো তাবেদারী করার জন জন্য রক্ত দেয়নি। ক্যাম্পাস হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এই ক্যাম্পাসে অবাধে সুষ্ঠুভাবে সবাই ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ এই প্রশাসন। যদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারেন তাহলে যেভাবে দায়িত্বে এসেছেন, সেভাবেই চলে যেতে হবে। 
 
 
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে কেউ যদি ক্যাম্পাসে কারো গায়ে তোলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তা রুখে দেবো।  শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই দ্রুত এই ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দূর করে ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল করতে হবে। ষড়যন্ত্র ও তাবেদারীর বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। নিরাপদ ক্যাম্পাস আমাদের এক দিনের দাবি নয়। খুনি হাসিনার শাসনামলে ছাত্রলীগ তাড়িয়েছি  বুক উচিয়ে লড়াই করার জন্য। আগামীতে যদি পেশী শক্তি ব্যাবহার করে হামলা করে আমরা তার প্রতিবাদ করব।

বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সচিবালয়ের গেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-পুলিশের ফাঁকা গুলি
দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,
শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী
ঈশ্বরদীতে যুবদল কর্মী গুলিবিদ্ধ
আরও

আরও পড়ুন

সচিবালয়ের গেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-পুলিশের ফাঁকা গুলি

সচিবালয়ের গেটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া-পুলিশের ফাঁকা গুলি

ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদ মারি লা পেনের মৃত্যু

ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদ মারি লা পেনের মৃত্যু

দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,

দুদক কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া কর্মকর্তা রিমান্ডে, হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা সোহাগ রিমান্ডে,

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

কুরস্কে ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনের ৪৮৫ সেনা নিহত

কুরস্কে ২৪ ঘন্টায় ইউক্রেনের ৪৮৫ সেনা নিহত

পশ্চিম তীরে বন্দুক হামলায় ৩ ইসরাইলি নিহত

পশ্চিম তীরে বন্দুক হামলায় ৩ ইসরাইলি নিহত

ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী

ঢাবিতে হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ প্রদর্শনী

জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল

জুলাই গণহত্যা: হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

শিগগিরই চালের দাম কমে আসবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহযোগিতা দিচ্ছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি

ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে

ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি যুদ্ধ নাকি বন্ধুত্বের পক্ষে

মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ

মিথ্যা ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দেয়া আমাদের ইতিহাসের দায়বদ্ধতার অংশ

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে

এক-পঞ্চমাংশ এইচ-১বি ভিসাই ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে

গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র

গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প জুনিয়র

মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা

মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা

ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ

ভারতে চীনের পরিবর্তে বাড়ছে জাপানি বিনিয়োগ

পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত

পশ্চিম তীরে ৩ ইসরাইলি নিহত

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের

অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল

অস্ট্রিয়ায় সরকার গঠন করছেন অতি ডানপন্থি নেতা কিকল