বৃহত্তর সিলেটের বন্যায় সম্প্রীতির ব্যতিক্রমী গল্প!
১৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই তলিয়ে গিয়েছিলো। বাদ যায়নি সুনামগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল নেটওয়ার্কের কানেকশন জোরদার রাখাটা যতোটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততোটাই কঠিন। সিলেটের এই ভয়াবহ বন্যায় জরুরি সেবা দিতে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে গিয়েছেন মোবাইল নেটওয়ার্ক কর্মীরা। আর বরাবরের মতোই, তাদের প্রতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বন্যাদুর্গত এলাকার স্থানীয় জনগণ।
মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি’র কর্মীরা দিন-রাত নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারেন যে পর্যটন এলাকা সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের একটি নেটওয়ার্ক টাওয়ার প্রবল বন্যায় বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় জেনারেটারের সাহায্যে সচল আছে, যা যেকোনো সময় তেল সংকটে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় সিদ্ধান্ত নিলেন টাওয়ারটি জরুরি রিফুয়েলিংয়ের জন্য তাহিরপুরে ছুটে যাওয়ার। ভোরে সিলেট থেকে রওনা হওয়ার পরেও যাদুকাটা নদীর পাড়ে পৌঁছাতে রবি’র কর্মী মোমিনুলের সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা বেজে যায়। এমন দিশেহারা অবস্থায় স্থানীয় এক মোটরসাইকেল চালক ঘটনা শুনে বিনা খরচায় যতদূর যাওয়া যায় পৌঁছে দিলেন, তারপর পরিচিত এক নৌকার মাঝি নজরুল ইসলামকে দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করে দিলেন। টাওয়ারে পৌঁছে কাজ শেষ করতে যখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা, তখন তিনি বুঝতে পারলেন বন্যার মাঝে এত রাত্রে কোথাও যাওয়ার কোনো উপায় নেই! এমন বৃষ্টির মাঝে এই দুর্গম এলাকায় উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন সেই উদার মনের মাঝি নজরুল । তিনি মোমিনুল কে প্রস্তাব করলেন তার বাসাতেই রাতটুকু কাটিয়ে যাওয়ার। আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করেন সেই মাঝি।
সহায়তার হাত বাড়ানোর এমন আরেকটি ঘটনা শোনা যাক। সিলেটের স্থানীয় টাওয়ারটির পাশের বাড়ির মালিক জোবায়ের, প্রথমদিকে ন্যায্য ভাড়ায় কর্মীদেরকে নৌকার ব্যবস্থা করে দিতেন। বন্যা আরও কিছুদিন চললে এলাকা বিদ্যুৎহীন থাকার কারণে টাওয়ার চালু রাখার সুবিধার্থে সেখানে একটা পোর্টেবল জেনারেটর বসান রবি’র কর্মীরা। পরবর্তীতে সেই বাড়ির মালিকের ছেলে সুলায়মান স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কোমর সমান পানি পেরিয়ে সেই জেনারেটর রক্ষণাবেক্ষণ করতেন।
এমন রয়েছে আরও হাজারো সম্প্রীতির গল্প। কাজের খাতিরে নেটওয়ার্ককর্মীরা যেখানেই গিয়েছেন, স্থানীয় জনগণ তাদেরকে পরিবারের একজন হিসেবেই আপন করে নিয়েছেন, নিজেরদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে তাদের কাজে সহযোগিতা করেছেন।
জরুরি সেবাদানকারী কর্মীদের প্রতি সিলেটবাসীর এমন ভালোবাসা আবহমান বাংলার বিরাজমান সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যর কথাই মনে করিয়ে দেয়।
বিভাগ : ব্যবসা-বাণিজ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মহাখালীতে এটিএম বুথ ভাঙচুর চালান ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা
শুধু আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী নয়, সন্ত্রাস লালনকারী দলটিরও বিচার হতে হবে - খেলাফত মজলিস
চাপ মেনে নিয়েই হুঙ্কার ছাড়লেন কামিন্স
৬ ঘণ্টা পর মহাখালীতে যান চলাচল শুরু, কমেনি যানজট
খাগড়াছড়িতে দুর্গম লম্বাছড়া গ্রামে স্কুল অ্যান্ড কলেজ নির্মিত
ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করল রাশিয়া
সখিপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মামলায় গ্রেফতার ২
সাফজয়ী ঠাকুরগাঁওয়ের তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের সংবর্ধনা
শিক্ষার্থীদের ওপর অটোরিকশা চালকদের হামলা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ এ পদার্পণ, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি
বিশ্ব ওয়ান হেলথ দিবসের প্রতিযোগিতায় সিভাসু’র শিক্ষার্থীদের সাফল্য
নতুন লুকে দর্শকদের নজর কেড়েছেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী
পদ্মা ব্যাংকের ঋণ খেলাপি শেরপুর চেম্বার অবকমার্সের সাবেক সভাপতি সেলিম গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা খেলোয়াড় তৈরির উর্বর ভূমি: অধিনায়ক সাবিনা খাতুন
বাংলাদেশকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার দিচ্ছে রাশিয়া
যৌক্তিক সমালোচনা মানতে সমস্যা নেই পাকিস্তানের নতুন কোচের
সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পোশাক শ্রমিক নিহত, মহাসড়ক অবরোধ
সেনাবাহিনী যেতেই রাস্তা ছেড়ে পালালেন রিকশাচালকরা!
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে সহযোগিতা বাড়িয়েছে কোরিয়া