এমডি শূন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো হ য ব র ল
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়োগের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।
আজ রোববার থেকে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আগের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা অফিস করছেন না। কোন ধরনের সময় না দিয়ে হঠাৎ করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়োগ বাতিল করায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো হ য ব র ল অবস্থা বিরাজ করছে। কে হবেন, কাকে এমডি দিবেন এ নিয়ে চলছে ব্যাংকগুলোতে নানা আলোচনা। তবে ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ কর্মকর্তাই অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ। তাদের মতে, একটা সময় দিয়ে ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ে এমডিদের বাদ দিতে পারতো।
এদিকে ব্যাংকিং পাড়ায় চাউর আছে সরকারি সাবেক আমলাদের এসব ব্যাংকের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে এরকম সিদ্ধান্ত ব্যাংকিং খাতের জন্য বুমেরাং হবে বলে মনে করেন তারা। কারণ সাবেক আমলারা ব্যাংকিং খাত নিয়ে খুব একটা অভিজ্ঞ না। তাই এমডি নিয়োগে অবশ্যই ব্যাংকিং খাতের লোকজনকে এমডি দেওয়ার অনুরোধ সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া চাউর আছে অবসরে যাওয়া সাবেক ডিএমডি ও এমডিদের আবার এসব ব্যাংকে এমডি হিসাবে বসানো হতে পারে। এক্ষেত্রে বঞ্চিত, সৎ ও অভিজ্ঞ হিসেবে নাম আলোচনায় আছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) মো. এবনুজ জাহান, কৃষি ব্যাংকের সাবেক এমডি মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়াসহ একাধিক ব্যাংকারের নাম। সূত্র মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে অস্থিতিশীল আর্থিকখাত ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ধারায় ফিরলেও নতুন করে জটিলতার শঙ্কা জেগেছে। কারণ, হিসেবে একাধিক ব্যাংকার জানিয়েছেন, এই এমডিদের অনেকেই ব্যাংকিংখাতে সততা ও দক্ষতার অন্যতম উদাহরণ।
কারো বিরুদ্ধে বড় অনিয়মের অভিযোগ নেই। এদের সবার নিয়োগ বাতিলে আর্থিকখাতে বড় একটি ধাক্কা আসতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ নতুন জটিলতার জন্ম দেবে। কারণ, দুই বছর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকেই এমডি নিয়োগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান অধিকাংশ ডিএমডিই সাবেক আওয়ামী সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। তারা কোন না কোনভাবে পতিত আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী কিংবা ব্যাংক লুটের কার্যক্রমে সহায়তাকারী। সেক্ষেত্রে এমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে ডিএমডি পদে দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদেরকে ব্যাংকগুলোর এমডি পদে নিয়োগ দিলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতে পারে। কারণ, গত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাদেরকে বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ করতে হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ব্যাংকে বর্তমান এমডিদের মত দক্ষ ব্যাংকারের ঘাটতিও রয়েছে।
আবার একাধিক ব্যাংকের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন এমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা যে ব্যাংক থেকে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হয়েছেন তাদেরকে ওই ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া যথোপযুক্ত। কারণ, তিনি ওই ব্যাংকের আদ্যোপান্ত জানেন। ব্যাংকটিকে আরও কিভাবে ভালো করা যায় সেটা নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এখন ব্যাংকগুলো তাদের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কোন কোন ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী এমডি’র চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে ৩-৬ মাস আগে জানানো বা তার সমপরিমাণ অর্থ আদায় করতে হয়। পরিচালনা পরিষদ বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে এমডিদের চুক্তি বাতিলের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু তা কড়া হয়নি। এজন্য অনেকে মনে করছেন সাদ্য বাতিল হওয়ারা নতুন এমডি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এমডি। এদিকে এমডিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করলেও মন্ত্রণালয় থেকে ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবেও কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই রোববার ব্যাংকগুলোতে সরজমিনে দেখা যায়, ৬টি ব্যাংকের সকল কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। যা স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর আর্থিক খাতের জন্য আরও বিপর্যয় নিয়ে আসবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমডি পদের চুক্তি বাতিল হওয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, আমাদের চাকরির বয়স আরো বেশ কয়েক বছর থাকার পরও সরকারের সিদ্ধান্তে নিয়মিত চাকরি ছেড়ে চুক্তিভিত্তিতে এমডি’র দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। এমডি পদে না আসলে আমাদের নিয়মিত চাকরি নির্ধারিত বয়স পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারতাম, আক্ষেপ করে বলেন ওই শীর্ষ নির্বাহী। গত বৃহস্পতিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আলাদা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফজাল করিম, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুরশেদুল কবির, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. জাহাঙ্গীর, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আব্দুল জাব্বার, বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আনিসুর রহমান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হাবিবুর রহমান গাজীর সঙ্গে পরিচালনা পরিষদের সম্পাদিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের জন্য সরকারের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। এতে ব্যাংক কোম্পানি আইন ও পরিচালনা পরিষদের সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়ে পরবর্তী বিধিগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়োগের চুক্তি গত বৃহস্পতিবার বাতিল করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। পৃথক ৬ প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। ব্যাংকগুলো হচ্ছে- সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান