‘তামাক চাষ বৈশ্বিক পরিবেশগত ক্ষতির অন্যতম কারণ’

‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ শীর্ষক এক আলোচনায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৩ জুন ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, তামাক চাষ বৃদ্ধি এবং উৎপাদন দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া যা বৈশ্বিক পরিবেশগত ক্ষতির অন্যতম কারণ। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে তামাক উৎপাদনের জমিতে খাদ্যশস্য উৎপাদনে উৎসাহিতকরণে প্রচারাভিযান ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব তামাক দিবস উপলক্ষ্যে ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সহকারী সচিব মো. রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিজিওনাল অ্যাডভাইজর অ্যালায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টটেশন বাংলাদেশের সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মোজাহারুল হক। তিনি বলেন, বর্তমানে তামাক একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে ১২৫ টিরও বেশি দেশে তামাক উৎপাদিত হয়। সারা বিশ্বে আনুমানিক ৪ মিলিয়ন হেক্টর কৃষি জমিতে তামাক উৎপাদিত হয়। তামাক চাষাবাদের ক্ষতিকর প্রভাবগুলো সাধারণত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৫ হাজার ৯ শত ৭০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়। এ ভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশে খাদ্য উৎপাদনের জমিতে তামাক উৎপাদনের কারণে খাদ্য ঘাটতির সম্ভবনা রয়েছে। এ আশঙ্কার দূরীকরণ ও খাদ্য ঘাটতির সম্ভবনা রোধকল্পে এখনই তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে একটি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।
এএফআইবি'র যুগ্ম সমন্বয়ক ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, প্রতিবছর দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রায় ১ কোটি ৬২ হাজার লোক মৃত্যুবরণ করে এবং প্রায় ৪ লাখ লোক নানা অসুস্থতায় পঙ্গুত্বের শিকার হয়। এছাড়া প্রতিবছর তামাক ব্যবহারের ফলে ১২ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার জনিত প্রধান ৮ টি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার ফলে দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজন সরকার থেকে জন সাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, তামাক চাষ কোনো মৌলিক প্রয়োজনীয় বা পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনমূলক পণ্য নয়। এটি একটি প্রাণঘাতী ও সর্বগ্রাসী পণ্য। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ (১) বর্ণিত আছে, জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন, এবং ১৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে, রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক উপকরণ এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ সুপেয় খাবার পানিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। অন্য দিকে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তামাকজাত পণ্য চাষ, উৎপাদন, বিপণন ইত্যাদির উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্যাট-এর সভাপতি আসলাম শিহির বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে বছরে অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ৩০ হাজার ৫ শত ৬০ কোটি টাকা। তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। অসংখ্য পরিবার চিকিৎসা ব্যয়ের অর্থ যোগাতে নিঃস্ব হয়ে যায়। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হলেও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কোন বছর কতটুকু পরিমাণ কমানো হবে, কীভাবে কমানো হবে তা সুস্পষ্ট বলা হয়নি। কৃষি বিপণন আইন, ২০১৮ তে তামাক পণ্যকে অর্থকরী ফসলের তালিকাভুক্তি করা হয়েছে। যা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


বিভাগ : অর্থনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ব্যাংক করা হবে: গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যে ১০৪% শুল্ক কার্যকর, বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি মো. রবিউল ইসলাম
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঈদ পুণর্মিলনী অনুষ্ঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
আরও
X

আরও পড়ুন

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির

ড্যাবের ভোটে সরব ১ ডজন প্রার্থী

ড্যাবের ভোটে সরব ১ ডজন প্রার্থী

বিচার হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ চায় এনসিপি-হেফাজত

বিচার হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ চায় এনসিপি-হেফাজত

সাবেক এমপি আশেক উল্লাহ রফিকসহ ৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক এমপি আশেক উল্লাহ রফিকসহ ৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঘুষসহ গ্রেফতার নৌ অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ৩ বছরের কারাদন্ড

ঘুষসহ গ্রেফতার নৌ অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ৩ বছরের কারাদন্ড

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক