ঢাকা   শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১

সম্পদ অসম বণ্টন সকল অশান্তি ও অনিষ্টের কারণ

Daily Inqilab আব্দুল্লাহেল বারী

০৯ জুন ২০২৩, ০৭:৪৫ পিএম | আপডেট: ১০ জুন ২০২৩, ১২:০৩ এএম

বিশ্বের দেশে দেশে মানুষে মানুষে আয় ও সম্পদের অসম বণ্টন এতই প্রকট যে, মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ বিশ্বের সমস্ত সম্পদের ৬৪ শতাংশের মালিক, ৬৯ শতাংশ মানুষ ৩.৪ শতাংশ সম্পদনির্ভর ক্লিষ্ট জীবনযাপন করে বেঁচে আছে। শীর্ষ ০.৮ শতাংশ মানুষ বিশ্ব সম্পদের ৫১.২ শতাংশের মালিক। আমেরিকার মতো উন্নত ও শিক্ষিত দেশে ৫০ শতাংশ মানুষ মাত্র ১.৯০ শতাংশ সম্পদনির্ভর, ১০ শতাংশ আমেরিকান দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পদের অধিকারী। ঐ কেন্দ্রীভূত সম্পদ বিশ্বজুড়ে অবিরত সম্পদ শোষণ করে চলেছে। ইউরোপ, রাশিয়া, চীনের ক্ষেত্রে দৃশ্য একই। বিশ্বের ১ শতাংশ শীর্ষ ধনী ৮২ শতাংশ বিশ্ব সম্পদের অধিকারী, ২০৪৩ জন বিলিওনিয়ার গত ১২ মাসে তাদের সম্পদ ৭৬২ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি করেছে, যা ব্যবহার করে দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপনকারী মানুষকে দারিদ্র্যসীমার উপরে আনা যায়। সম্পদ-আয়ের অসম বণ্টনের বর্তমানের ভয়াবহ চিত্র যে কোনো চিন্তাশীল মানুষকে বিচলিত করে।

বিশ্ব সম্পদের ৭০ ভাগ বুদ্ধিমত্তা সম্পদ! এটা হাস্যকর, শূন্য ভাজক হলে, ফল অপরিসীম হবেই। বুদ্ধিমত্তার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা প্রায় শূন্য। আর্টিফিসিয়াল বুদ্ধিমত্তা, যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটালাইজেশন ও রিমোট কন্ট্রোল অনেক মানুষকে শীঘ্রই বেকার করবে। যারা বেকার হবে তারা এ বিষয়ে ওয়াকিফহাল নয়, যারা জানে তারাও এই বাস্তব ভবিষ্যতের দর্শক মাত্র। অধিকাংশ না ৯০ শতাংশ ‘মানুষের আয়ের পন্থা মজুরি’ কিন্তু ১০ শতাংশ মানুষের জন্য আয় করে ‘অর্থ’, এই প্রচলিত পদ্ধতি অগ্রহণযোগ্য। আঞ্চলিক ও রাষ্ট্রীয় এবং রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বর্তমান বণ্টন অগ্রহণযোগ্য, পৃথিবী ও মানুষের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ।
একটি দেশের মোট সম্পদ স্বাভাবিকভাবেই ঐ দেশের রাষ্ট্রীয় ও জনগণের ব্যক্তিগত সম্পদের সমষ্টি। ধনী দেশে জনগণের একত্রিত সম্পদ ঐ দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদের ৪-৬ গুণ। শ্রেষ্ঠ ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, সম্পদের পরিমাণ ১২৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, মোট বিশ্ব সম্পদের ৩১ শতাংশের অধিক, লোকসংখ্যা বিশ্বের ৪.৬ শতাংশ। ঐ দেশে শ্রেষ্ঠ ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১৮২ বিলয়ন মার্কিন ডলারের অধিক। ধনী-দরিদ্রের সস্পদের বিস্তৃতির গিনি সূচক ০.৩৯। আমেরিকার মতো ধনী শিক্ষিতের দেশের সম্পদের ভয়াবহ অসম বণ্টন ঐ দেশের জনগণের স্বাধীনতা বিপন্ন করছে।

আমেরিকায় ১০টি শ্রেষ্ঠ ধনী পরিবারের মিলিত সম্পদ ৩টি অতি ধনী দেশের জিডিপির সমষ্টির অধিক। ১০ জন ধনী একত্রে ১.১৪৪ টিলিয়ন সম্পদের মালিক, যা পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের জিডিপি অধিক বা কয়েক গুণ। ১ শতাংশ ধনী আমেরিকান নি¤েœর ৫০ শতাংশ মানুষের সম্পদের ১৬ গুণ সম্পদের আধিকারী। মাত্র ২৬ জন ধনী মানুষ বর্তমান বিশ্বে নি¤েœর ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪০০ কোটির অধিক মানুষের সম্পদের সমান সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে। ২০০৯ সালে ঐ সংখ্যা ছিল ৩৮৫, অর্থাৎ গড়ে ফি বছর ৩৮.৫ হারে সস্পদের কেন্দ্রায়ন হচ্ছে। বিশ্বে ন্যাদারলেন্ডে সম্পদের অসম বণ্টনের চিত্র সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ, গিনি সূচক ০.৯০২।

এটি স্পষ্ট যে, অতি দ্রুত গতিতে সম্পদের কেন্দ্রায়ন অগ্রসরমান। ধনী দেশগুলি, বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপ ব্লাক হোলে রূপ নিয়েছে। বিশ্বের সমস্ত সম্পদ, আর্থিক বা বুদ্ধিমত্তা, শোষণ করছে এবং প্রাকৃতিক নিয়মের মতই শোষণ আর শোষণের ক্ষমতা দ্রুত থেকে দ্রুততর বেগে বাড়ছে।

গরীব দেশের বা মানুষের সম্পদের যথাযথ হিসাব নাই। নি¤œ আয়ের দেশে আইন কানুন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি শিথিল এবং দুর্নীতি লাগাম ছাড়া। অর্থাৎ আয় বা সম্পদের অসম বণ্টন দরিদ্র দেশে আরও প্রকট। গরীব দেশে ধনীর কুক্ষিগত সম্পদ অনেক বেশি বিধায় নি¤œ আয়ের মানুষ স্বাভাবিকভাবেই অনেক কম আয় করে। পৃথিবীতে দরিদ্রতম ১০টি দেশে একজন মানুষের প্রতিদিনের মাথাপিছু গড় আয় ১.৫০ মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ১৩০ বাংলাদেশি টাকা, যা ২০০৫ সালে বাংলাদেশের দৈনিক গড় মাথাপিছু আয় ছিল, ক্রয় শক্তি ছিল বর্তমানের প্রায় তিনগুণ। বর্তমান আধুনিক সভ্য গর্বিত বিশ্বে দিনে একজন মানুষ সর্বনি¤œ আয় করে ০.০০৫ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি ০.৪০ টাকা), এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী গড়ে প্রতিদিন ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক আয় করে, অর্থাৎ সর্বনি¤œ আয়ের মানুষের ২২ বিলিয়ন বা ২,২০০ কোটি গুণ বেশি।

যে কোনো দেশেই শুধু মানুষে মানুষে সম্পদের প্রকট অসমতা নয়, দেশগুলোর মাঝে সম্পদের ফারাক সীমা ছাড়া। আমেরিকার জিডিপি ২৬.৮৫৪ ট্রিলিয়ন, মাথাপিছু জিডিপি ৮০,০৩৪ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের জিডিপির ৬৪ গুণ ও মাথাপিছু জিডিপির ৩২.০ গুণ। অথচ, বাংলাদেশের আছে অমূল্য মানব সম্পদ এবং ঘনবসতির কারণে তাদের কর্ম ঘণ্টা মাথাপিছু দৈনিক বেশি হওয়া যুক্তিযুক্ত। বংলাদেশের মাটি উর্বর, সূর্যের আলো ও তাপমাত্রা অতি উত্তম এবং মৌসুমি বায়ু প্রবাহের ফলে বৃষ্টিপাত আশীর্বাদ, আছে মিষ্টি পানির নদী। পৃথিবীতে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে ধনী দেশ হবার কথা। ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে বাংলা অতি উন্নত অঞ্চল ছিল বলেই বিভিন্ন দেশের মানুষ সম্পদের আকর্ষণে বাংলায় এসেছে।

আজ এটি স্পষ্ট যে, সৃষ্ট সম্পদের কমতি নাই। শুধু বিনোদনের জন্যই কাজের সময় ৫ দিনের স্থলে ৪ দিন করার চেষ্টা চলছে না, বরং উপভোগ সামগ্রী সংগ্রহের জন্য অধিক আয়ের প্রয়োজন নাই, ভোগ করার জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন। উন্নত বিশ্বে নতুন সঙ্গী খোঁজার চিন্তায় অবসর সময়ের ৭০ ভাগ সময় ব্যয় হয়। এও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে যে, উৎপাদনের বর্তমান যুতসই যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করা প্রয়োজন, যাতে করে লাভজনকভাবে উৎপাদন সীমিত রাখা যায় এবং বিশ্ববাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটা উৎপাদনের লাগাম টেনে ধরার মতো, যাতে রপ্তানি মূল্য পড়ে না যায়। ক্ষুধা দারিদ্র্যের পৃথিবীতে এটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক প্রচেষ্টা। সন্দেহাতীত যে, এই চিন্তাভাবনা পুঁজিবাদী। ১৬০০ সালে ব্যাক ডেথের পরে যখন সমস্ত সম্পদ অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে আসে তখনই পুঁজিবাদের বীজ বপন হয়, যা আজ মহিরুহে রূপ নিয়েছে। সম্পদ বা আয়ের অসম বণ্টন পুঁজিবাদপ্রসূত। পুঁজিবাদের দোষ ত্রুটি, যেমন, ভোগবাদ, নৈতিকতার অধঃপতন, বেকারত্ব, ক্ষুধা, জরা, অশিক্ষা, হিংসা দ্বেষ, দ্বন্দ্ব ইত্যাদি অসম বণ্টন থেকে উদ্ভূত। পরিবেশ দূষণ, মনোসনি, মনোপলি, সাংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক ও আর্থিক সম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদসৃষ্ট। আশার কথা এই যে, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে চিরন্তন ঝড় নতুন করে বেগবান হয়েছে, অনেকেই যুক্তিনির্ভর মনোভাব পোষণ করে যে, মানুষকে শোষণে লিপ্ত এই পুঁজিবাদ দানবকে ধ্বংস করতে হবেই। হাস্যকর বিষয় যে, ধনী ব্যক্তিবর্গ মানুষের চুরি করা বা বঞ্চিত করা সম্পদ বিভিন্ন (অবশ্য অতি সামান্য অংশই বটে) দান হিসেবে দিয়ে বাহবা নিচ্ছে, গর্বিত ছবি ছাপাচ্ছে।

মানুষ একা অসহায়, বংশ বৃদ্ধি বা জীবনধারণে অপারগ। শতশত মানুষই বাঁচিয়ে রেখেছে আমাজন, আইবিএম, অ্যাপল, ফ্যাসবুক, ফিলিপস, টাটা, বিরলা, হুন্ডাইকে। আজ এটা সর্বজনীন স্বীকৃত যে, উন্নত প্রযুক্তি বা তার প্রয়োগে শিল্প উন্নয়ন মানুষের সামষ্টিক আশানুরূপ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। সামষ্টিক সম্পদের অপ্রতুলতা নাই, ক্ষুধাতুর মানুষের সংখ্যা না কমে দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে । রাজনৈতিক নীতিবোধ বা নিয়ন্ত্রণের সংমিশ্রণে যে অর্থনৈতিক পরিমন্ডল ও বাস্তবতার উদ্ভব হয়েছে তা শোষক, শোষণ ও শোষিতের। রাজনৈতিক ধ্যান ধারণায় সৃষ্ট বাজারই বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির বলয়, ভীতি, অপব্যাখ্যা ও অপপ্রচারের মাধ্যমে সংরক্ষিত, অন্যথায় শোষকের অস্তিত্ব বিলীন হতো এতে সন্দেহ নাই। দুর্নীতি বা ঘুষ বৈশ্বিক রূপ নিয়েছে। বাৎসরিক ঘুষের পরিমাণ এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এটা ক্যাপিলেটিজমের উপহার। নীতিবিরুদ্ধ উপরি স্বার্থ হাসিল করতেই ঘুষের ব্যবহার, এই উপরি লাভ ঘুষ প্রদানের কমপক্ষে দশ গুণ। অর্থাৎ ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার বছরে হাতিয়ে নেয়া হয়, যা নিঃসন্দেহে কষ্ট ক্লিষ্ট জনগণের টাকা। শীগ্রই সামষ্টিক সম্পদের মাথাপিছু হিস্যার দাবি উঠবেই। আলো, বাতাস বা চুম্বক ক্ষেত্র কিছুই বাদ যাবে না। মানুষ পণ্য নয়, অতি প্রাকৃত, অর্থ এর মানদন্ড হতে পারে সম্পদ ও আয়ের বিভাজনের ভ্রান্ত ভিত্তি অর্থাৎ যথাযথ কাঠামো না থাকা অসম বণ্টনের একটি প্রধান কারণ।

কুক্ষিগত সম্পদের অপ্রতিরোধ্য ক্রমবর্ধমান শোষণ মানবগোষ্ঠিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন হওয়ার দ্বার প্রান্তে ঠেলে নিচ্ছে। মানুষের সকল সমস্যা বা অশান্তি সৃষ্টির প্রধানতম কারণ, সম্পদ-আয়ের অসম বণ্টন। আয়ের অসম বণ্টন সম্পদকে কেন্দ্রিভূত করে ও সম্পদের অসম বণ্টনের প্রসূতি ও অসম বণ্টন লালন করে। এটাই বাজার অর্থনীতি বা ক্যাপিটালাইজেশনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। কেন্দ্রিভূত সম্পদ প্রকারান্তে অর্থ, আর অর্থ বর্তমান প্রচলিত প্রথায় শোষণের সবচেয়ে মারাত্মক হাতিয়ার। কারণ, এই অর্থই অর্থ উপার্জনে ব্যবহার হয়। মার্কেট অর্থনীতির পিলার ংঁৎারাধষ ড়ভ ঃযব ভরঃঃবংঃ যা প্রাকৃতিক এবং প্রকৃতিতেই মাত্র কার্যকর। বিত্তশালী মানুষের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। একজন ঘুষ দেয় আর একজন ঘুষ দেয় না, এটা প্রাপ্তব্য ফলাফলে ফারাক সৃষ্টি করবেই এবং বাজার অর্থনীতি যেহেতু রাজনৈতিক বলয়ে আবদ্ধ তাই সম প্রতিযোগিতার সুযোগ থাকবে না এবং গধহরঢ়ঁষধঃরড়হ ও সড়হড়ঢ়ড়ষরুধঃরড়হ হয়ে থাকে, যা অধিকতর দূষণ যুক্ত করে। আয়ের অসম বণ্টন বিশ্বে সামষ্টিক ক্রয় ক্ষমতা ভীষণভাবে কমিয়েছে ও সামগ্রিক কর্মস্পৃহা বিনষ্ট করে সামষ্টিক উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে চলেছে। সম্পদের কেন্দ্রায়নের পথ প্রসস্ত করে সম্পদ কুক্ষিগত করতে সাহায্য করে, সম্পদের সদ্ব্যবহার হ্রাস করে, সামষ্টিক সম্পদের যথেচ্ছাচার ব্যবহারের প্রবৃদ্ধি ঘটায়, সামষ্টিক সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে, বুদ্ধিমত্তার সামষ্টিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করে, মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে এবং ধর্মে ধর্মে অসমতা, ভেদাভেদ ও বিভেদ সৃষ্টি করে। অসম বণ্টন বিশ্বে মানুষের ক্ষুধা, জরা ও ক্ষোভ বৃদ্ধি করে, বিশ্বব্যাপী অপুষ্টি ও অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি করে। ধূমপানের মতো ক্ষতিকারক উপাদানের উৎপাদন, সকল ধরনের মাদক ব্যবসা, জুয়া ও নিন্দনীয় কর্যকলাপ বিস্তারের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। আয় ও সম্পদের অসম বণ্টন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানুষের সামষ্টিক দুর্ভোগকে অধিক মুনাফা অর্জনে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে, যেমন, কভিড-১৯ এর মানবিক দুর্যোগে শ্রমিক ও দরিদ্রের ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য অর্থ ধনীরা হাঁতিয়ে নিয়েছে কভিড-১৯ শুরুর প্রথম এক বছরের মধ্যেই। আবহাওয়ার পরির্বতন, ওজন আচ্ছাদন ভেদ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি আয়ের অসম বণ্টন এবং কুক্ষিগত সম্পদের প্রতিক্রিয়া।

অসম বণ্টন মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা, রীতি ও নীতি বিনষ্টের অনুঘটক। মানুষকে হিংস্র ও প্রতিবাদী করে তোলে। বিশ্ব মানবের সামষ্টিক নৈতিকতা, মূল্যবোধ, মানবিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মনন বিকাশে অনমনীয় বাধার সৃষ্টি করে। বিশ্বে সকল দূরাচার, অনাচার, অনৈতিকতা, অন্যায়, মানবিক, মানসিক, শারীরিক রুগ্নতা এবং প্রতুলতার উৎস আয়ের অসম বণ্টন। সম্পদের অসম বণ্টন বেকারত্ব বাড়ায়, বিশ্ব শান্তি বিনষ্ট করে।

লেখক: চেয়ারম্যান, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড স্লিপওয়েজ লি.।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি

বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী

সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু

সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু

রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে

রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে

বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত

বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে

বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা

বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা

লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে

রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে

দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা

দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা

জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ

জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ

উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী  প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন

উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন

সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল

রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল

‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড

‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড

সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড

সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড

শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল

শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে