'তাপসের অন্ধকার জগৎ এবং আওয়ামী চরিত্রহীন নেতাদের নর্তকী কান্ড'
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫১ পিএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০২ পিএম
সম্প্রতি মিডিয়া মাফিয়া তাপসের বাটপারি,নোংরামি এবং দুর্নীতির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন সময়ের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। আগষ্ট মাসের ২০ তারিখ (মঙ্গলবার) ন্যান্সির করা ঐ পোস্টে তিনি গান বাংলার মালিক এবং পরিচালনা পর্ষদের পরিবর্তন দাবি করেন।
এছাড়াও গান বাংলাকে প্রতীকিভাবে প্রাণ বাংলা বলে তিনি লিখেছেন, 'এই দেশে প্রাণ বাংলা নামে একটি গানের চ্যানেল ছিল। চ্যানেলটিতে সাদা পোশাক পরা স্বয়ং তানসেন ছিল। তানসেনের একজন বৌ ছিল। চ্যানেলটির গৃহপালিত অনেক শিল্পী ছিল। বৌটি সেসব শিল্পীর প্রিয় ভাবি ছিল। চ্যানেলটিতে এত বেশি শিল্পচর্চা হতো যে, সেখানে রাতভর সংগীত বিষয়ে গবেষণা হতো, সেটা আবার জাতি সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে লাইভে দেখতে এবং শুনতে পেতো।’
এ বিষয়ে ন্যান্সি আরও লিখেছেন,' ‘তানসেন অ্যান্ড ফ্রেন্ডস বছরজুড়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বাংলার আনাচে কানাচে জয়বাংলা কনসার্ট করে দর্শক মাতিয়ে রাখায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তানসেনের খালি কণ্ঠে গাওয়া ‘দে তালি বাঙালি’ গানে ‘পালায় না’ বলেও ভারতে পালিয়ে যাওয়া নেত্রী হাসিমুখে হাততালি দিয়েছেন। নেত্রীর অনুসারীগণ বিভিন্ন উপলক্ষে প্রায়শই কালো রং করা চ্যানেলটিতে গিয়ে নিজেদের জং ধরা কণ্ঠ ঝালাই দিতেন এবং বাহবা কুড়াতেন।’
দীর্ঘ ঐ পোস্টে এই গায়িকা আরও উল্লেখ করেন,‘বিদেশ থেকে একঝাঁক যন্ত্রশিল্পী এনে দেশীয় শিল্পীদের মেলবন্ধনে ‘দিনবদলের হাওয়া’ নামে একটি নিয়মিত অনুষ্ঠান তানসেন এবং তানসেন পরিবারের ভাবী জাতিকে উপহার দিয়েছে। নতুন আঙ্গিকে পুরাতন গানগুলোর পরিবেশনা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। কিন্তু প্রতি গানে অযাচিত তানসেনের উপস্থিতি দর্শকমনে প্রচন্ড বিরক্তির উদ্রেগ করেছে। তানসেন এবং তার স্ত্রী চ্যানেলের নিয়মিত অনুষ্ঠানের বাইরেও পারিবারিক জমকালো অনুষ্ঠান করতে গিয়ে এত অর্থের জোগান কোথা থেকে পান, আমাদের অবুঝ মনে সেইসব সবুজ প্রশ্ন প্রায়শই জেগে ওঠে।'
উক্ত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,' এখন কিছু টিভি চ্যানেল বন্ধের জোর দাবি উঠছে। বিগত সময়ে আমি বা আমরা বিতর্কিত কিছু চ্যানেলের আধিপত্যর শিকার হয়েছি। তবুও আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো টিভি চ্যানেল বন্ধের পক্ষে না। বরং প্রশ্নবিদ্ধ চ্যানেলগুলোর মালিকানা এবং পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা হোক। কেননা বিগত সরকারের সময়ে অনেক চ্যানেলে মালিকপক্ষ মালিকানা হস্তান্তর, এমনকি অনেকে জোরপূর্বক নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। শোনা যায় ‘প্রাণ বাংলা’ নামের বাংলাদেশের একমাত্র গানের চ্যানেলটি প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে দখল করে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করি। চ্যানেলগুলো হতে হবে সরকারের চাটুকারিতা এবং রাজনীতির বলয় মুক্ত।’
এছাড়াও 'ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ'র পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল,'কৌশিক হোসেন তাপস দেশে বিজাতীয় অপসংস্কৃতি ও বেহায়াপনা আমদানি করে মুসলমানদের ইমান, আকিদা ও যুব সমাজের চরিত্র ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। এরই অংশ হিসাবে সে পর্নো তারকা সানি লিওনের বাংলাদেশ সফরের ভিসা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাকে বাংলাদেশে এনে পারিবারিক অনুষ্ঠানে নাচ-গান করিয়েছেন। সেই অনুষ্ঠানের অশ্লীল ভিডিও ক্লিপস ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নৈতিক অবক্ষয় নিয়ে চিন্তিত ও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।'
আওয়ামী দুঃসাশনের সব থেকে বড় প্রজেক্ট ছিল জয় বাংলা কনসার্ট। শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে এই কনসার্ট আয়োজন করা হতো। জানা যায়, পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন তাপস। সেখান থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলেন তিনি।
এমনকি বিজয় দিবস উপলক্ষে হাতিরঝিলে হওয়া মাসব্যপী অনুষ্ঠান থেকেও তাপস বাগিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এ বিষয়ে তার আরেক পাশার দান ছিলো উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। মূলত আতিকুলের সহায়তায় অনুষ্ঠানগুলোতে নিজের হ্যাডম দেখাতেন তিনি। হাতিরঝিলের প্রোগ্রামে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন কোন কাজ না করেই। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রতিদিন ১০ লাখ টাকাও খরচ হতো কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ অথচ প্রতিদিন অনুষ্ঠানের বাজেট ধরা হতো ২ কোটি টাকা। এমনকি মেয়র আতিকের প্রভাব খাটিয়ে তাপস বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করতেন চাঁদা দেওয়ার জন্য। এমনও খবর পাওয়া যায় যে, আর্থিক সংকটে নিমজ্জিত কতিপয় ব্যাংককেও বিজ্ঞাপন দিতে বাধ্য করেন মেয়র আতিক আর সেই সুবাদে ব্যাংকগুলোর টাকা করতেন জোরপূর্বক লুট। বিজয় দিবসের ওই অনুষ্ঠানে প্রতিদিন মন্ত্রী থেকে আওয়ামী লীগের রাঘব বোয়ালরা উপস্থিত থাকতেন। আবার সেই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করতো তাপস তার গান বাংলা দুর্নীতির আখড়ার মাধ্যমে। সম্প্রচারের দোহাই দিয়েও গলাধঃকরণ করতেন মোটা অংকের টাকা।
এছাড়াও জানা যায়, আরেক বিতর্কিত যুব মহিলা লীগের নেত্রী পাপিয়ার সঙ্গেও ছিলো তার বেশ সখ্যতা। এই ভন্ড তাপস ছিলেন গুলশান-বনানীতে এসকর্ট বাণিজ্যের অন্যতম হোতা। এমনকি পাপিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর রিমান্ডে তাপসের নাম স্বীকার করলেও ছিলেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া বেশ কয়েকবছর আগে তাপসের ঘনিষ্টজন মডেল পিয়াসাও তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
এ বিষয়ে এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কর ফাঁকি দিয়ে গান বাংলার নাম করে ইউক্রেন থেকে নারী এনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য পাঠাতেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুইবার দেশটির কয়েকজন নারীকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তবে তাদেরকে ইমিগ্রেশনের ব্যবস্থা করে দেন স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
২০২২ সালে সানি লিয়ন এবং নার্গিস ফাখরিকে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করেন সালমান এফ রহমান। মেয়ের বিয়েতে নাচতে আনার নাম করে মূলত রাঘব-বোয়ালদের মনোরঞ্জন করিয়েছিলেন এই পর্নো তারকাকে দিয়ে। এমনকি বাদ যায়নি অভিনেত্রী নুসরাত জাহান, মিমি চক্রবর্তীরা। বসাতেন নোংরা যৌন লীলার পানশালা। সেখানে উপস্থিত থাকতেন অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।
তাপসের সাথে সালমান এফ রহমানের বহুদিন ধরেই ছিল সুসম্পর্ক। তার ফেসবুকে ঢুঁ মারলে দুজনের হাস্যজ্জ্বল ছবিও চোখে পড়বে। বিদ্যুৎখাতের মাফিয়া সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গেও ছিল তাপসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এমনকি নসরুল হামিদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা নিতেন তাপস। তাপসের বিরুদ্ধে কোন গণমাধ্যম কর্মী কথা বলতে গেলে পড়তে হতো মহাবিপদে।
উল্লেখ্য,জুলাই-আগস্ট মাসের গণহত্যার ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের করা একটি মামলায় রাজধানীর প্রগতি সরণি থেকে তাপসকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার এজহারে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে ছাত্রদের সাথে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ যুক্ত হন।
যেখানে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক লোককে উত্তরা পূর্ব থানাধীন সেক্টর চার এর আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাইস্কুলের সামনে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এই ঘটনায় ইশতিয়াক গুলিবিদ্ধ হন। আহত ইশতিয়াক মাহমুদ এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। যেখানে কৌশিক হোসেন তাপস মামলার ৯ নং এজাহারভুক্ত আসামি।
এছাড়াও সাধারণ মানুষের দাবি এই যে, তাপস আসলে আরও কত ধরনের ক্রাইম করেছেন এবং কত টাকা দেশ থেকে পাচার করেছেন তার সকল হিসাব নেওয়া হোক এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা হোক যেন ভবিষ্যতে মিডিয়াকে পুঁজি করে এভাবে কেউ আর হেরেমখানা,চাঁদাবাজি,নোংরা যৌন খেলায় মেতে উঠতে না পারে।
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল, প্রবল বাতাসে পরিস্থিতি ভয়াবহ
কাতারের আমিরের উদ্দেশে ফেসবুকে যা লিখলেন তারেক রহমান
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি, মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত
নারী শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুমে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক
শেখ হাসিনার সাথে হত্যা মামলায় জড়িত পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল আটক
বেরোবিতে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ
ঠাকুরগাঁওয়ে ইত্যাদি চিত্রায়ন অনুষ্ঠানে চেয়ার ভাঙচুর-মারামারি, অনুষ্ঠান স্থগিত
কেসিসির সাবেক কাউন্সিলর টিপু কক্সবাজারে খুন
লক্ষ্মীপুরে বিদেশি পিস্তলসহ গৃহবধূ আটক
ফটিকছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় কৃষককে পিটিয়ে হত্যা!
৭ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
ম্যাচের আগে হঠাৎ বরখাস্ত এভারটন কোচ
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক