ভুরুঙ্গামারীতে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য, বাড়ছে বাল্যবিবাহ
১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে ক্রমেই বাড়ছে ভুয়া কাজিদের (নিকাহ রেজিস্ট্রার) দৌরাত্ম্য। এতে বাড়ছে বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক অপরাধ। অভিযোগ উঠেছে, এসব কাজি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে গ্রামীণ সহজ-সরল সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে ফেলছেন।
বিভিন্ন সূত্র মতে, এই ভুয়া কাজিরা সাধারণত জাল নথি ব্যবহার করে বিয়ে পড়ান। তারা সাধারণ মানুষের অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ বিয়ে, তালাকনামা এবং বিয়ের ভুয়া সনদ তৈরি করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে অনুমোদিত নিকাহ রেজিস্ট্রার থাকলেও এর বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার ভলিউম সংগ্রহ করে প্রায় ১৮ থেকে ২০ জন ব্যক্তি নিজেদের কাজি পরিচয় দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম পাথরডুবি ইউনিয়নের আবু হানিফ, সদর ইউনিয়নের আকবর আলী এবং তিলাই ইউনিয়নের আব্দুর রহিম। অভিযোগ রয়েছে, এসব ভুয়া কাজি বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানে গিয়ে কাবিন রেজিস্ট্রির নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের কোনো লাইসেন্স না থাকায় তারা নিজের ইচ্ছেমতো অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় তারা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করছেন না। ফলে অনেক দম্পতি পড়ছেন পারিবারিক ও আইনগত জটিলতায়।
এই তিন স্বঘোষিত কাজির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বিয়ের রেজিস্ট্রি করেন ঠিকই, তবে তা অবৈধ নয় বলে দাবি করেন। আবু হানিফ জানান, তিনি নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের মোশাররফ কাজির বই এনে নিকাহ রেজিস্ট্রি করে থাকেন। আব্দুর রহিম জানান, তিনি তিলাই ইউনিয়নের নিবন্ধিত কাজি আব্দুর রহিমের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। অপরদিকে, আকবর আলী স্বীকার করেন, তিনি সোনাহাট ইউনিয়নের নিবন্ধিত কাজি আব্দুল মান্নানের নিকাহ রেজিস্ট্রার বই নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কাজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তারা কেউই অবৈধভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সোনাহাট ইউনিয়নের নিবন্ধিত কাজি আব্দুল মান্নান স্বীকার করেছেন, তিনি আকবর আলীকে তার নিকাহ রেজিস্ট্রার বই দিয়েছেন। তবে এটি দেওয়া কি আইনত বৈধ কিনা, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে অনুমোদিত কাজি তছলিম উদ্দিন, ওসমান আলী ও আলা উদ্দিন জানান, এসব ভুয়া কাজিদের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবগত আছেন। মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবুও কোনোভাবেই কমছে না এসব ভুয়া কাজিদের দৌরাত্ম্য।
এ বিষয়ে কাজি সমিতির কুড়িগ্রাম জেলা সভাপতি নুরুজ্জামান বলেন, “আপনারা ভুয়া কাজিদের নাম পত্রিকায় প্রকাশ করুন, আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ আল হেলাল মাহমুদ বলেন, অভিযোগ পেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি জনসাধারণকে পরামর্শ দেন, অনুমোদিত কাজিদের তালিকা দেখে বিয়ে, তালাকসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুস জানান, “আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরের ‘ছানার পায়েস’র জিআই সনদ গ্রহণ

ঢাকাসহ যেসব অঞ্চলে বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে

কাশ্মীর হামলা: ভারতকে বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মারকো রুবিও

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে পর্তুগালে র্যালী, সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৩৫ কর্মঘন্টা করা সহ নানান দাবী

গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত, এক দিনে নিহত আরও ৩১ ফিলিস্তিনি

শেরপুরে অসুস্থ বন্য হাতির চিকিৎসা করলো বন বিভাগ!

দুঃশাসনের সময়ে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয় শ্রমিক শ্রেণি : অধ্যাপক ড. তামিজী

‘দেশের প্রচলিত আইনে শ্রমিকেরা পুঁজিপতিদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে’

শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় মজুরি কমিশন গঠনের দাবি জাগ্রত পার্টির

শেরপুরে ভারতীয় চিনি, মদ ও গাজাসহ গ্রেপ্তার ৫

জিয়াউর রহমান ছিলেন শ্রমিকদের প্রকৃত বন্ধু: নুরুজ্জামান লিটন

মুরাদনগর নোমান কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হলেন শরীফুল ইসলাম

বর্ণিল আয়োজনে পটুয়াখালীতে মহান মে দিবস পালিত

পটুয়াখালীতে জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত

চাকরি হারানো তিন সাংবাদিককে ধুয়ে দিলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকবে বিএনপি : ওয়াহাব আকন্দ

গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহত শ্রমিকদের স্মরণ ও আ‘লীগ নিষিদ্ধের দাবি করলো সিলেটে এনসিপি

টঙ্গীতে বজ্রপাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নতুন টেকনোলজির মাধ্যমে- ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান