পিলখানা হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে

Daily Inqilab ব্রি জে (অব.) রোকন উদ্দিন

২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া হত্যাকা- বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর একটি। ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁদের মধ্যে ছিলেন দেশের কিছু সর্বোচ্চ সম্মানিত সামরিক নেতা, নির্মমভাবে নিহত হন। কর্মকর্তাদের পাশাপাশি, এই বর্বরোচিত অপরাধে প্রাণ হারান কিছু নিরীহ বেসামরিক ব্যক্তিও। এই হত্যাকান্ডের যে নৃশংসতা দেখা গেছে, তা অকল্পনীয়, দেহাবশেষ এতটাই বিকৃত ছিল যে অনেককে চেনা সম্ভব হয়নি, পরিবারগুলো অপমানিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিল এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণভাবে ভেঙে পড়েছিল।

এই হত্যাকান্ড শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ভিত্তিকেও নাড়িয়ে দিয়েছিল। এসব কর্মকর্তার মৃত্যুর মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর চেইন অব কমান্ড এবং মনোবল গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একইসঙ্গে, সশস্ত্র বাহিনী ও আধা-সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়ে। এই ট্র্যাজেডি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত করে এবং এমন একটি ঘটনাকে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে, সবচেয়ে নিরাপদ স্থাপনাগুলোর মাঝে কীভাবে সংঘটিত হতে পারল তা নিয়ে উদ্বেগজনক প্রশ্ন তোলে।
সাড়ে পনের বছর পরেও নিহতদের জন্য ন্যায়বিচার অধরা রয়ে গেছে। এতদিন পেরিয়ে গেলেও, জাতীয় চেতনায় সৃষ্ট ক্ষত এখনও পূরণ হয়নি। নিহত কর্মকর্তাদের পরিবারগুলো এখনও নীরব যন্ত্রণা ভোগ করছে এবং সান্ত¡নার অপেক্ষায় আছে। অনেক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা এবং বেসামরিক নাগরিক পুনঃতদন্তের ধীরগতি এবং স্বচ্ছ কার্যক্রমের অভাব নিয়ে গভীর হতাশা ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন। হত্যাকান্ডের পেছনের রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় এবং অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা থেকে যাওয়ায় এই বিশ্বাসঘাতকতা এবং ক্ষতির অনুভূতি আরও গভীর হয়েছে।

অপরাধের প্রকৃতি: পিলখানা ট্রাজেডি ছিল হত্যাকান্ড, কোনো সাধারণ বিদ্রোহ নয়। এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত ও সমন্বিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম, যা বার্ষিক ‘বিডিআর সপ্তাহ’ চলাকালে সংঘটিত হয়। এটি ছিল একটি উদযাপন ও সৌহার্দ্যের সময়, যা নির্মম রক্তপাতের দৃশ্যে পরিণত হয়। সৈনিকদের একাংশ বা নামধারীরা অফিসারদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকা-ের সঙ্গে ছিল ব্যাপক লুটপাট, কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি অপমানজনক আচরণ এবং বিডিআরের সারিতে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা। এই নৃশংসতা শুধু হত্যাকা-েই সীমাবদ্ধ ছিল না। সিনিয়র কর্মকর্তারা শুধু নিহত হননি; তাঁদের মর্যাদা ও সম্মান লঙ্ঘিত হয়। তাঁদের পরিবারগুলোর প্রতি হুমকি দেওয়া হয়, কেউ কেউ জোরপূর্বক আটক হন, আবার কেউ মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, যখন তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের খবরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই হত্যাকা-ের ফলে জাতির মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, তা গভীরভাবে নাড়া দেয় এবং মানুষকে ভাবতে বাধ্য করে যে, এমন অবর্ণনীয় সহিংসতার কারণ কী হতে পারে।

প্রশ্ন ও অজানা রহস্য: কীভাবে এটা ঘটল? এটি কি শুধুমাত্র বেতন, কর্মপরিবেশ এবং কথিত দুর্ব্যবহারের কারণে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল? নাকি এটি ছিল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ? হামলার পরিকল্পিত প্রকৃতি এবং সামরিক নেতৃত্বের ওপর সরাসরি আঘাত ইঙ্গিত দেয় যে, এই ঘটনার পেছনে ব্যারাকের বাইরে থাকা প্রভাবশালী কারও হাত থাকতে পারে।

হত্যাকা-ের পেছনে বিদেশি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে। এই আক্রমণের সময়কাল, পরিশীলন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বোঝায় যে, এটি হয়তো শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ ব্যাপার ছিল না, বরং ছিল একটি বহিরাগত সমর্থিত অপারেশন। এর সম্ভাব্য উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত সংঘর্ষে, যেমন পদুয়া ও রৌমারীতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিজয়ের প্রতিশোধ। এই বিজয়গুলোতে বাংলাদেশি বাহিনীর সক্ষমতা দেখিয়েছিল এবং হয়তো এটা প্রতিপক্ষকে ক্ষুব্ধ করেছিল, যারা এর সামর্থ্যকে দুর্বল করতে চেয়েছিল।

একটি সমন্বিত সন্ত্রাসী কর্মকা-: এই সহিংসতা ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত। অনেক কর্মকর্তাকে নির্দিষ্ট করে টার্গেট করা হয় এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ভিকটিমদের কোণঠাসা করা হয়, নির্যাতন চালানো হয় এবং নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁদের দেহে দেখা যায় বিকৃতির ভয়ঙ্কর চিহ্ন, যা সন্ত্রাসীদের নৃশংসতার গভীরতা প্রকাশ করে। সেই সময় পরিবারগুলোকে আটক রাখা হয়, মানসিক নির্যাতনের শিকার করা হয় এবং এমন আচরণ করা হয়, যা মানবিকতার সব সীমা অতিক্রম করে।

বিদেশি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ: অনেকের বিশ্বাস, পিলখানা হত্যাকান্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। ধারণা করা হয়, প্রতিবেশী ভারত পদুয়া এবং রৌমারী সীমান্ত সংঘর্ষে লজ্জাজনক পরাজয়ের শিকার হয়েছিল, সে এর মাধ্যমে সেই হত্যাকা-ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। তার এই পরাজয় বাংলাদেশের সামরিক শক্তির সক্ষমতা প্রদর্শন করেছিল এবং জাতীয় মনোবলকে শক্তিশালী করেছিল, যা শত্রুপক্ষের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমালোচকরা অভিযোগ করেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই বিদ্রোহ উসকে দিয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে অস্থিতিশীল করা। এই তত্ত্বের সমর্থকরা ইঙ্গিত করেন যে, সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের নির্দিষ্টভাবে টার্গেট করা, দ্রুতগতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং তথাকথিত বিদ্রোহীদের সুপরিকল্পিত দাবি, এসবই শুধুমাত্র বেতন ও সুবিধার মতো ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট বিদ্রোহের চেয়ে অনেক বেশি পরিকল্পিত বলে মনে হয়।

এই সন্দেহকে আরও বাড়িয়ে দেয় যে, পিলখানা হত্যাকা- বাংলাদেশের সামরিক চেইন অব কমান্ডকে কার্যত পঙ্গু করে দিয়েছিল। অনেকে মনে করেন, এই ফলাফল ভারতের স্বার্থের সঙ্গে মিলে যায়, যে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে দুর্বল করতে চেয়েছিল। পর্যবেক্ষকরা আরও উল্লেখ করেছেন যে, বিদ্রোহের সময় বহিরাগত যোগাযোগ বা অর্থায়নের কোনো সম্ভাব্য সূত্রের উপর কোনো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়নি।

হাসিনা সরকারের প্রতিক্রিয়া: পিলখানা হত্যাকান্ডের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার চাপের মুখে পড়ে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে এবং জনআস্থা পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে। সরকার কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যেমন, সন্দেহভাজন বিডিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় চালানো এবং বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা, তাদের সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া অনেকের দৃষ্টিতে ছিল অপর্যাপ্ত এবং আংশিক। বিদ্রোহের পর হাজার হাজার বিডিআর সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শত শত জনকে মৃত্যুদ- ও যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। তবে সমালোচকরা মনে করেন, সরকারের পদক্ষেপে গভীরতা ও ন্যায্যতার অভাব ছিল। নি¤œস্তরের বিডিআর সৈনিকদের কঠোর শাস্তি প্রদানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, অথচ হত্যাকা-ের মূল হোতাদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে গড়িমসি করা হয়েছে। এই বাছাইমূলক পদ্ধতি সরকারের সত্যিকার উদ্দেশ্য এবং তদন্তের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

সরকারের তদন্ত পরিচালনার পদ্ধতি বিদেশি প্রভাব নিয়ে সন্দেহও উসকে দেয়, বিশেষত ভারতের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে। সমালোচকরা উল্লেখ করেন, কিছু সংবেদনশীল বিষয়, যেমন সম্ভাব্য বিদেশি সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা, সরকারের বিবরণে লক্ষণীয়ভাবে অনুপস্থিত ছিল। অনেকের ধারণা, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এই ধরনের দিকগুলো পর্যাপ্তভাবে অনুসন্ধান করা হয়নি। এই স্বচ্ছতার অভাব একটি পূর্বপরিকল্পিত গোপনীয়তার ধারণা আরও শক্তিশালী করেছে। ফলে হত্যাকা-ের পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। তদুপরি, বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো উল্লেখ করেছে যে, হাজার হাজার সন্দেহভাজনকে একত্রে বিচার করা হয়েছিল, যেখানে ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা বা যথাযথ প্রক্রিয়ার সুযোগ সীমিত ছিল। এই প্রক্রিয়ার দ্রুততা, সম্ভবত দৃঢ় পদক্ষেপ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে করা, এর গ্রহণযোগ্যতা আরও দুর্বল করেছে। অনেকেই এখন মনে করেন যে, নিরীহ নি¤œস্তরের সৈনিকদের বলির পাঁঠা করা হয়েছে, আর বিদ্রোহের প্রকৃত পরিকল্পনাকারীরা মুক্ত থেকে গেছে।

জাতীয় আলোচনায় পিলখানা হত্যাকা- মোকাবিলায় হাসিনা প্রশাসনের ব্যর্থতা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার উপর দীর্ঘস্থায়ী কালো ছায়া ফেলেছে। অনেকের কাছে, মূল পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে ব্যর্থতা এবং বিদেশি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ দূর করতে অক্ষমতা হয় সত্যের মুখোমুখি হওয়ার ইচ্ছার অভাব অথবা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য একটি গভীর ভূরাজনৈতিক আপস নির্দেশ করে। এই অমীমাংসিত ট্র্যাজেডি জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ ও সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলে, যা একটি নতুন, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি আরও জোরালো করেছে।
বিচার বিলম্বিত: তদন্তের সীমাবদ্ধতা: এই হত্যাকান্ডের পর আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি তদন্ত শুরু করে এবং বিচার প্রক্রিয়া চালায়। হাজার হাজার বিডিআর সদস্য গ্রেপ্তার হন এবং অনেককে মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। তবে এই তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নানা অভিযোগে জর্জরিত ছিল, যা কেবল নি¤œপদস্থ কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং বিদ্রোহের মূল পরিকল্পনাকারীদের উপেক্ষা করেছিল। সমালোচকরা মনে করেন, সরকারের প্রতিক্রিয়ায় গভীরতা ও স্বচ্ছতার অভাব ছিল। অনেকের কাছে এটি ছিল কেবলমাত্র কার্যকলাপ প্রদর্শনের একটি প্রচেষ্টা, যা প্রকৃত সত্য উদঘাটনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। বিডিআর-এর নাম পরিবর্তন করে বিজিবি করা অনেকের মতে ছিল বিদ্রোহের অন্ধকার ইতিহাস চাপা দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা।

বর্তমান পরিস্থিতি: নতুন আশার সঞ্চার, অবশিষ্ট সন্দেহ একটি ‘রক্তাক্ত বিপ্লব’-এর মাধ্যমে একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর, ন্যায়বিচারের জন্য নতুন করে দাবি উঠে এসেছে। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারা এবং নিহতদের পরিবার পিলখানা হত্যাকা-ের ঘটনাগুলোর একটি স্বচ্ছ পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে:

মূল তদন্তের ফলাফলগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখা জরুরি, কারণ অনেকের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপেক্ষা করা হয়েছে বা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করা হয়েছে। একটি পুনঃতদন্তে ফরেনসিক তথ্য, সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং লুকানো রেকর্ডগুলো বিশ্লেষণ করা উচিত।

তথাকথিত বিদ্রোহে সরাসরি জড়িত সৈনিকদের শাস্তি দিয়ে ন্যায়বিচার সম্পন্ন করা যাবে না। প্রকৃত পরিকল্পনাকারী বা অর্থায়নকারী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা উচিত। বিদেশি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এবং পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা বিবেচনায় একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থা তদন্তের তদারকি করতে পারে। জাতিসংঘ বা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালগুলো এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পুনঃতদন্ত প্রক্রিয়ায় সামরিক নেতৃত্বকে অন্তর্ভুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের অংশগ্রহণ শুধু তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে না, বরং সশস্ত্র বাহিনী ও রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।

গণদাবি অনুযায়ী, পিলখানা হত্যাকান্ড পুনঃতদন্তের জন্য একটি শক্তিশালী, স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনে সৎ ও অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, সামরিক বিশেষজ্ঞ, যারা চেইন অব কমান্ড সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞান রাখেন এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক থাকতে হবে। কমিশনের লক্ষ্য হতে হবে, মূল পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করা, অজানা সত্য উদঘাটন করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ট্র্যাজেডি এড়াতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের সুপারিশ করা। আওয়ামী সরকারের সুবিধভোগী, দালাল বা কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে যেনো নিয়োগ দেয়া না হয় সরকারের তা খেয়াল রাখতে হবে।

লেখক: নিরাপত্তা বিশ্লেষক।


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিহারীরা কেমন আছে
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্ব্যর্থহীন উচ্চারণ
বিহারিরা কেমন আছে
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
আরও

আরও পড়ুন

প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস

প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস

৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়

৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়

বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়

বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়

ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড

ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক