ফ্যাসিবাদী শাসক বিদায় হয়েছে ঠিকই কিন্তু ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা আজও সর্বত্র বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে। সীতাকুণ্ডের কৃষক দল নেতা নাসির উদ্দিন হত্যা ধামাচাপা দিতে ওঠে পড়ে লেগেছে একটি চিহ্নিত মহল। আর তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই যেন কাজ করছেন সীতাকুণ্ডের ওসি মজিবুর রহমান। তিনি নাসির হত্যাকান্ডের পর তরিঘড়ি করে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে যুবদল ও সেচ্ছাসেবক দলের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছেন। এতে করে একদিকে নাসিরের প্রকৃত খুনিদের আড়াল করা হয়েছে অন্যদিকে নিরীহ বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করে দলের সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় সীতাকুণ্ড পৌরসদরে জাতীয়তাবাদী যুবদল ও সেচ্ছাসবক দল আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা।
সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাহাব উদ্দিন রাজুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. কমল কদর। উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন বাবর ও পৌরসভা যুবদলের সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক মোহাম্মদ মুরসালিন বলেন, সীতাকুণ্ডের ওসি এসি রুমে বসে হত্যা মামলার আসামী ধরছেন। একটি হত্যা মামলায় যেভাবে তদন্ত হওয়া দরকার নাসির হত্যা মামলায় তা করা হয়নি। মামলা দায়েরের কয়েক ঘন্টার মধ্যে যুবদল ও সেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের চায়ের দাওয়াত দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি এবং নাসির হত্যা মামলায় প্রকত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবি করছি।
নিহত নাসির উদ্দিনের স্ত্রী মোমেনা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী হত্যার ঘটনায় আমি যাকে সন্দেহ করেছি তার নাম মামলায় উল্লেখ করেছি। কিন্তু বাকিদের নাম কিভাবে মামলায় আসলো তা আমার জানা নেই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিন, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ইউসুফ নিজামী, সদস্য জহুরুল আলম জহুর, জয়নাল আবেদীন দুলাল, পৌর বিএনপির আহবায়ক জাকির হোসেন, সদস্য সচিব ছালে আহম্মদ, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাহের উদ্দিন আশরাফ, উত্তর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আওরঙ্গজেব মোস্তফা, ফজলুল করিম চৌধুরী।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আলাউদ্দিন মনি, উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কোরবান আলী সাহেদ, পৌর যুবদলের আহবায়ক অমলেন্দু কনক, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক ইসমাইল হোসেন, সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম বাবলু, ১ নং সৈয়দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী এনামুল বারী, সা. সম্পাদক এড. আইনুল কামাল, পৌর বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. সরোয়ার হোসাইন লাভলু, উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী এড. রওশন আরা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুন নাহার নেলী, পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী মাসুদা খায়ের প্রমুখ।
সমাবেশের পর কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর একটি মিছিল পৌরসদরের ডি.টি রোড প্রদক্ষিণ করে পৌরসভার সামনে গিয়ে শেষ হয়। প্রসঙ্গতঃ গত ২৬ মার্চ ইফতারের পর বাড়বকুণ্ডের নিজ বাড়ির সামনে গলা কেটে হত্যা করা হয় সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিনকে। হত্যাকান্ডের দুই দিন পর ৮ জনকে আসামী করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নাসিরের স্ত্রী মোমেনা বেগম। এর কয়েক ঘন্টার মধ্যে থানায় চায়ের দাওয়াত দিয়ে যুবদল ও সেচ্ছাসেবক দলের চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।