অন্ধত্ব রুখতে পারেনি আরশাদ আলীকে করেন সংসারের সব কাজ
২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম

আরশাদ আলীর দুই চোখই অন্ধ। ছোট বেলায় গুটি বসন্তে চোখের আলো হারান তিনি। সেই ৬ বছর বয়স থেকে থামাতে পারেনি তার জীবন যুদ্ধ। অন্ধত্ব রুখতে পারেনি আরশাদ আলীকে। জীবনযাপনে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও দৃষ্টিহীনতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
আর ১০ জন মানুষের মতোই নিত্যদিন স্বাভাবিক কাজকর্ম করেন অদম্য আরশাদ আলী। গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটা, পরিবারের জন্য বাজার সদাই কেনাকাটা, সংসারের খুঁটিনাটি কাজকর্ম ও ব্যক্তিগত কাজ স্বাভাবিকভাবেই করে যাচ্ছেন তিনি। দুই চোখে দেখতে না পারলেও অন্তরের আলো দিয়েই তিনি পথ চলেন প্রতিনিয়ত।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানি ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আরশাদ আলীর ছেলে। বৈবাহিক জীবনে আরশাদ আলী এক ছেলে ও এক মেয়ের পিতা।
আরশাদ আলী জানান, ১৯৭২ সালে তার বয়স যখন ছয় বছর তখন পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে গুটি বসন্ত। মহামারী রোগে গ্রামের অন্তত ১৮-২০ জন মারা যান। ওই বছরই গুটি বসন্তে আক্রান্ত হন তিনিও। সঠিক চিকিৎসার অভাবে গুটি বসন্তের প্রভাবে তার দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই অন্ধত্ব নিয়ে তার পথ চলা।
মা আইজান নেছা জানান, ছোটবেলায় চোখ হারানোর পরে আরশাদ আলী অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। প্রতিনিয়ত তিনি চোট পেতেন, হয়েছেন দুর্ঘটনার শিকার। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এক বিস্ময়কর মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে তার সন্তান। এখন নিজের ও সংসারের সকল কাজ নিজ হাতে করেন।
হলিধানী ইউনিয়নের মেম্বর সাদ আহম্মেদ জানান, প্রতিদিন সকালে গবাদি পশুর ঘাস নিজ হাতে কাটেন আরশাদ। ঘাস সংগ্রহ করতে তিনি চলে যান বাড়ি থেকে অনেক দুরের মাঠে। আবার কাজ শেষে একাই ফিরে আসেন। কাজ করতে গিয়ে তিনি কারো সহযোগিতা নেন না। সম্পূর্ণ অনুমানের উপরে নির্ভর করে তিনি পথ চলেন।
রামনগর গ্রামের সমাজকর্মী জহির রায়হান বলেন, তিনি পেশায় রংমিস্ত্রি। আরশাদ আলীর বাড়িতে কাজ করতে এসে তিনি তাকে দেখে আমি মুগ্ধ হন। একজন মানুষ দুই চোখ হারিয়েও কিভাবে নিজের কাজ নিজে করতে পারেন, এটা দেখে তিনি আবক হয়েছেন।
তিনি বলেন, আরশাদ আলীর কাছ থেকে সমাজেরে অনকে কিছু শেখার আছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা মানসিক শক্তির কাছে কিছুই না। দৃঢ় মনোবল ও অদম্য ইচ্ছার কারণে আরশাদ আলী নিজেই নিজের কাজ করতে শিখেছেন। তিনি চাইলেই অন্যের কাছে হাত পেতে জীবন চালাতে পারতেন, কিন্তুি আরশাদ তা করেননি।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আরশাদ আলী বলেন, চোখের আলো নেই তাতে কি ? আল্লাহ পাক তো আমার হাত, পা, মুখ সবিই দিয়েছেন। তিনি ইচ্ছা শক্তি দিয়ে সব কিছুই স্বাভাবিক ভাবে করতে পারেন বলে জানান।
জীবন নিয়ে কোন আফসোস আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আরশাদ বলেন, জীবন নিয়ে আমার কোন আফসোস নেই। তিনি মনে করি, ইচ্ছা শক্তি কাজে লাগিয়ে জীবন এগিয়ে নেয়া সম্ভব। শারীরিক অক্ষমতা একটা পরীক্ষা মাত্র। চাইলেই সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যায়।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া যা চায়, 'র' বাংলাদেশে সেটাই বাস্তবায়ন করতে চায় : সৈয়দ ফয়জুল করীম

ঈশ্বরগঞ্জে মগটুলা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ইউএনও'র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল বাউফল

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে মোরেলগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির নিন্দা

জকিগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এসএসসি ফলপ্রার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশকে ঘিরে কিশোরগঞ্জে যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

দেশ অত্যন্ত সংকটের মধ্যে রয়েছে, কখন কি হয়ে যায় সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে: ড. আসাদুজ্জামান রিপন

চা শ্রমিকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান উপযোগী মজুরি ঘোষণার দাবী জানালো বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন

কুবি শিক্ষক আনিছের বিরুদ্ধে ফের পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ

মানুষের স্বপ্ন ফিকে হতে দেবেন না: হেফাজত

শেরপুরে মেধা ও যোগ্যতায় কনস্টেবল পদে চাকুরি পেল ১৯ জন

জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখার আহ্বান শিবিরের

আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের স্ট্যাটাস ভাইরাল, কার নাম আছে?

গোপনে বিয়ে করা স্ত্রীকে জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার পর তাকে আবার ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে।

বিভাজনের উর্ধে উঠে দায়িত্বশীল ও সতর্ক আচরণ করতে হবে ঃ পীর সাহেব চরমোনাই

কাল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে

উখিয়ায় বনবিভাগের অভিযানে মাটি ভর্তি অবৈধ ট্রাক জব্ধ করে উদ্ধার

জটিলতা সৃষ্টি করে সরকারের মান-অভিমান গ্রহণযোগ্য না: আনু মুহাম্মদ

ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বিএনপি, তবে করলে বিকল্প বেছে নেবে জাতি : সালাহউদ্দিন আহমেদ

আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে