লুটের মালের মতো ডলারের দাম নিচ্ছে ব্যাংকগুলো
০৭ জুন ২০২৩, ০৯:২২ পিএম | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো ডলারের দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো বর্তমানে এক ডলারের বিপরীতে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। লুটের মালের মতো যেভাবে পারছে, তারা (ব্যাংক) সেভাবে ডলারের দাম নিচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাংক ঋণের সুদ হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন মো. জসিম উদ্দিন। তিনি মনে করেন, এতে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। বুধবার (৭ জুন) আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। জসিম উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন সমস্যা, অভিযোগসহ নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য এফবিসিসিআই ও এনবিআরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু তাদের বৈঠক হয় না। তিনি বলেন, পণ্য আমদানিতে এইচ এস কোডের ভুলের জন্য ২০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়, তার ২০ শতাংশ পায় কর কর্মকর্তা। বাজেটে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, তা কীভাবে সংগ্রহ করা হবে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকলে ভালো হতো। এ ছাড়া এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে এনবিআরকেও ডিজিটাল করতে হবে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে আয়কর ও ভ্যাট আদায় করতে হবে। উভয় পক্ষের মধ্যে যত কম দেখা হবে, ততই দুর্নীতি কমে আসবে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও গ্যাসসংকট নিয়ে কথা বলেন মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ১৬ টাকার গ্যাস ২৫ টাকা করার প্রস্তাব আমরাই দিয়েছিলাম। আমাদের শর্ত ছিল, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে হবে। ১৬ টাকার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা করা হলো, কিন্তু এখন আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পাচ্ছি না। জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে অন্ধকার বেশি ব্যয়বহুল। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর চালাচ্ছি, প্রতি কিলোওয়াটের দাম পড়ছে ২৫ টাকা। অর্থনীতি টেকসই ও সেই সঙ্গে শিল্পোৎপাদন ধরে রাখতে হলে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হয়নি। তবে তা আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সম্ভব হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার কিছু ভর্তুকি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে, তবে কৃষি ও খাদ্যে ভর্তুকি রাখা হবে, কারণ এগুলো ভালো ভর্তুকি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সমাজতান্ত্রিক সরকার নয়, তবে বৈষম্য কমানোর বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ রয়েছে। ‘প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষকে নিজস্ব ঠিকানা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে আয়ের সুযোগের পাশাপাশি সুপেয় পানি, নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা পাচ্ছে তারা’ বলে উল্লেখ করেন এম এ মান্নান।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে কলকাতা ও আগরতলা খুব বেশি দূরে নয়। তাই দুই দেশের বাজারের মধ্যে পণ্যমূল্যে এত তফাত হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের বাজারে কোথাও কোনো সমস্যা আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ছে দেখে বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন, দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে না এলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর দাম কিছুটা কমল। কিন্তু পরে যখন ব্যবসায়ীরা দেখলেন সরকার কিছু করছে না, তখন দাম আবার বেড়ে গেল। এখন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, দামও কমছে।
এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রীও আমদানিনির্ভর পণ্যে মজুদ গড়ে তোলার পক্ষে। বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশে (টিসিবি)-এর মজুদ গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। চালের মজুত তৈরি করার ফলে এখন বাজার স্বাভাবিক। একইভাবে অন্যান্য পণ্যেরও মজুতের দরকার।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক সভায় বাজেট বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম, দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সেরাজ প্রমুখ। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ট্রাম্পের শুল্কে বাংলাদেশে কমবে প্রবৃদ্ধি, বাড়বে শঙ্কা-অনিশ্চয়তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে শীর্ষে সউদী

দাঁত ভাঙ্গা জবাব চীনের

সেনাবাহিনীতে আরও রোবট নিয়োগ করছে রাশিয়া

ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভ

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির