নির্দলীয় সরকার ছাড়া নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়
২৩ জুন ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম | আপডেট: ২৪ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অসহনশীলতা, অনাস্থা, অবিশ্বাস, অগ্রাহ্য ও একগুঁয়েমি মনোভাবের কারণে দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল হতে পারেনি। ’৯১-এ ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদ শেষে ’৯৬ সালে বিএনপি নিজের অধীনে নির্বাচন করতে চাইলে তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলনÑসংগ্রাম শুরু করে। তখন বাধ্য হয়ে বিএনপিকে বিরোধীদলবিহীন ১৫ ফেব্রুয়ারীর একতরফা নির্বাচন এবং সংসদে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি স্থাপন করতে হয়। সঙ্গতকারণেই সবাই ধরে নেয়, সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী নির্বাচনগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে থাকবে। ’৯৬Ñএ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আওয়ামীলীগ বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদ শেষে ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। মেয়াদ শেষে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের অনুকূলে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তখন তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগসহ অন্যান দল ‘নীলনকশা’র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে সহিংস আন্দোলন শুরু করে। সঙ্কটের সুরাহা যখন কোনভাবেই হচ্ছিল না, তখন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়, যা ওয়ান-ইলেভেন সরকার নামে পরিচিত। আওয়ামী লীগ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং তাদের স্বাগত জানায়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট তিনÑচতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয় লাভ করে। আওয়ামী লীগ বরাবরই দাবী করেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি তাদের আন্দোলন ও দর্শনের ফসল। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছিল, সেই তারাই মনে করেছে এবং করছে এ পদ্ধতি অগণতান্ত্রিক। ফলে কোর্টের রায় উল্লেখ করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা বাতিল করে। উল্লেখিত তথ্যগুলো দেশের সকলেরই জানা। প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কেন তড়িঘড়ি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করল? এ প্রশ্নের জবাবে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যারা পরিচালনা করেন তারা অনির্বাচিত। তাদের দ্বারা নির্বাচন করা গণতান্ত্রিক ধারার পরিপন্থী। উন্নত বিশ্বে এভাবে নির্বাচন হয় না। ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই হয়। কাজেই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচন হবে তার নিয়ন্ত্রিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে। তাদের এই ব্যাখ্যা, গণতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক দেশে স্বীকৃত ব্যবস্থা হলেও বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে তা বাস্তবায়ন শুধু কঠিনই নয়, অসম্ভবও বটে। কারণ, বাংলাদেশে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে রাজনৈতিক কোনো সমঝোতা বলতে কিছু নেই। এই সিস্টেমই গড়ে উঠেনি। এই অসমঝোতার অপসংস্কৃতির মধ্যে একদল আরেক দলের অধীনে নির্বাচনে যাবে, তা কল্পনাও করা যায় না। এ বাস্তবতায়, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করছে। দলটির যুক্তিও আছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না, তার দৃষ্টান্ত ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন। নির্বাচন দুটি কেমন হয়েছে, তা বোধকরি ব্যাখ্যা করে বলার অবকাশ নেই। বিএনপি মনে করছে, বর্তমান সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে কোনভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। জরিপ করলে দেখা যাবে, দলটির এ দাবীর প্রতি দেশের সিংহভাগ মানুষ একমত হবে। এমনকি আওয়ামী লীগ স্বীকার না করলেও, তারাও জানে, দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। তা নাহলে, তারা ’৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আন্দোলন করত না।
দুই.
সচেতন ও চিন্তাশীল মানুষ একমত হয়েছেন, আর যাই হোক, আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। কারণ, প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল একে অপরকে বিশ্বাসই করে না। তাদের অবস্থান দুই মেরুতে। এই সময়ে এসে একদল আরেক দলের অধীনে নির্বাচন করবে, তা মনে করার কোনো কারণ নেই। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল যদি আওয়ামী লীগ পরবর্তী দুইটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে বলে আদলত যে রায় দিয়েছিল, তা মেনে চলত। তখন প্রত্যেকটি দলই পরবর্তী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হবে বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তুত হতে পারত। এতে সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে সমঝোতা এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠার মতো মাইন্ডসেট সৃষ্টি হতো। এছাড়া অন্যকোনো উপায়ও থাকত না, কথা বলার সুযোগও তৈরি হতো না। আওয়ামী লীগ তা না মেনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অহমে এবং নানা অপবাদ দিয়ে বিরোধীদলের উপর দমনÑপীড়ন করে দূরে ঠেলে দেয়। চিন্তাশীল মানুষ মনে করছে, বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাসহ হাজার হাজার কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেলে ঢোকানো এবং দলনÑপীড়নে কোনঠাসা করে তার অধীনে নির্বাচনের আহ্বান প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। অনেকেই বিভিন্ন টক শোতে বলছেন, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নির্বাচিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে কোন না কোন সময় নির্বাচন করতেই হবে। তারা উদাহরণ হিসেবে ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট মিনিস্টার সিস্টেম তুলে ধরেন। তারা এ বাস্তবতা উপলব্ধি করছেন না, ওয়েস্ট মিনিস্টার সিস্টেমে নির্বাচন করতে হলে বিরোধীদলের আস্থা অর্জন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং সহবস্থান নিশ্চিত করা জরুরী। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলোতে বিরোধীদলের উপর দমনÑপীড়ন করে তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টি করা হয় না। সেখানে সরকার ও বিরোধীদলের মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও পারস্পরিক সহবস্থান ও বিরোধীদলের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয় না। তাদের মাথায় গুটিকয় ব্যক্তির উন্নতির স্বার্থচিন্তা থাকে না, থাকে দেশের উন্নতির চিন্তা। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগে দলকে নয়, দেশকে প্রাধান্য দেয়। আমাদের দেশের সরকার ও বিরোধীদলগুলোর মধ্যে এ চিন্তার অনুশীলন অতীতেও হয়নি, এখনও হচ্ছে না। এ কারণেই নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান জরুরী। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সরকারের মনে যদি এ শুভবুদ্ধির উদয়ও হয়, বিরোধীদলকে আস্থায় নেয়ার জন্য তাদের নেতাÑকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে হয়রানীর জন্য দেয়া মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি এবং বিরোধীদলের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালনা করতে দেয়া হবে, তাহলেও অনেক দেরি হয়ে গেছে। এমন ভাবার কারণ নেই, বিগত চার বছরে বিরোধীদলের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে তাদের মনের ক্ষোভ প্রশমিত হওয়া সহজ নয়। বর্তমানে নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, এ নিয়ে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সংলাপের বিষয়টি ভলিবল খেলার মতো হয়ে গেছে। সরকারি দল সংলাপ নামক বলটি একবার বিরোধীদলের কাছে ভলি করে পাঠাচ্ছে, বিরোধীদলও একইভাবে সরকারের দিকে ভলি করে পাঠাচ্ছে। তাতে কেউ পয়েন্ট পাচ্ছে না। বলটি হাওয়ায় ভাসছে। তবে এবার সংলাপের কথা বলা হলেও বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। দলটি বলছে সংলাপ নিয়ে সরকার নতুন করে ফাঁদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কাজেই এ ফাঁদে দলটি পা দেবে না এবং সংলাপেও যাবে না। তবে যদি তার দাবি অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সংলাপ করা হয়, তবে যাবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকার যদি শুরু থেকেই আন্তরিকভাবে বিরোধীদলকে আস্থায় নিয়ে সংলাপ চালিয়ে যেত, তবে বর্তমানে এ দুর্গতির সৃষ্টি হতো না।
তিন.
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিকল্প নেই। শুধু নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারই যথেষ্ট নয়, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বস্তরে সংস্কার প্রয়োজন। বর্তমান প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বত্র দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। বলা বাহুল্য, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, সে তার মতো করে প্রশাসনকে দলীয়করণ করে। প্রশাসনকে প্রশাসনের মতো চলতে দেয়া হয় না। দলীয় আনুগত্যের নিরিখে প্রশাসন পরিচালনা করা হয়। দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন দলের অনুগত কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়। সরকারের প্রশ্রয়ে প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাও ভোল পাল্টে দলীয় লোক বলে পরিচয় দিতে উঠেপড়ে লাগে। সরকারও প্রশাসন যন্ত্রকে দলের মতো পরিচালনা করতে শুরু করে। ক্ষমতা ছাড়ার সময় তাদের এ বিশ্বাস থাকে, অনুগত কর্মকর্তারা নির্বাচনে তাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ ধারণা যে ভুল, অতীতে তা বহুবার দেখা গেছে। যখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছে, তাদের সাজানো প্রশাসন ভেঙ্গে অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় বা রাষ্ট্রের প্রকৃত ইন্সট্রুমেন্টে পরিণত করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রশাসনিক পুর্নবিন্যাসে বিগত যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো সুষ্ঠু ও দেশÑবিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে প্রশাসন দলীয়করণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। পত্রÑপত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই কর্মকর্তাদের মধ্যে নিজেদের আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে জাহির করার তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এমনকি কেউ কেউ পদোন্নতি পাওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নিয়ে কবিতা লেখা শুরু করেন। এ ধরনের কর্মকর্তাদের কারণেই প্রশাসন তার নিজস্ব চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চলতে পারছে না। অন্যদিকে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, দলীয় আনুগত্যে যারা উচ্চপদে আসীন হয়েছেন, তারা এখন আতঙ্কে। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি চালু করেছে এবং আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হওয়া নিয়ে দেশটির অনড় অবস্থানের কারণে কেউ কেউ আতঙ্কে ভোল পাল্টানো শুরু করেছে। তাদের এই আতঙ্ক ও ভোল পাল্টানো থেকেই বোঝা যায়, প্রশাসন ব্যাপক হারে দলীয়করণ হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক কথাবার্তা বলার কোন কারণ নেই। তারা কাউকে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে পারেন না। তাদের এই রাজনৈতিক চর্চা পুরোপুরি বেআইনি। এসব হচ্ছে প্রশাসনকে রাজনীতিকরণের ফলে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার জরুরী। কাজেই, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে প্রশাসনকে দলীয়করণমুক্ত করা অপরিহার্য। দলীয় আনুগত্যের প্রশাসন দিয়ে কোনভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। শুধু প্রশাসন নয়, নির্বাচন কমিশনকেও দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা প্রয়োজন। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, যেভাবে প্রশাসনের সর্বত্র দলীয়করণ করা হয়েছে, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা অসম্ভব। ক্ষমতাসীন দল যতই বলুক নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, তবে তার স্বাধীনতা শুধু কাগজেÑকলমে।
চার.
তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার এবং প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারের মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি ছাড়া জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নজির এখনও সৃষ্টি হয়নি। সৃষ্টি হওয়ার মতো পরিবেশ ও পরিস্থিতির লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। যদি তাই হতো, তাহলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ’৯৬ এবং ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি ও জোট সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো। তারা জানত, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সাজানো প্রশাসন দিয়ে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হতো না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি প্রশাসনকে ঢেলে সাজিয়েছিল বলেই সেসব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ ও তার জোট বিজয়ী হয়েছিল। আগেই বলা হয়েছে, প্রধান দুই দলের মধ্যে পারস্পরিক এমন কোন আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপিত হয়নি যে, একে অন্যের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। ক্ষমতাসীন সরকার যতই বলুক, তাদের অধীনে নির্বাচন হলে প্রশাসনের উপর কোন হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার করা হবে না, তারা রুটিন ওয়ার্ক করবেÑতাদের এ কথা সচেতন মহলে এখন আর বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। পর্যবেক্ষকরা মনে করছে, বর্তমান প্রশাসন যেভাবে দলীয়করণ এবং নির্দেশনামূলক অবস্থায় রয়েছে, তাতে হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের প্রয়োজন নেই। প্রশাসন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তাদের পক্ষে কাজ করবে। দলের প্রতি আনুগত্যের বাইরে দলীয় কর্মকর্তাদের কাজ না করাই স্বাভাবিক। এ বাস্তবতায় নির্দলীয় ও দলীয়করণমুক্ত প্রশাসন ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
নির্বাচনে কারা যোগ্য, সে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি: বদিউল আলম মজুমদার
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
রেমিট্যান্সে সুবাতাস: ডিসেম্বরের ২১ দিনেই এলো ২০০ কোটি ডলার
প্রশাসন ক্যাডারের ‘ইয়াং অফিসার্স’ ফোরামের সভাপতি শুভ, সাধারণ সম্পাদক জয়
ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও কেওক্রাডং বাংলাদেশ’র উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ছাত্র জনতার বিজয়কে নস্যাৎ হতে দেয়া যাবে না
বিপিএল মিউজিক ফেস্ট: যান চলাচলে যে নির্দেশনা ডিএমপির
গাজীপুরের শ্রীপুরে মেঘনা গ্রুপের একটি বাটন তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
সোনারগাঁওয়ে ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা নিহত
আনজার গ্রুপের আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠকদের সংবর্ধনা
মির্জাপুরে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেয়ায় জনদুর্ভোগ এলাকাবাসির মানববন্ধন
মেধা বৃত্তির ফলাফল ঘোষণা করলো উষা
পাহাড় কাটা, বায়ুদূষণ ও নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান জোরদার করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
ফুলপুরে অবৈধ ইট ভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, এক লাখ টাকা জরিমানা
মিরপুরে বেড়েছে চুরি ছিনতাই