সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার মধ্যে শিক্ষার্থী নির্যাতন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এই ভয়াবহ রূপ সরকারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশি লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংস্কৃতির চর্চার চেয়ে বিকৃত মানসিকতার চর্চার পরিমাণই বেশি। আর এর একটি বাহ্যিক নিদর্শন হলো শিক্ষার্থী নির্যাতন। নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নীরবে ক্যাম্পাসে টিকে থাকার সংগ্রাম করে। অনেকে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এমনকি আত্মহত্যার মতো অনিবার্য অপ্রত্যাশিত ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। আর এসব অভিযোগের তীর বরাবরই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন এবং কিছু নীচু মানসিকতার শিক্ষকের দিকে যায়। ২০২১ সালে প্লান্ট ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে ‘চ্যালেঞ্জিং ফেয়ার অফ ভায়োলেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী সিনিয়র সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হয়রানি, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হচ্ছে। দেশের প্রতিটি পাবলিক ইউনিভার্সিটির নীতিমালা রয়েছে এবং সেখানে উল্লেখ করা আছে যে, একজন অপরাধী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা এমনকি আইনের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করলেও সাময়িক বহিস্কার ছাড়া বড় ধরনের শাস্তি দেওয়া হয় না, ফলে পার পেয়ে যায় অপরাধীরা এবং তাদের অপরাধের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। তাই এই নির্যাতন-নিপীড়ন নির্মূল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ, সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত।

মো. ইয়ামিন আলী
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।