'তারেক রহমানকে নিয়ে পোস্ট করে রোষানলে জয় চৌধুরী, ধরা পরে গেছে আওয়ামী দালালি'
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
প্রিয় পাঠকরা নিশ্চয়ই গিরগিটি চিনে থাকবেন। এই গিরগিটির একটি আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্য সৃষ্টিকর্তা দিয়ে দিয়েছেন। সেটা হলো যে, গিরগিটি যখন চাইবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সে নিজের দেহের রং পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু গিরগিটির সেই বৈশিষ্ট্যও বোধ হয় আওয়ামী দালালদের ধারে কাছেও নেই। অবৈধ হাসিনা সরকার দেশকে ধ্বংস করে গেলেও তারা কিন্তু নিজেদের জাত চিনিয়ে গেছে। হাসিনা পালালেও তার দোসরগুলো এমনভাবে চলাফেরা করছে, কথা বলছে,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদেরকে মোটামুটি ফেরেশতা দাবি করা এই দালালগুলো আদতে এক একটি ইবলিশ শয়তান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার সবথেকে বড় দোসর ছিল তথাকথিত এই দালালগুলো যারা নিজেদেরকে দাবি করে থাকেন শিল্পী। সম্প্রতি এমনই এক দালালকে নিয়ে তোলাপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
হাসিনার ম্যান খ্যাত জায়েদ খানের একনিষ্ঠ কর্মী ছিল ঢাকাই চলচ্চিত্রের তথাকথিত নায়ক জয় চৌধুরী। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রশংসায় যেন পঞ্চমুখ জয়। যেন তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যে চায় তারেক রহমান দেশে আসুক এবং দুর্দশাগ্রস্থ এই জনপদের হাল ধরুক। জয় চৌধুরী নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে তারেক রহমানের প্রসংশা করায় এবং তাকে দেশে আসার আহ্বান জানানোয় চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকেই বিভ্রান্ত। বিএনপিকে নিয়ে পোস্ট তো দূরে থাকে আওয়ামীলীগ নেতাদের পা চেটেই সময় পেতেন না জয়। তার বন্ধু বান্ধব, চলাফেরা ছিল সকল দুর্নীতিগ্রস্থ আওয়ামী পরিবারের সাথে।
হঠাৎ এমন অদ্ভুত পরিবর্তন দেখে তার ফেসবুক অনেকেই কমেন্ট করেছেন, ‘হঠাৎ সুর বদলানো বন্ধ করেন।’ আবার আরেকজন লিখেছেন, ‘নতুন করে সুবিধা নিতেই এমন ফেসবুক পোস্ট করেছেন তিনি’। ঘটনা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে জয় চৌধুরীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাওয়া সহকর্মী অভিনেতা সাইফ খান জয়ের মন্তব্যের ঘরে জয়ের আওয়ামী দালালির স্ক্রিনশট প্রকাশ করেছেন।
বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করলেও তা হয়েছে যাচ্ছে তাই। দর্শক বিমুখ হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে এই দালালের সিনেমা। তাকে যতটা না অভিনেতা হিসেবে চেনে মানুষ, তার থেকে বেশি গুন্ডা হিসেবে চেনে। কেননা সর্বশেষ শিল্পী সমিতির নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ভয়াবহভাবে মারধর করে আলোচনায় আসেন জয় চৌধুরী।
এছাড়াও চলচ্চিত্র সূত্র থেকে জানা যায়, জয় চৌধুরী আরেক সমালোচিত চিত্রনায়ক জায়েদ খানের একনিষ্ঠ অনুরাগী। এমনকি জায়েদ খানের ছোট ভাই হিসেবেও নিজেকে বিভিন্ন মহলে পরিচয় দিতেন। চিহ্নিত এই দালালকে দেখা যেত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা–কর্মীর সঙ্গে। আওয়ামীলীগের নির্বাচনি প্রচারণা থেকে শুরু করে, নানা সময় মুজিব কোট পরিধান করা অবস্থায় দেখা যেত আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘তারেক রহমান, আপনি স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান। আপনি সংস্কৃতিবান্ধব তারুণ্যের অহংকার, গণমানুষের নেতা। সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দ্রুত ফিরে আসুন আমাদের মাঝে, আপনার অপেক্ষায় প্রিয় বাংলাদেশ।’
হঠাৎ এমন তেলবাজি করায় অনেকেই জয় চৌধুরীকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নিজ সহকর্মীরা জয়কে চিনছে আবার নতুন করে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাইফ খান জানান, জয় চৌধুরীকে তিনি বহু আগে থেকেই চেনেন। যখনই সুযোগ পেয়েছে আওয়ামীলীগ থেকে জন নিয়েছে বহু সুযোগ সুবিধা। এ বিষয়ে সাইফ বলেন, ‘একজন শিল্পীর মতাদর্শ আলাদা থাকতেই পারে, তার সঙ্গে শ্রদ্ধা–ভালোবাসা জড়িত। কিন্তু হঠাৎ করে জয়ের রূপ বদলে হতবাক হয়েছি। এটা কীভাবে সম্ভব! সবাই জানে, সে মুজিব কোট পরে সুবিধা নিয়েছে। দলের বিপদের মুহূর্তে কীভাবে খোলস বদলাতে পারে! রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে একের পর এক সুবিধা নিয়ে এখন ভোল পাল্টানো, বিষয়টা মোটেও সুবিধার মনে হচ্ছে না।’
প্রসঙ্গক্রমে সাইফ আরও জানান, তিনি নিজে একজন আওয়ামী সমর্থক তবে কখনো সুবিধা নেননি। কিন্তু জয় গোপনে নয়, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিয়েছেন। আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কার্যাবলি অংশ নিয়ে পেয়েছেন বহু আর্থিক সুবিধা। এ বিষয়ে সাইফ আবারও বলেন, ‘তার উচিত নুন খেয়ে গুণ গাওয়া, না পারলে চুপ থাকতে পারেন। তাই বলে ভোল পাল্টাতে পারেন না। এই সব সুবিধাবাদীর জন্য আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ভোগান্তি। আমার মন্তব্য দেখে ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছে আমাকে। তার কাছে হিসাব আরও বাকি রয়েছে। গেল পরিচালক সমিতির পিকনিকে আমরা ক্রিকেট খেলে আর্থিক পুরস্কার পাই, সেটা নিয়ে সবার খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকাও সে নিজের পকেটে রেখে দিয়েছে।'
এ প্রসঙ্গে জয় বলেন, ‘আমি কাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছি, সেটা অনেকেই জানেন। আমার প্যানেলের অনেকেই বিএনপি সমর্থক ছিলেন। আমাদের বিপরীতে ছিলেন নিপুণ আপু, তিনি নানা ভাবে আমাকে চাপ দিয়েছেন। এটা কিন্তু তখনই পরিষ্কার হয়েছে। তাহলে কী দাঁড়ায়?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু সর্বপ্রথম ছাত্রদের আন্দোলনে প্রতিবাদ করেছি। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছি। এখন ফেসবুক পোস্ট দেওয়ায় কেউ কেউ আমার মুজিব কোট পরা ছবি পোস্ট করেছেন। ওটা তো পিকনিকের ড্রেস কোড ছিল, সমিতির সদস্যদের স্বার্থে পোশাক পরেছি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বাইরে ফারুক ভাইয়ের নির্বাচনের সময় ভাই হিসেবে প্রচারণা করেছি। এটা কি অপরাধ? আর ১৫ বছর একটা দল ক্ষমতায় থাকলে কী করার থাকে? আমার প্যানেলে আমি একা কী করব? আমার কিছুই করার ছিল না, চুপ ছিলাম।’
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কাতারের আমিরের উদ্দেশে ফেসবুকে যা লিখলেন তারেক রহমান
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি, মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত
নারী শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুমে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক
শেখ হাসিনার সাথে হত্যা মামলায় জড়িত পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল আটক
বেরোবিতে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ
ঠাকুরগাঁওয়ে ইত্যাদি চিত্রায়ন অনুষ্ঠানে চেয়ার ভাঙচুর-মারামারি, অনুষ্ঠান স্থগিত
কেসিসির সাবেক কাউন্সিলর টিপু কক্সবাজারে খুন
লক্ষ্মীপুরে বিদেশি পিস্তলসহ গৃহবধূ আটক
ফটিকছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় কৃষককে পিটিয়ে হত্যা!
৭ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
ম্যাচের আগে হঠাৎ বরখাস্ত এভারটন কোচ
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে