বিবিএস তথ্যে সন্তুষ্ট ৮৫.৬৭%, শিক্ষা-গবেষণায় বেশি ব্যবহার
১৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য ব্যবহারকারীগণের মধ্যে ‘৭২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভালো এবং ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ খুব ভালো’ বলে মত দিয়েছেন। তাছাড়া তথ্যের সার্বিক মান নিয়ে ব্যবহারকারীগণের ৮৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ সন্তুষ্ট ছিল। বিবিএস-এর তথ্য সব থেকে বেশি ব্যবহার হয় শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে। বিবিএস থেকে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সন্তুষ্টির মাত্রা বিবেচনায় ৬৭ দশমিক ০৬ শতাংশ ব্যবহারকারী সেবা প্রাপ্তি সন্তোষজনক বলে মত দিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত ব্যবহারকারীগণের ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ বিবিএস’র ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে যোগাযোগ করেন যা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সামগ্রিকভাবে, প্রায় ৩৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা গত ২৪ মাসে প্রায় ২ থেকে ৫ বার বিবিএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ‘ইউজার স্যাটিসফেকশন সার্ভে-২০২২’ শীর্ষক জরিপের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এমন প্রতিবেদন এই প্রথম প্রকাশ করলো বিবিএস। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমেক প্রস্তুতকৃত ও প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান সম্পর্কে ব্যবহারকারীগণের সন্তুষ্টি ও চাহিদার মাত্রা নিরূপণের জন্য বিবিএস প্রথম বারের মতো এই জরিপ পরিচালনা করে। বুধবার (১৫ মার্চ) আগারগাঁও বিবিএস মিলনায়তনে জরিপ প্রকাশ করা হয়। পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে 'এনএসডিএস ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্ট" এর প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন স্বাগত বক্তব্য ও জরিপের ফলাফল নিয়ে সংক্ষিপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্প পরিচালক জরিপের সার্বিক বিষয়ে সম্পর্কে আলোকপাত করেন। দিলদার হোসেন বলেন, এ ধরনের জরিপ বিবিএস ১ম বারের মতো পরিচালনা করেছে। এ জরিপটির নমুনার আকার ছিল ৬০৯ জন যার মধ্যে ৫৮০ জন উত্তরদাতার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী উত্তরদাতাদের ৭০ দশমিক ৫২ শতাংশ জনসংখ্যা, জনমিতি এবং জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, ইত্যাদি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান ব্যবহার করেন। উত্তরদাতাদের ৬৫ শতাংশ পরিসংখ্যানের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আরো বিস্তারিত তথ্য- উপাত্ত প্রকাশের বিষয়ে মত প্রকাশ করেন এবং ৪২ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রায়শই প্রত্যাশিত তথ্য-উপাত্ত খুঁজে পেয়েছেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।
প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, সামগ্রিকভাবে বিবিএস প্রস্তুতকৃত তথ্য সরকারি পরিসংখ্যান শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়। তবে সরকারি পরিসংখ্যান ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীগণের ৪৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা অনুসরণ করেননি। বৈদেশিক বাণিজ্য পরিসংখ্যান ব্যবহারকারীগণের ৭০ দশমিক ০৯ শতাংশ বিবিএস-এর মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত সরকারি পরিসংখ্যানকে উপযোগী' এবং ১৭ দশমিক ০৯ শতাংশ খুবই উপযোগী' হিসেবে মত প্রকাশ করেন।
পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জনসংখ্যা, জনমিতি এবং জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ সম্পর্কিত পরিসংখ্যান, জাতীয় হিসাব পরিসংখ্যান, ও দারিদ্র্য পরিসংখ্যান এর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ব্যবহারকারী যথাক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ৭৩ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিসংখ্যান ব্যবহারকারী জনসংখ্যা, জনমিতি এবং জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ সম্পর্কিত পরিসংখ্যানের ‘যথার্থতা’ এর ব্যাপারে সন্তুষ্ট। ‘সময়োপযোগিতা’ এর বিষয়ে তাঁদের ৬৯ দশমিক ৬১ শতাংশ জাতীয় হিসাব পরিসংখ্যানকে উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করেন এবং ৭৯ দশমিক ৯০ শতাংশ ব্যবহারকারী জাতীয় হিসাব পরিসংখ্যানের 'প্রাসঙ্গিকতা' এর ব্যাপারে সন্তুষ্টি জানান।
জরিপে উঠে এসেছে, তথ্য-উপাত্ত অনুসন্ধানকারীদের বিবিএস-এর সঙ্গে যোগাযোগের প্রচলিত কারণগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট উপাত্ত অনুসন্ধানের হার ৫৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। তাঁদের প্রায় ৭২ দশমিক ৫৬ শতাংশ এক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের কাঙ্খিত তথ্য পেতে সমর্থ হয়েছেন বলে মত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ৫৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ ব্যবহারকারী বিবিএস-এর ত্বরিত সন্তুষ্ট হলেও তাঁদের ৩৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ আংশিক সন্তুষ্ট ছিলেন। এই জরিপের ৫৮০ জন উত্তরদাতার মধ্যে ৮৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ জানান তারা বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন কারণে বিবিএসের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে। পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ উত্তরদাতা ওয়েবসাইটের এক্সেসিবিলিটি সম্পর্কে ভালো বা খুব ভালো বলে অভিমত দিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা তথা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে অধিকতর লক্ষ্যভিত্তিক, সমন্বিত কার্যকর ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে সরকার পরিসংখ্যান আইন পাস করে। পাশাপাশি একই বছর জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়নের রোডম্যাপ হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ থেকে জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র গৃহীত হয়। এনএসডিএস বাস্তবায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রথমবারের মতো ইউজার স্যাটিসফেকশন সার্ভে-২০২২’ পরিচালনা করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ ও এনএসডিএস কে সামনে রেখেই যাবতীয় প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ড. শামসুল আলম বলেন, সঠিক পরিকল্পনার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সঠিক তথ্য-উপাত্ত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, এসডিজির সূচকসমূহ, অষ্টম পঞ্চ- বার্ষিকী পরিকল্পনা, এবং ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে সঠিক ও সময়োচিত পরিসংখ্যানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে সরকারের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচার ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়েছে : সেলিম উদ্দিন
ভারতে ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি
আন্তর্জাতিক আইকিউ টেস্টে দ্বিতীয় ইরান
গণঅধিকার পরিষদের ফারুকের ওপর হামলা : দুই আসামির জামিন
লেনদেন ও সূচকের উত্থান পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
পাবনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাবু গ্রেপ্তার
১৫ হাজার পিচ ইয়াবার মামলায় প্রবাসীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে : মাহমুদুর রহমান
বৃদ্ধাশ্রমের বাবা মায়ের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের দিন প্রশ্নবিদ্ধ এনামুল
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চান পরিবেশ উপদেষ্টা
গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ
র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি শেকৃবি ভিসির
অংশীজনদের সঙ্গে আজ বসছেন অর্থ উপদেষ্টা
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওর নাম্বার ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি
সমস্যাগ্রস্ত ৬ ব্যাংকের নিরীক্ষায় ২ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত