ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১

নীতি সহায়তা পেলে পাটপণ্য রপ্তানি পাঁচগুণ বাড়বে

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৬ জুলাই ২০২৩, ০৫:২৫ পিএম | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৫:২৫ পিএম

বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মা‌র্কিন ডলারের পাটপণ্য রপ্তানি করছে, যার বেশিরভাগ বস্তা ও ব্যাগের মতো গতানুগতিক পণ্য। তবে সঠিকভাবে পাটপণ্য বহুমুখীকরণ সম্ভব হলে রপ্তানি বেড়ে আগামীতে পাঁচগুণ হবে। যার জন্য সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেখ নাসির উদ্দিন।

স্মার্ট বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্মেলনে তিনি এসব কথা ব‌লেন। পাট খাতের সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে সারা দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

শনিবার (১৫ জুলাই) দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেখ নাসির উদ্দিন বলেন, এখন সারা পৃথিবীতে পাটের পণ্য পরিবেশসম্মত ও যুগোপযোগী। যার খড়ি, তন্তু এমনকি পাতা পর্যন্ত আমরা ব্যবহার করতে পারি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে কাপড়ের পরেই প্রায় ১ দশমিক ২ বিলয়ন ডলার রপ্তানি আয় হচ্ছে। আবার পাটের কিছু কাঁচামাল পুনরায় আমদানি হয়ে ফিনিশড পণ্য হিসেবে রপ্তানি হচ্ছে, যেগুলো হিসেবে নিলে আবার পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক হবে এ বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এখনো এ খাতকে এক বিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়নে নেওয়া যাবে। তবে এ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে এসে শুধু এ পাটকে ব্যাগ-বস্তার মতো মোড়কজাত উপকরণ হিসেবে রাখলে চলবে না। এটা কটনের সঙ্গে মিশিয়ে কোর্ট-জ্যাকেটের মতো পণ্য তৈরি করতে হবে।

আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বড় পাওয়া যে প্রধানমন্ত্রী এ পাট খাততে অত্যন্ত ভালোবাসেন। এজন্য আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) কাছে আমরা অর্থনৈতিক নয়, নীতি সহায়তা চাই। আপনার সেই দরদি দৃষ্টি চাই। যেভাবে আপনি আমাদের পাটকে অন্তর থেকে ভালোবাসেন। আমাদের পাট দিবস দিয়েছেন, যেভাবে আপনি পাটের শাড়ি-ব্যাগ ভালোবেসে বিশ্বময় পরিচিতি দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি আপনার ওই দৃষ্টি হলে আমরা অবশ্যই পারব।

তিনি বলেন, আমাদের বীজ একটি বড় সমস্যা। বীজ পেলে এখনো উৎপাদন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়বে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে যেখানে লবণাক্ত জায়গা পড়ে রয়েছে, সেখানে বীজ করতে পারি আমরা। সবমিলিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তাহলে যেভাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না; আমাদেরও কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।

পাট খাতের এ অন্যতম উদ্যোক্তা বলেন, এ পাট খাত ভালোই যাচ্ছিল। আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এ পাট দিয়ে বিএমডব্লিউ গাড়ির প্যানেল তৈরি হচ্ছিল। এখন বাংলাদেশের জুট ফাইবার (পাটের তন্তু) দিয়ে কোর্ট হচ্ছে, আমি সেটি বানিয়েছি। এর মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ কটন আছে। এই কোর্ট ইতালি ও ইউরোপে নিয়ে গিয়েছি, সবাই খুব প্রশংসা করছে। আমরা পর্দা বানিয়েছি। এগুলো খুব ভালো। প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে এসব খাতে।

তিনি বলেন, কিন্তু গত দুই বছর খারাপ যাচ্ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ জুটমিল এখন বন্ধ। এই বন্ধ হওয়ার কারণ পাটের সুতার উচ্চমূল্য। কারণ ২ হাজার টাকার সুতা এখন ছয় হাজার টাকা হয়েছে। এজন্য ইরান-তুর্কির মতো অনেক দেশের প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক সুতা ব্যবহার করছে।

সেখ নাসির উদ্দিন বলেন, এরপরও এ খাত অনেক সম্ভাবনাময়। আমরা চারটা মিল পরিচালনা করছি। নতুন করে গোপালগঞ্জ মোকসেদপুরে একটি জুট মিল করছি। যেখানে দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। এগুলো সবগুলো অনেক সম্ভাবনাময়।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত এ ব্যবসায়ী সম্মেলনে সারা দেশের চেম্বার, বিশেষায়িত চেম্বার, পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন, রপ্তানিকারক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠনের নেতারা যোগ দেন। পাশাপাশি শীর্ষ স্থানীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, বিদেশি ব্যবসায়ী অংশীদার, আমদানি-রপ্তানিকারক দেশগুলোর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।


বিভাগ : ব্যবসা-বাণিজ্য


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা