নিকলীর হাওরে ধান কাটার উৎসব
২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে, পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ি, দুইধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি। কবির কবিতার সে দৃশ্যপট এখন আর হাওরে কোথাও পানি নেই। এমন পানিহীন পরিবেশে চলছে কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল নিকলী উপজেলার বিশাল হাওরের এখন সোনালি ধানের মাঠে বৈশাখি ফসল ধান কাটার মহা উৎসবের আয়োজন।
পহেলা বৈশাখে হাওরগুলোতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। নিকলীর আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয় যাদের জমির ৮০% ধান পেকেছে, এসব জমির ফসল কেটে ফেলার জন্য, কারণ যেকোনো সময় ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। আবহাওয়া অফিসের এমন ঘোষণার ফলে মাঠে ব্যস্ত কৃষকেরা, ইতোমধ্যে প্রায় ৪০% জমির ধান কেটে ফেলেছে চাষিরা। হাওরে হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা চলছে।
বাইরে জেলার শ্রমিকরা হাওরে না আসায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে এবং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শ্রমিকের মজুরি। এ নিয়ে দিশেহারা কৃষক পরিবারের মানুষজন। কিছুসংখ্যক শ্রমিক আসলেও তাদের থাকার জায়গা নিয়ে পড়েছেন সমস্যায়। অন্যান্য বছর এসব লোকজন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজের বারান্দায় রাত্রিযাপন করতেন, কিন্তু এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কারণে তারা বেছে নিয়েছেন হাট-বাজার, কিংবা নিচ্ছেন ঘরভাড়া। মাঠে শ্রমিক মজুরি ৯০০ থেকে ৮০০ টাকা, তাও ধান কাটার লোক পাচ্ছেন না কৃষকেরা। শুষ্ক আবহাওয়া থাকায় মাঠে একরকম প্রতিযোগিতা — কে আগে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারে।
সরেজমিনে গেলে টেংগুরিয়া গ্রামের কৃষক মৃত আব্দুল ছোবানের ছেলে মুকশুধুর রহমান শান্তি এবং দামপাড়া কামালপুর গ্রামের মৃত সদর উদ্দিনের ছেলে কামরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কৃষি উপকরণের মূল্যে বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষি ফসল বোরো ধানে খরচ বেশি। ৩৫ শতাংশ জমিতে হালচাষে ডিলার ১২০০, বীজধান ৬০০, বীজতলা নির্মাণ ৮০০, সার ১২০০, কীটনাশক ৬০০, নিড়ানি ১২০০, পানিসেচ ২১০০, ধানকাটা ৪০০০, ধানমাড়াই ১০০০, শুকানো ও অন্যান্য ৫০০, জমি লিজ ৫০০০ — প্রান্তিক চাষিদের মোট খরচ হবে ১৮,১০০ টাকা। ৩৫ শতাংশ জমিতে ধান হবে প্রায় ১৮ মণ। বর্তমানে প্রতি মণ ধানের মূল্য ৯০০ টাকা, ১৮ মণ ধানের দাম হয় ১৬,২০০ টাকা।
এই বোরো ধানের ওপর এখানকার কৃষক পরিবার তাদের সারা বছরের সংসার খরচ, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল কিছুই নির্বাহ করে থাকে, বোরো ফসলের উপার্জিত অর্থ থেকে। আর এ অঞ্চলের ৯০% মানুষই কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। যারা ভুমিহীন পরিবার, তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক স্বপ্ন নিয়ে মাঠে ধান আবাদ করে থাকে। বৃষ্টি না হলেও হাওরে যেকোনো সময়ের তুলনায় বাম্পার ফসল হয়েছে মাঠে, যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তবে কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হবে। স্বার্থক হয়ে উঠবে কৃষকের শ্রম।
বোরো ফসলের মাঠ নিয়ে আজ (২০ এপ্রিল) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাখাওত হোসেন বলেন, আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪,৫০০ হেক্টর উঁচু এবং নিচু জমিতে বোরো ১৬ প্রজাতির ধান চাষ করা হয়েছে। ৩১৫০ জন কৃষকের মাঝে হাইব্রিড প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। নিকলীতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪,৩৮০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ১৪,৩৯০ হেক্টর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আমাদের ১০,৩২৬ মেট্রিক টন। হাওরে ৮১টি হারভেস্টার মেশিন হাওরে ধান কাটছে বলে জানান।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

বিরামপুর হাসপাতালে দুদকের অভিযান, পেয়েছে নানা অনিয়ম

বিএনপির তৃণমূলের কর্মীদের কাছে পরীক্ষা দেওয়া ছাড়া কেউ নেতা হওয়ার সুযোগ নাই: আবুল কালাম

ফেনীতে প্রধান উপদেষ্টার আবাসন পেল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবার

দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: কাজী শিপন

উত্তরপ্রদেশে মুসলিম ছাত্রের উপর অমানবিক অত্যাচার

হজযাত্রীদের জন্য বাংলাদেশি টাকায় রবির রোমিং প্যাকেজ

প্রোটন বাজারে আনল দেশীয় অ্যাসেম্বল এক্স৭০ এসইউভি গাড়ি

এন্টারপ্রাইজের জন্য ক্লাউড সল্যুশন নিয়ে এলো বাংলালিংক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়কার ২০০ কেজি ওজনের বোমা নিষ্ক্রিয় করলো সিটিটিসি

এসবিসি বিষয়ক গবেষণা রিপোজিটরি ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান ইউজিসি’র

প্রীতি ফুটবল খেলতে আসছে চীনের মেয়েরা

শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে মে দিবসের অঙ্গীকার: শিমুল বিশ্বাস

সিকদার গ্রুপের ২০৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

দলীয় প্রচেষ্টার ফসল এই জয়: শান্ত

৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশে, ইসলামী গণজাগরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে

নতুন এডহক কমিটি পেলো রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়

ছাত্রলীগ নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে

আজিজুলের অলরাউন্ডার নৈপুণ্যে এগিয়ে গেল যুবারা

জামিন পেলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব সালাহ উদ্দিন মিয়াজী

মানবিক করিডর ভবিষ্যতে সামরিক করিডরে পরিণত হতে পারে: সাইফুল হক