মীরসরাইয়ে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে জাবেদ নামে একজন নিহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন লিটনের বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে মাঈন উদ্দিন লিটন বলেন, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মীরসরাই উপজেলাতে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আমরা বারইয়ারহাট ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বুধবার সকালে বারইয়ারহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে যাওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা আমার বাড়িতে একত্র হন। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাকে ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন কমিশনার এবং মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী ও বারইয়ারহাট যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন বাবলু মিয়াজীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজি, মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজামের নির্দেশে সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িতে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, হামলার সময় নিজেদের আত্মরক্ষার্থে আমরা রাস্তার পাশে থাকা লাঠিসোটা নিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা চালাই কিন্তু অস্ত্রের মুখে আমরা দাড়াতে পারি নাই। আমরা পিছু হটলেও আমাদের সাথে থাকা নেতাকর্মীদের উপর তারা সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় আমাদের ৩০ নেতাকর্মী গুরুতর আহত এবং একজন নিহত হয়।
তিনি আরও বলেন, ওইদিন হামলায় আমাদের বিএনপি কর্মী মো. মাসুদের বন্ধু মো. জাবেদ নিহত হয়। সে চট্টগ্রাম শহরের বায়োজিদ নীলগিরি আবাসিক এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে। জাবেদ ব্যবসায়ীক কাজে মাসুদের বাড়িতে এসেছিলেন। বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর মাসুদের সাথে জাবেদ আমার বাড়িতে ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। গত ২৬ মার্চ মীরসরাই উপজেলায় ১৪৪ ধারা থাকার কারণে আমরা বারইয়ারহাটে ফুল দিবো জেনে মাসুদের সাথে নিহত জাবেদ আমার বাড়িতে আসেন। সন্ত্রাসী হামলার একপর্যায়ে কোন কিছু বুঝে উঠার আগে শতাধিক সন্ত্রাসী ছুরি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এই হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি। হামলায় আমাদের নেতাকর্মী ছাড়াও ঢাকা থেকে আগত ফটো সাংবাদিক মো. সাদমান, জয়, রাসেল, রাদিন মারাত্মকভাবে আহত হন। তাদের সাথে থাকা ক্যামরা ও ড্রোন লুট করে ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। আমি এসব ঘটনা জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলেও তারা তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর রাসেল, সাহাব উদ্দিন, নুর মো. মানিক, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন কমিশনার, মীরসরাই উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সরোয়ার হোসেন রুবেল, বারইয়ারহাট পৌরসভা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জিয়া উদ্দিন বাবলু, পৌরসভা বিএনপির সদস্য ইমাম উদ্দিন, যুবদল নেতা তারিফুল ইসলাম তারেক, সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুল হক সাদ্দাম, ধুম ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য সচিব মহিবুর রহমান চৌধুরী শাকিব।