ব্যাংকের সুদহার নিয়ে গভর্নরের কড়া বার্তা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম | আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

ব্যবসায়ীরা চাপ দিলেই যে সুদহার কমিয়ে দেব তা হবে না। আগে মূল্যস্ফীতি কমবে তারপর পলিসি রেট আস্তে আস্তে কমানো হবে।

 

মঙ্গলবার (৪ মার্চ ) ব্যাংক খাতের পুনরুদ্ধারের পথযাত্রা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

 

ইস্কাটনে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড কার্যালয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

 

গভর্নর বলেন, আমি চাই পলিসি রেট বাস্তবিক অর্থে ইতিবাচক হোক। একেবারেই না হলে মূল্যস্ফীতি দ্রুত কমবে না। বাস্তবিক অর্থে ইতিবাচক হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকা, ভারতকে দেখুন সব জায়গাতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক নীতি সুদহার আছে। তো আমাকে ওইটাতে আনতে হবে। আমি এখানও ওইখানে যায়নি। তবে সুদহার কাঠামো ও মূল্যস্ফীতি সঠিক দিকে আগাচ্ছে। সময়মতো এটা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমাদের তাড়াহুড়োর দরকার নেই। আমাকে ব্যবসায়ীরা চাপ দিলেই সুদহার কমিয়ে দেব তা হবে না। মূল্যস্ফীতি, ট্রেজারি বিল, ইন্টারেস্ট পলিসির সব রেট কমবে, তখন আমি পলিসি রেট আস্তে আস্তে কমাবো, এর আগে না।

 

ব্যাংকিং খাত নিয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমরা দ্রুত এগিয়ে যেতে চাই এবং আর্থিক খাতকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করার কাজ জোরেশোরে চলছে। প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকও আমাদের বিশ্বব্যাপী সেরা ব্যবস্থা বা নীতিমালা খুঁজে পেতে সহায়তা করছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা হচ্ছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনর্গঠনে কাজ করছি।’

 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা এর ভিত মজবুত করতে চেষ্টা করব, তবে সব সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকার করতে পারবে না। যখন পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসবে, তখনও এই সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

 

গভর্নর বলেন, গৃহিণী স্ত্রী ও মেয়েকে ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে বসিয়ে দিচ্ছি। তাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই। আমরা এসব চাই না। ব্যাংকের পরিচালক হতে ফিট অ্যান্ড প্রপার টেস্ট (অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা পরীক্ষা) পর্যালোচনা করা হচ্ছে। যারা এখন পরিচালক আছেন, তারাসহ সবাইকে এই যাচাই–বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার গুণাবলি থাকতে হবে। ব্যাংকের মালিকদেরও এই যাচাই–বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। যোগ্যতা থাকলে মালিকেরা পরিচালক হবেন, যোগ্যতা না থাকলে হবেন না। সিটি ব্যাংক এনএর মালিক কারা, তা কেউ জানেন না।

 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারের ঋণ নিয়ে একটি চক্রের মধ্যে আছি। আমি সেই লোক নই যে চাটুকারিতা করে টাকা আনব। গত ৬ মাসে অর্থনীতি যেভাবে ঘুরে দাড়িয়েছে, বিশেষ করে রিজার্ভের পতন ঠেকানো, বিনিময় হারে এক ধরনের স্থিতিশীল অবস্থা, রপ্তানি এবং প্রবাসী আয়ে ভালো অবস্থা, আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ, সবমিলে নেতিবাচক অবস্থা থেকে চলতি হিসাব এবং আর্থিক হিসাব ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। কেবল রাজস্ব আয়টা ঠিক রাখা গেলে মাত্র পৌনে ৫ বিলিয়ন ডলারের জন্য আইএমএফ এর কাছে ধর্না দিতে হত না। আমাদের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর নীতি দরকার।

 

সম্পদের পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা কেবল আশা করতে পারি যে, বাংলাদেশে কিছু রায় পাবে এবং বিদেশে কিছু সম্পত্তি আটকানো সম্ভব হবে। অর্থ ফেরত আনা দীর্ঘ সময়ের প্রক্রিয়া। তবে আশা শেষ হয়ে যায়নি। নাইজেরিয়া, মালয়েশিয়া, অ্যাঙ্গোলার মতো দেশগুলো সফলভাবে অর্থ পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে।


বিভাগ : অর্থনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ব্যাংক করা হবে: গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যে ১০৪% শুল্ক কার্যকর, বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি মো. রবিউল ইসলাম
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঈদ পুণর্মিলনী অনুষ্ঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
আরও
X

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের শুল্কে বাংলাদেশে কমবে প্রবৃদ্ধি, বাড়বে শঙ্কা-অনিশ্চয়তা

ট্রাম্পের শুল্কে বাংলাদেশে কমবে প্রবৃদ্ধি, বাড়বে শঙ্কা-অনিশ্চয়তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে শীর্ষে সউদী

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে শীর্ষে সউদী

দাঁত ভাঙ্গা জবাব চীনের

দাঁত ভাঙ্গা জবাব চীনের

সেনাবাহিনীতে আরও রোবট নিয়োগ করছে রাশিয়া

সেনাবাহিনীতে আরও রোবট নিয়োগ করছে রাশিয়া

ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভ

ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভ

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির