চুক্তিতে থাকা সচিবদের ভ্রমণ রাজত্ব
১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম

বর্তমান অন্তর্বকালীন সরকারের আমলে ও ফ্যাসিষ্ট সরকারে আমলে নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক সচিবরা রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের অনুমোতি নিয়ে গত ১৬ দিন ছুটি ভোগ করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব। চুক্তির সচিবেরা বিধি-বিধান সব লংঘন করে প্রায়শই বিদেশ যাচ্ছেন ছুটি কাটাতে। তাদের কোনো অর্জিত ছুটি নাই, ফলে পূর্ণ বেতনে এক্স-বাংলাদেশ লিভ নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। অথচ আইন অমান্য করে সেই কাজটিই করছেন অবলীলায় দেশে বাহিরে ভ্রুমন করছেন। এ দিকে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নতুন দিক নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। ভ্রমণের ক্ষেত্রে সঙ্গী হিসেবে স্বামী বা স্ত্রীকে নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে ভ্রমণ করা যাবে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নেও। গত ২৩ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার স্বাক্ষর করা এসংক্রান্ত পরিপত্র জারি হয়। তবে বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিবকে এ নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো ঠিকাদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উপদেষ্টা বা সিনিয়র সচিব ও সচিবদের একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসেবে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন না। সরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা তাদের স্বামী/ স্ত্রী বা সন্তানদের সফরসঙ্গী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন না বলে পরিপত্রে উল্লেখ আছে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা পরিপত্রের অনুকরণে নির্দেশিত বিষয়গুলো অনুসরণের জন্য বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কার্যকারী সভাপতি সাবেক সচিব মো. আব্দুল খালেক ইনকিলাবকে বলেন, আমার জানা মতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কোনো সচিব এতো দিন ছুটি ভোগ করতে পারেন। দেশের ক্ল্যান্তিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব এতো দিন ছুটি ভোগ করতে পারে না। ফ্যাসিষ্ট সরকারে আমলে নিয়োগ পাওয়া সচিব ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সচিবদের আদেশ বাতিল করতে হবে। প্রশাসনে অনেক যোগ্য কর্মকর্তা আছে তাদের নিয়োগ দিতে হবে। তাদের বিষয় সরকার ধেকতে পারে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরশাসক হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাবার পরে প্রধান উপদেষ্টা ক্ষমতায় বসে তার শাসন পরিচালনার জন্য ১৯৮২ ব্যাচের কয়েজন রিটায়ার অফিসারকে (১০/১২ বছর আগের রিটায়ার্ড) চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সচিবের পদে বসালেন, যাদের কোনো সচিব পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল না। এরা হলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব শেখ আবদুর রশিদ,সড়ক সচিব এহসানুল হকসহ বেশ কয়েকজন। এরা সবাই যুগ্মসচিব বা অতিরিক্ত সচিব হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত, কিন্তু তাদেরকে সরাসরি চুক্তি দেয়া হয়েছে ২/৩ টায়ার ওপরে- সিনিয়র সচিব পদে। এর পরে তারা আবার তাদের ১০-১২ জন বন্ধুবান্ধবকে সিনিয়র সচিব সহ অন্যান্য উর্ধতন পদে চুক্তিতে বসানো হয়। চুক্তিভিত্তিক সচিব বাহাদুরদের দিয়ে বর্তমান সরকার তার শাসন পরিচালনা করছেন। কিন্তু এই চুক্তিভিত্তিকরা প্রায়শই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের এর আদেশ অমান্য বা চ্যালেঞ্জ করছেন, যার জন্য তিনি কিছুই করতে পারছেন না, কেবল চেয়ে চেয়ে দেখছেন!
চুক্তির সচিবেরা বিধি-বিধান সব লংঘন করে প্রায়শই বিদেশ যাচ্ছেন ছুটি কাটাতে। উনাদের কোনো অর্জিত ছুটি নাই, ফলে পূর্ণ বেতনে এক্স-বাংলাদেশ লিভ নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। অথচ আইন অমান্য করে সেই কাজটিই করছেন অবলীলায়, যেন কেউ কিছু দেখার নেই। দেশে ১৬ দিন যাবৎ দেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব নাই। তিনি অবৈধভাবে ছুটি নিয়ে কানাডায় পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতেছেন, যা এখনও শেষ হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা উনাকে পূর্ণবেতনে এই অবৈধ ছুটি দিলেন কিভাবে? তার এই ১৬ দিনের ছুটি কোন হিসাব থেকে কাটা যাবে? হিসাবমত তার এইমাসের পুরো বেতনই কাটার কথা। এটা হল আইন। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একই ব্যাচের চুক্তির সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমান পর্তুগালে দু’সপ্তাহের বহিঃবাংলাদেশ ছুটি কাটিয়ে এলেন। চুক্তির সচিবরা আরেকটি অন্যায় কাজ করছেন, তাহলো, ওনারা চুক্তি নিয়েই হঠাৎ রেগুলার সচিব বনে যাচ্ছেন। ওনারা এক মিনিস্ট্রি থেকে অন্য মিনিস্ট্রিতে বদলী হচ্ছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। কাউকে রেল সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হলো, পরে তাঁকে বদলী করা হলো স্বাস্থ্েয। এটা অবৈধ আদেশ। ওনাকে যে পদে চুক্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে, অন্যত্র দিতে হলে আগের চুক্তি বাতিল করে নতুন চুক্তি দিতে হবে। নইলে যত সই সাক্ষর করবে সব অবৈধ হবে। ৮২ ব্যাচ ভুলভাল বুঝিয়ে দেশ চালাচ্ছেন, রাষ্ট্র্রের কোষাগার খালি করছেন- অন্যায় কালচার চালু করছেন। দেশে একজন বিশাল জ্ঞানী আইন উপদেষ্টা আছেন, চুক্তির সচিবদের এসব অন্যায় কার্যক্রম কি ওনারা তিনি দেখতে পান না? নাকি একজনের অন্যায়কে অপরজন ক্লিনচিট দিচ্ছেন? এত অন্যায় ভালো না। একটা শেষ থাকা দরকার। সব কিছুর হিসাব-নিকাশ হবে কিন্তু একদিন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

‘দেশের প্রচলিত আইনে শ্রমিকেরা পুঁজিপতিদের ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে’

শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় মজুরি কমিশন গঠনের দাবি জাগ্রত পার্টির

শেরপুরে ভারতীয় চিনি, মদ ও গাজাসহ গ্রেপ্তার ৫

জিয়াউর রহমান ছিলেন শ্রমিকদের প্রকৃত বন্ধু: নুরুজ্জামান লিটন

মুরাদনগর নোমান কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হলেন শরীফুল ইসলাম

বর্ণিল আয়োজনে পটুয়াখালীতে মহান মে দিবস পালিত

পটুয়াখালীতে জেলা শ্রমিক দলের আয়োজনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত

চাকরি হারানো তিন সাংবাদিককে ধুয়ে দিলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকবে বিএনপি : ওয়াহাব আকন্দ

গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহত শ্রমিকদের স্মরণ ও আ‘লীগ নিষিদ্ধের দাবি করলো সিলেটে এনসিপি

টঙ্গীতে বজ্রপাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নতুন টেকনোলজির মাধ্যমে- ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিসের নতুন কমিটি সভাপতি নাজমুল সম্পাদক আনিসুজ্জামান

মুজিবনগরে কৃষকের ৩০০ ড্রাগন গাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

“বিক্ষোভে নতি, রুয়া নির্বাচনে ফেরার আভাস: কালই গঠিত হচ্ছে নতুন অ্যাডহক কমিটি”

সিলেটে লাল পতাকা মিছিল করলো সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্ট

সীমান্তে আরাকান আর্মির কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট মানুষ

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু

এবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প

জনগণ নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে ক্ষমা করবে না: আমীর খসরু