রাশিয়া-ইউক্রেন ও হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে?

Daily Inqilab মুহাম্মদ শাহ আলম

৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম

বিশ্ব প্রেক্ষাপট ক্রমাগত সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পক্ষাবলম্বন করে অর্থ ও সামরিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। চীন ও উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। অল্প সময়ের মধ্যেই ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শেষ করবেন এমন প্রত্যাশা নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু করলেও এই যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সহযোগিদের বলেছিলেন, আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে এড়ানোর চেষ্টা করছি। অর্থাৎ ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ববাসীকে বিশেষ করে পরাশক্তি সমূহকে সু¯পষ্টভাবে বিভক্তির দিকে ধাবিত করেছে। তাইওয়ান নিয়ে এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়াকে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ভূখণ্ডের শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য এক মিলিমিটার ভূমিও লঙ্ঘিত হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, পিয়ংইয়ং দুই দেশের ডি ফ্যাক্টো সামুদ্রিক সীমানা স্বীকৃতি দেবে না। দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করতে সংবিধান পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে কিম জং-উন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা ও পুনঃএকত্রীকরণ সংস্থাগুলোকে বাতিল ঘোষণা করেছেন। গত বছর ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর দেশটি গাজায় প্রতিশোধমূলক ও সর্বাত্মক হামলা শুরু করে। এই যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষাবলম্বন করে ইসরায়েলকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে লোহিত সাগরের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যকে সাথে নিয়ে হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ইরাকের কুর্দিস্তানে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোশাদের ‘¯পাই হেডকোয়ার্টারে’ ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের ইসলামিক রেভুলশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নগরী ইরবিলের কাছে এই হামলাটি চালায়। ইরান একই সময় সিরিয়ার নির্দিষ্ট একটি স্থানেও হামলা চালিয়ে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে দুই পাকিস্তানি শিশু নিহত ও একজন আহত হয়েছে। ইরানের এ হামলার ৪৮ ঘণ্টা পর ১৮ জানুয়ারি তেহরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে ইসলামাবাদ। এতে চার শিশু ও তিন নারীসহ ৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। এর আগে ১৭ জানুয়ারি সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের খাশ শহরের সঙ্গে প্রাদেশিক রাজধানী জাহেদানের সংযোগ সড়কে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) একজন কর্নেল হোসেইন আলী জাওয়ানফার। সুন্নি মুসলিমদের একটি চরমপন্থি গ্রুপ জইশ আল-আদল এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। এরইমধ্যে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি হুমকি দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানকে এর মূল্য দিতে হবে। আমরা এর বদলা নেবই। অপরদিকে এই ঘটনায় অনেকটা সুকৌশলে ভারত ইরানকে সমর্থন জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ভাষায়, ‘অনেক সময় আত্মরক্ষায় এমন পদক্ষেপ নেয় রাষ্ট্রগুলো’, এটা আমরা বুঝি।

ইতোমধ্যে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমাগতভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ইরান, লেবানন, ইয়েমেন, সিরিয়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ রকেট হামলা চালাচ্ছে। হামলার জবাবে দক্ষিণ লেবাননের একাধিক শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। হিজবুল্লাহ, হুতিরা হামাসের পক্ষে হামলায় অংশগ্রহণ করছে। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা গত নভেম্বর মাস থেকে পণ্যবাহী জাহাজের উপর হামলা চালিয়ে আসছে। এর জবাবে গত ১২ জানুয়ারি থেকে ব্রিটেনকে সঙ্গে নিয়ে হুতিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। হামলা করা হয় ইয়েমেনের রাজধানী সানা, হুতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা লোহিত সাগরের হুদায়দাহ বন্দর, ধামার এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হুতিদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাদায়। এ অবস্থার মধ্যেও লোহিত সাগরে ইসরাইলগামী বাণিজ্যতরীগুলোতে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইরানের মদদপুষ্ট ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছে আত্মরক্ষার জন্যই এই হামলা। এই ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, বহুপাক্ষিক এই হামলা ‘ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক আত্মরক্ষার স্বভাবগত অধিকারের আওতায়’ চালানো হয়েছে। মার্কিন হামলার জবাবে হুতিদের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে হুঁশিয়ার করে বলেছে, এই নির্মম আগ্রাসনের জন্য তাদেরকে চড়া মূল্য দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা শুধু মাত্র সমুদ্রে জাহাজ নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য এমনটা মনে করা যথেষ্ট নয়, এর সাথে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের স¤পর্ক রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন।

ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে তার পরিণতি স¤পর্কে অনেকেই অবহিত। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ২৪ হাজার। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১০ হাজারই শিশু। আহত ৬০ হাজার ৮০০ জনের বেশি। ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৫০ থেকে ৮০ ভাগ স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসযজ্ঞের পরও শিঘ্রই এ যুদ্ধ নিরসনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। অপরদিকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য কবলিত অপর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেন। ১৯৯০ সালের পূর্বে দেশটি দক্ষিণ ও উত্তর ইয়েমেন নামে আলাদা দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। ১৯৯০ সালে দুই ইয়েমেন এক হলেও দারিদ্র্য, দুর্নীতি, যুদ্ধ বিগ্রহ দেশটিকে বিপর্যস্ত করে তুলে। ইয়েমেনের ব্যাপকভাবে দুঃখ-দুর্দশা শুরু হয় মূলত ২০১১-১২ সাল থেকে। সে সময় ইয়েমেনে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহকে অপসারণের জন্য ইয়েমেনিরা আন্দোলন শুরু করে। বাধ্য হয়ে সালেহ ক্ষমতা ত্যাগ করেন। নতুন সরকার গঠন করেন সালেহের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান মানসুর হাদি। দেশটির উত্তরাঞ্চলে হুতিদের একচেটিয়া সমর্থন থাকায় নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে মানসুর দায়িত্ব নেওয়ার অনেক আগে থেকেই বিদ্রোহ চালিয়ে আসচ্ছিল হুতিরা। ফলে নতুন প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদিকে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি দারিদ্র্য এবং খাদ্য সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছিল। নতুন সরকারের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের শিয়া নেতৃত্বের হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৪ সালে সাডা প্রদেশ এবং আশেপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এরপর বিদ্রোহীরা সানা অঞ্চলেরও নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয়। ২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা মূলত ছিল ইরান ও সউদী আরবের ছায়া যুদ্ধ। এই যুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নেয় ২০১৫ সালের মার্চে, সেই সময় সউদী নেতৃত্বাধীন জোট মানসুর হাদি সরকারের পক্ষ নিয়ে হুতিদের উপর হামলা চালায়। ২০১৮ সালে লোহিত সাগরের বন্দর নগরী হুদেইদাহের নিয়ন্ত্রণের জন্য হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের মদদপুষ্ট সামরিক বাহিনী। সে সময় হুতিরাও আরব আমিরাতে হামলা চালায়। গত প্রায় এক যুগ ধরে চলা এই সংঘাত মূলত সউদী আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্সি যুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনে আনুমানিক দুই লাখ ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্য এক লাখ ৩১ হাজার মারা গেছেন পরোক্ষ কারণ যেমন খাদ্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং অবকাঠামোর অভাবে। এক কোটি ১০ হাজারের বেশি শিশু মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। প্রায় ২২ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। ৪৫ লাখের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই অনিরাপদ শিবিরে বাস করছেন। স্কুল ও হাসপাতালসমূহের ক্ষতি এবং বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে লাখো শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হয়েছে।

ইয়েমেনের ভৌগোলিক অবস্থান এবং বাব আল-মান্দেব প্রণালির কারণে ইয়েমেন ইরান, সউদী আরবসহ আশপাশের দেশগুলোর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাব আল-মান্দেব লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরকে সংযোগকারী একটি প্রণালি যেটি আরব উপদ্বীপে অবস্থিত ইয়েমেন এবং হর্ন অব আফ্রিকা অন্তরীপে অবস্থিত জিবুতি, ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়াকে পৃথক করেছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল সরবরাহকারি রুটের একটি। এর মধ্যে দিয়ে চীন, সউদী আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো থেকে ইউরোপ এবং এশিয়ায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহন করা হয়। আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সমুদ্রবাণিজ্য ও বাণিজ্যের জন্যও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র পথ। বাস্তবতা হচ্ছে, গাজায় আগ্রাসন, ইয়েমেনে হামলা, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তে চলমান সংঘাত, লেবাননে হামলা চালিয়ে হামাস অথবা হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যা, ইরানের সামরিক কমান্ডারদের হত্যা এ সবকিছু শুধু আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। এর পরিধি মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা বৃদ্ধি করছে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও ব্যাপকতা এবং নির্ভরশীলতা উন্নয়ন অগ্রগতির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রতিটি রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষিত করা হয়ে থাকে। ফলে প্রতিপক্ষের তথ্য চুরি করার জন্য অপরাধী চক্র সাইবার হামলা পরিচালনা করে থেকে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাইবার হামলার অভিযোগ উত্থাপন করে থাকে। এই অবস্থায় অদূরভবিষ্যতে সাইবার হামলার কারণে যুদ্ধ বেঁধে গেলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। সর্বশেষ জার্মান পত্রিকা বিল্ড-এর উদ্ধৃতি দিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এক খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে পারে রাশিয়া। জার্মানির এমন শঙ্কার কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংঘাতের প্রস্তুতিও নিচ্ছে জার্মানি। সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়, রাশিয়া আগামী বছর সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র দেশগুলোতে আক্রমণ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ আরও প্রসারিত করতে পারে। আর এটিকেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাব্য শুরু বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যদিও রাশিয়ান কর্মকর্তারা বিল্ডের এই প্রতিবেদনটি ভুয়া বলে অভিযুক্ত করে কোনও ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি। সংবাদপত্রটি এই তথ্য জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোপন নথি থেকে পেয়েছে বলে জানিয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধ কি আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে? এমন প্রশ্ন সামনে ঘুরপাক খাচ্ছে।যদিও আমরা মনে করি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিশ্বের পরাশক্তি সমূহের কাছে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান, ভারতের মত দেশে অত্যাধুনিক পারমাণবিক বোমা এবং পারমাণবিক ওভারহেড বহনে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। অনেকের ধারণা, ইরান, ইসরায়েলের ও উত্তর কোরিয়ার মত দেশের কাছেও পারমাণবিক বোমা রয়েছে। আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আনবিক বোমার ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছি। এর ভয়াবহতা স¤পর্ক বিশ্ববাসী অবগত। ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে শুরু হলে এবং পার¯পরিক সন্দেহের কারণে যদি পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করা হয়, তবে পরিণতি কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

লেখক : আইনজীবী।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আখাউড়ায় মুরাদ হোসেন ভূইয়াকে সমর্থন দিলো আওয়ামী লীগ

আখাউড়ায় মুরাদ হোসেন ভূইয়াকে সমর্থন দিলো আওয়ামী লীগ

সদ্য ভূমিষ্ঠ সব শিশুর নামে একটি করে গাছ লাগাবে সৌদি আরবের হাসপাতাল

সদ্য ভূমিষ্ঠ সব শিশুর নামে একটি করে গাছ লাগাবে সৌদি আরবের হাসপাতাল

নাম ফলকে বাংলা না থাকলে ব্যবস্থা নেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি

নাম ফলকে বাংলা না থাকলে ব্যবস্থা নেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি

অস্বাভাবিক তাপমাত্রা আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টির লক্ষণ  জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান

অস্বাভাবিক তাপমাত্রা আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টির লক্ষণ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান

মধুখালিতে দু’সহোদর শ্রমিক হত্যা সারাদেশে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল পালিত

মধুখালিতে দু’সহোদর শ্রমিক হত্যা সারাদেশে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল পালিত

ছেলের মৃত্যুর মাত্র ৪ দিন পর বাবার মৃত্যু!

ছেলের মৃত্যুর মাত্র ৪ দিন পর বাবার মৃত্যু!

অবশেষে কুমিল্লার রসমালাই জিআই পণ্যের স্বীকৃতির তালিকায়

অবশেষে কুমিল্লার রসমালাই জিআই পণ্যের স্বীকৃতির তালিকায়

দৌলতপুরে অগ্নিকান্ডে ১৪ বিঘা জমির পানবরজ পুড়ে ছাই

দৌলতপুরে অগ্নিকান্ডে ১৪ বিঘা জমির পানবরজ পুড়ে ছাই

বিজয়নগরে জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম সহ গ্রেপ্তার ৩

বিজয়নগরে জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম সহ গ্রেপ্তার ৩

স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেও তামাশায় রূপান্তরিত করেছে আওয়ামী লীগ : রিজভী

স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেও তামাশায় রূপান্তরিত করেছে আওয়ামী লীগ : রিজভী

চিলমারীতে আনারস প্রতীক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা

চিলমারীতে আনারস প্রতীক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা

খেলার শুরুর চার ওভার পর ফের বৃষ্টির হানা, ডিএল মেথডে এগিয়ে বাংলাদেশ

খেলার শুরুর চার ওভার পর ফের বৃষ্টির হানা, ডিএল মেথডে এগিয়ে বাংলাদেশ

দেশে মুক্ত চিন্তার মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চলছে: মির্জা ফখরুল

দেশে মুক্ত চিন্তার মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চলছে: মির্জা ফখরুল

চুয়াডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়নের হুদাপাড়ায় আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হলো ৭ পরিবার

চুয়াডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়নের হুদাপাড়ায় আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হলো ৭ পরিবার

‘এনবিআরের অভিযান’ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যাখ্যা

‘এনবিআরের অভিযান’ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যাখ্যা

নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা

নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা

অস্ট্রেলিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত

অস্ট্রেলিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত

সৈয়দ আহমদ শহিদ বেরলভী (র.) ইসলামি আন্দোলনের আপোসহীন মডেল -আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ

সৈয়দ আহমদ শহিদ বেরলভী (র.) ইসলামি আন্দোলনের আপোসহীন মডেল -আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ

নাইজারে মার্কিন বাহিনীর বিমান ঘাঁটিতে রুশ সেনা

নাইজারে মার্কিন বাহিনীর বিমান ঘাঁটিতে রুশ সেনা

২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার গান্ধী পরিবারের কোনো প্রার্থী নেই আমেথিতে

২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার গান্ধী পরিবারের কোনো প্রার্থী নেই আমেথিতে