বরিশালে ক্যান্সার হৃদরোগ ও কিডনি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ, কাজের অগ্রগতি বর্ধিত সময়ের ১ বছর পরেও মাত্র ৬৫ ভাগ
২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৯ এএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৮ এএম

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ক্যান্সার হৃদরোগ ও কিডনি হাসপাতালের ভবন নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের দু বছর পরেও শেষ হচ্ছে না। ২৪ মাসে কাজ শেষ করার লক্ষে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট চুক্তি সম্পাদনের প্রায় ৪৪ মাস পরেও ৬৫-৭০ ভাগের বেশী কাজ শেষ হয়নি। বর্ধিত সময়ানুযায়ী আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেধে দিয়েছিল পরিকল্পনা কমিশন। কিন্ত সেসময়েও ৭৫ ভাগের বেশী কাজ শেষকরা সম্ভব হবেনা বিধায় প্রকল্প মেয়াদ আরো একবছর বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে আবেদন করেছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
সময়মত তহবিলের সংস্থান না হওয়ায় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে মূল্য পরিশোধ করতে না পারার কারণেই কাজের গতি শ্লথ হয়ে গেছে। ফলে প্রকল্পটির জন্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সাথে ৯৪ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার চুক্তি সম্পাদন হলেও ইতোমধ্যে প্রকল্পব্যায় বৃদ্ধি করে প্রায় ১৩০ কোটিতে পৌঁছেছে। নতুন আর্জি অনুযায়ী প্রকল্পটির মেয়াদ জুন ২০২৬-এ নিয়ে গেলে প্রকল্পব্যায় আরো বৃদ্ধি:ও সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে।
ক্যান্সার, হ্রদরোগ ও কিডনির উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে দেশের সবগুলো বিভাগীয় সদরে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ ৮টি অনুরূপ হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিগত সরকার। সে আলোকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কম্পাসে একটি ১৭ তলা ভবন নির্মাণে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাথে ‘মেসার্স বঙ্গ বিল্ডার্স ও মেসার্স খান বিল্ডার্স-জেভি’ নামের একটি যৌথ অংশীদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিপত্র সম্পাদন করে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট। কিন্তু ২৪ মাসে কাজ শেষ করার চুক্তি হলেও কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করতে না পারার কারণেই কাজের অগ্রগতি শ্লথ হয়ে যাচ্ছে বলে দাবী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্ত অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল সহ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলীগন।
গত অর্থবছরের শেষদিন, ৩০ জুন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ছিল ৫০ ভাগেরও কম। তবে চলতি অর্থ বছরের গত প্রায় ৯মাসে আরো ২০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবী গণপূর্ত অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহলের। ৪৬০ শয্যার এ হাসপাতাল ভবনটির জন্য ইতোমধ্যে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৬৫কোটি টাকা পরিশোধ করার পরেও আরো প্রায় ১২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
একাধিক সূত্রের মতে, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজের গতি বারবারই শ্লথ হয়ে যাচ্ছে। তবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একটি সূত্রের মতে, গত প্রায় একবছর যাবতই প্রকল্পটি অনেকটা অনিশ্চয়তায় ছিল। দীর্ঘদিন প্রকল্প পরিচালকের পদটিও শূণ্যছিল। তহবিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে লেখা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তহবিল প্রাপ্তি সাপেক্ষে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করা হবে বলে জানা গেছে।
তবে ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন ১৭তলা বরিশাল ক্যান্সার,হ্রদরোগ ও কিডনি হাসপাতাল ভবনটির সবগুলো ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। ৭ম তলা পর্যন্ত ওয়াল টাইলস সংযোজনের কাজও প্রায় শেষ। ভবনটির বহিরাংশের দেয়ালেও টাইলস সংজোযন শুরু হয়েছে।
একাধিক প্রকৌশলীর মতে, ২০২৬-এর জুনের মধ্যে ভবনটির কাজ শেষ করতে হলেও,তহবিলের যোগান সহ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হবে। তবে দুটি বেজমেন্ট সহ ১৭তলা পর্যন্ত ছাদ ঢলাই সম্পন্নের পরেও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ১২ কোটি টাকার বেশী বকেয়া থাকায় অবশিষ্ট কাজে কিছুটা ধীরগতি বলে স্বীকার করছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। চলতি মাসের মধ্যেই তহবিলের সংস্থানের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও জানিয়েছে মহলটি।
এমনকি গতবছর ২৯ এপ্রিল প্রকল্পব্যায় বৃদ্ধি সহ বর্ধিত সময়সীমা সংক্রান্ত প্রস্তাবনা একনেক-এর অনুমোদন লাভ করলেও এ সংক্রান্ত প্রশাসনিক অনুমোদনে বিলম্বের কারণেও তহবিল সংস্থানে অনেক বিলম্ব ঘটে। ফলে সংশোধিত এবং বর্ধিত প্রকল্প ব্যয় ও সময়ে বরিশাল ক্যান্সার, কিডনি ও হ্রদরোগ হাসপাতাল ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি।
তবে ১শ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির মেয়াদ দুবছর বৃদ্ধির পরে প্রকল্পব্যায় ১২৮ কোটিতে উন্নীত হলেও তা আরো ১বছর বৃদ্ধির সাথে নতুনকরে ব্যয় বৃদ্ধির প্রয়োজন হতে পারে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি ।
এ ব্যাপারে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, তহবিলের সংস্থান হলে বর্ধিত সময়সূচী অনুযায়ী কাজ শেষ করা সম্ভব হত। তবে দীর্ঘদিন প্রকল্প পরিচালক না থাকা সহ তহবিল সংস্থানের অভাবে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন পিছিয়ে ব্যয় বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বরিশাল ক্যান্সার, কিডনি ও হ্রদরোগ হাসপাতাল ভবনটিতে দুটি বেজমেন্ট ছাড়াও ২য় তলা থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত ক্যান্সার ইউনিট, ৮ম তলা থেকে ১২ তলা পর্যন্ত কিডনি ইউনিট এবং ১৩ থেকে ১৭তলা পর্যন্ত হ্রদরোগ ইউনিট স্থাপনের কথা রয়েছে।
তবে ভবন নির্মাণ কাজ ধীরলয়ে এগিয়ে চললেও এখনো বিশাল এ হাসপাতালের জনবল মঞ্জুরি সহ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট সংগ্রহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ অধিদপ্তর খুব এগুতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্থানীয় দায়িত্বশীল মহলের তেমন কিছু জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে দেশের ‘৮টি বিভাগীয় সদরে নির্মাণাধীন ক্যান্সার, হ্রদরোগ ও কিডনি চিকিৎসা শীর্ষক প্রকল্প’এর প্রকল্প পরিচালকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ইবিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দিলো সহ-সমন্বয়করা

মানিকগঞ্জে আ.লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেনে গ্রেফতার

পেকুয়ায় একদিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত- ২০

ছয় গোলের রোমাঞ্চ শেষে বার্সা-ইন্টার

চেন্নাইয়কে বিদায় করে শীর্ষ দুইয়ে পাঞ্জাব

সেমিফাইনালে হেরে আল নাসেরের বিদায়

দুদকের মামলা : আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীর দন্ডাদেশ বাতিল

অন্তর্বর্তী সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে অর্থনীতি আরো সঙ্কটে পড়েছে : রিজভী

বাংলাদেশ-মিয়ানমার একমত হলে করিডোর চালু করতে পারে জাতিসংঘ

কলকাতায় হোটেলে আগুন নিহত ১৪

ইউক্রেন খুব শিগগিরই ‘ধ্বংস’ হবে: ট্রাম্প

টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়কে অবরোধ

প্রশ্ন : ঈদের বাজারে জীনদের বাজার করা প্রসঙ্গে।

ভ্যান চালক হত্যাচেষ্টা: অভিনেতা সিদ্দিকের ৭ দিনের রিমান্ডে

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ছাড়া রাখাইনে মানবিক করিডোর দেয়া থেকে বিরত থাকুন

প্রোটন বাজারে আনল দেশীয় অ্যাসেম্বল এক্স৭০ এসইউভি গাড়ি

হজযাত্রীদের জন্য বাংলাদেশি টাকায় রবির রোমিং প্যাকেজ

উত্তরপ্রদেশে মুসলিম ছাত্রের উপর অমানবিক অত্যাচার

দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: কাজী শিপন

ফেনীতে প্রধান উপদেষ্টার আবাসন পেল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবার