রক্তপিপাসু মাকসুদের আমলনামা এবং নোংরামির ইতিবৃত্ত
১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ পিএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৫ পিএম
ভয়াবহ রক্তপিপাসু হাসিনার ষোল বছরের রেজিমের পর দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। বিতারিত হয়েছে স্বৈরাচার। তবুও তাদের প্রেতাত্মারা যেন রয়েই গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই দীর্ঘ দেড় দশকে কেবল হাসিনা একাই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠেনি বরং তৈরি করেছে বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী। একদিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগকে যেমন লেলিয়ে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পেছনে, অনুরূপভাবে তৈরি করেছে কিছু সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনকারী মানুষরূপী হায়নাকে যারা নানা ভাবে এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছে হাসিনার গুণকীর্তনের।
তারা কখনও বলছে, এমন স্বাধীনতাই কি আমরা চেয়েছিলাম তো কখনও বলছে দেশটা মৌলবাদীদের হাতে চলে গেছে। যেন তাদের একটাই কথা হাসিনা এবং তার দল ছাড়া সবাই মৌলবাদী। যেমনটা করেছিল তাদের রক্তপিপাসু নেত্রী, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ট্যাগ দিয়েছিল রাজাকার রূপে। এবার আরও একজন হাসিনার দালাল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তার বিভৎস মানুষিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সমন্বয়কদের উপর। বলছি শিল্পী নামক তৃতীয় শ্রেণীর একজন অমানুষ মাকসুদুল হকের কথা।
সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে ইতর মাকসুদ এক ঘৃণ্য বর্বরোচিত বার্তা প্রদান করেছেন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হাসনাত তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, "বিপ্লবীদের ফাঁসির দঁড়ি এগিয়ে আসছে।" তার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে মাকসুদ হুমকি দিয়ে লিখেছেন, 'ডরাস ক্যা জিহাদী ভাই, ফাঁসি তো খুবই মামুলি জিনিস কেউ স্বচক্ষে তা আজ অব্দি দেখে নাই। মাগার তোদের ফাঁসি বা জবাহ আমরা ফেসবুক, ইউটিউব এবং সকল টিভি চ্যানেলে সরাসরি লাইভ এবং আনসেন্সরড দেখুম ইনশাআল্লাহ। ভালো কথা জম তুপি (টুপি) পইড়া আমাগো মজা নষ্ট করিস না মামা। এনকেলাপ ঝিন্দাবাদ।'
তার এই লেখায় স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় কতটা নৃশংস আওয়ামী লীগের চিন্তা ভাবনা। এজন্য হয়তো হাসিনার থেকে প্রচুর অর্থের যোগান এসেছে তার কাছে। এরকম আরও অসংখ্য মাকসুদরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের চারপাশেই যারা হাসিনার দালালিতে পিএইচডি অর্জন করেছেন। তার সেই পোস্টের পরে আবারও একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, 'শুভ সকাল,ডড়াই নাই। পোস্টটি আমি না ফেইসবুক রিপোর্ট এর ঠেলায় রিমুভ করছে।' তার বার্তায় এটা খুবই স্পষ্ট যে তাদের মানসিকতা বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসেনি বরং আরও ঘৃণা ছড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুরো আন্দোলনকালীন সময়ে মাকসুদ আরও অসংখ্য পোস্ট দিয়েছেন যেখানে তিনি নানা রকম অপপ্রচার চালিয়ে গেছে। সম্প্রতি হত্যা চেষ্টা মামলায় পুলিশের কাছে আটক হওয়া হাসিনার আরেক দালাল কৌশিক হোসেন তাপসকে নিয়ে মাকসুদ লিখেছ, 'কৌশিক হোসেন তাপস মার্ডারার? কখনই না, আমার সম্পূর্ণ সমর্থন আছে তোমার প্রতি। অন্ধকার সময় কেটে যাবে'
এছাড়াও প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নোংরাভাবে বুলি আওড়িয়ে এই দালাল লিখেছে, " অবৈধ সরকার ও ‘অর্ধ নোবেল’ বিজয়ীর মদদপুষ্ট ‘বাট্টু আর গাট্টু’ গুন্ডা বাহিনীর ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্য উৎপাত ও বাড়াবাড়ি একটা চরম পর্যায়ে চলে গেছে।' এখানে দেশের আপামর ছাত্রজনতাকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করে হাসিনার মতো কুৎসিত ট্যাগ দিয়েছে এই মাতাল মাকসুদ।
এছাড়াও তিনি লিখেছেন, 'এই গুন্ডাদের ‘ঠেকানো’ যাবে না - একথা সত্য নয় । তবে দেশবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে ও ‘প্রকৃত জনগণে’ দ্বারা পরিচালিত ‘দুর্মুজ বাহিনী’ প্রস্তুত হচ্চে - যারা আবার কোনো ভাবেই ‘ফেসিস্টের দোসর’ না । বাম্বু দেয়া যখন শুরু হবে - তখন বোঝা যাবে ‘পুশ দাই নেইম ইজ ফাদার’ - ঠেলার নাম বাবাজি আগুন দিয়ে ফাগুন থামানো যাবে না।' এখানে মাতাল হলেও মাকসুদ কিন্তু তার কথার মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছে যে তার সন্ত্রাসী দল আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্রের প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে।
হাসিনার পতনকে যেন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না মূর্খ মাকসুদ। এতগুলো মানুষকে হত্যা করলো তার পিরিতের পেত্নী হাসিনা,হাজার হাজার মানুষ আহত হলো তবুও মাকসুদের নাকের পানি চোখের পানি হয়ে একাকার। বাংলাদেশের আরেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলকে একপ্রকার টোপ দিয়েই মাকসুদ লিখেছেন, '৫ আগস্টের কলঙ্কময় অধ্যায়ের পরবর্তী সময়ে বিএনপিই দেশের সর্বপ্রথম রাজনৈতিক দল, যারা এই ‘অবৈধ সরকার’-সমর্থিত তথাকথিত ‘সমন্বয়ক’ নামের ছ্যাঁচোড়-গুণ্ডাদের মুখের উপর ‘মানি না' বলার সৎসাহস দেখিয়ে তীব্র এক বৃদ্ধাঙ্গুলির ‘থাম্বস ডাউন’ দিয়েছিলো'
পোস্টটিতে, বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামিকে নিয়ে মাকসুদ কদর্য ভাষায় আক্রমন করে লিখেছেন, ‘অতি-কমজোর’ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী প্রকারন্তরে মিনমিন করে এই গুণ্ডাগুলোকে সায় দিয়ে আবারো তাদের কুক্ষিগত ‘দালাল’ ও ‘জাতীয় বেঈমান’-এর তকমা শক্ত করে পুনরুদ্ধার করলো।' অর্থাৎ এখানেও কিন্তু মাকসুদরা থেমে নেই। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশকে আবারও অশান্ত করতে। তাই বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
পোস্টে তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে মাকসুদ লিখেছে, 'রাজপুত্র তারেক রহমান লন্ডনে বসে আছেন ‘তেলের ড্রাম’ নিয়ে। গুণ্ডাসর্দারকে আওয়ামী লীগ জেনেভা এয়ারপোর্টে লাঞ্চিত করায় রাজপুত্র খুবই ‘দুঃখ’ পেয়েছেন এবং এহেন কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শক্ত ভাষায় তিরস্কার করেছেন। কেনো মহারাজ, আপনার এই দরদ হঠাৎ করে কেনো উথলে উঠলো? নাকি আপনি দেশে আসতে পারবেন ও আপনার মা বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন – সেই আশার উপর ভর করেই গুণ্ডাসর্দারের প্রতি এমন বেরহম চামচাগিরি ব্যক্তি করছেন?' এখানে দালাল মাকসুদ আসিফ নজরুলকে হেনস্তা প্রসঙ্গে এমন সব ভাষার ব্যবহার করেছেন যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এছাড়াও এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা মাহফুজ আলমের নামকে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে লেখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এটা বুঝানোর চেষ্টা করছে যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাড়া দেশ মৌলবাদীদের হাতে চলে যাবে। আপনারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবস পালন করতে পারবেন না, ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকবে না দেশ হবে হিজবুতি তাহরির।'
তার কথায় এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, হাসিনা যতই খুন করুক কোন সমস্যা নেই। আওয়ামীলীগ যতই দেশের সম্পদ লুট করুক না কেন বেহায়াপনা করতে তো দিচ্ছে। আপনারা এখন আগের মতো বেহায়াপনা করতে পারবেন না। একমাত্র হাসিনাই আপনাদের ভালো চায়। হ্যাঁ হয়তো হাজার দুয়েক লাশ পড়েছে তাতে কি হয়েছে সে যে মাদার অফ হিউম্যানিটি!! এই জারজ শিল্পী মাকসুদ বারংবার তার লেখায় চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে একটা অরাজকতার সৃষ্টি করতে। ধর্মীয় দাঙ্গা সংঘটিত করতে এবং কিছু মুলা ঝুলিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে যেন আবারও মানুষ আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেয়।
আওয়ামীলীগকে আশারবানী শুনিয়ে মাকসুদ লিখেছেন, ' উত্তেজিত হবেন না, অহেতুক লম্ফঝম্ফ পরিহার করুন। এই যুগের ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আওয়ামি লিগ কী দিতে পারে, দেশবাসী তাই দেখার জন্য আগ্রহী।' মাকসুদের মতে বাংলার মানুষ বোকা, তারা কিছু বোঝে না, তারা আওয়ামীলীগ ছাড়া চলতেই পারবে না। তাই আপনারা একটু ধৈর্য্য ধরুন। একটা মানুষ কতটা নির্লজ্জ হলে এই কথাগুলো বলতে পারে তা সত্যিকার অর্থেই বোধগম্য নয়। গোলামির তো একটা সীমা থাকে এই মাকসুদেরা সকল সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে।
মাহফুজ আলমকে আক্রমণাত্মক ভাষায় মাকসুদ আরও লিখেছেন, 'এই লোকের সিরিয়াস মানসিক চিকিৎসা দরকার। বা, নিদেনপক্ষে আমরা দাবি করতে পারি, তার একটা ‘ডোপ টেস্ট’ অনতিবিলম্বে করে তার রিপোর্ট জনসমকক্ষে প্রকাশ করা আবশ্যক। সে যে বহু পুরোনো ‘সাবস্টেন্স এবিউজার’ এবং অধিকাংশ সময় ‘ধুন/পিনিকের’ উপরেই থাকে, সেই গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বহুদিন ধরেই সয়লাব। এই অবৈধ সরকারের কোনো অধিকার নেই এহেন অসুস্থ ও নির্বিকার একটা লোককে রাষ্ট্রযন্ত্রের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ক্রমশ এগিয়ে যেতে দেওয়ার।'
এখন সময় এসেছে মাকসুদের মতো এমন ঘৃণ্য পশুদের যথাযথ শাস্তির আওতায় নিয়ে আশার। ১৬ বছরের দুর্নীতির টাকা খেয়ে খেয়ে এইসব ইতরদের গায়ে চর্বি জমে গেছে তাই বাস্তব পরিলক্ষিত হচ্ছে না তাদের কাঠের চশমায়। এখন সময় এইসব ইতর,ছোটলোক, ঘৃণ্য অমানুষদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার। বর্তমান প্রজন্ম এসব মাকসুদদের তোয়াক্কা করে না। তারা মরতে শিখে গিয়েছে তাই তাদের আর কোন ভাবেই আটকিয়ে রাখতে পারবে না হাসিনার মতো কোন ফ্যাসিস্ট এবং তাদের দোষরেরা। তারুণ্যের এই বাংলাদেশে কোন ফ্যাসিস্টের জায়গা নেই, হবে ও না। হাসনাতকে নিয়ে এই ভারতীয় তাবেদার মাকসুদ যে পৈশাচিক ভাষা ব্যক্ত করেছেন তারপর আর কোনভাবেই এদেরকে ছাড় দেওয়া ঠিক নয়। শিক্ষার্থী থেকে সাধারণ মানুষ সবার একটাই দাবি এই মাকসুদদের মতো কার্লপিটদের দ্রুত চিহ্নিত করে অতিসত্বর আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ইউক্রেনের ১ হাজার দিনের যুদ্ধ,দৃঢ় প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি
পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করে বেশি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঈশ্বরদীতে ডেঙ্গু জ্বরে ১ জনের মৃত্যু
মাস্ক লাগিয়েও রক্ষা হলো না ‘জয় বাংলা‘স্লোগানদানকারীদের : সিলেটে র্যাব হাতে গ্রেফতার ২ জন
কুয়েটে রুলস্ রেগুলেশন’স এন্ড একাডেমিক অর্ডিন্যান্স ফর ইউনিভার্সিটি লেকচারার্স’ বিষয়ক কর্মশালা
পাকিস্তানের জাহাজ বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দিল্লির বুকে কম্পন শুরু হয়েছে : রাশেদ প্রধান
সরকারের আহ্বানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গেলেন তিতুমীরের ১৪ শিক্ষার্থী
শীতে বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ বাড়ে এমন খাবার খেতে দিন
কোনো কলেজকে রাতারাতি বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব না : আইন উপদেষ্টা
রাজনৈতিক বহিরাগত থেকে ঘানার 'মিস্টার ডিজিটাল', মাহামুদু বাওমুয়া
রাষ্ট্র সংস্কার ও দুর্নীতি দমনে ১৫টি প্রস্তাবনা পেশ করলো বাংলাদেশ দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ ফোরাম
টাঙ্গাইলে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড
তিনদিনের মধ্যে আলুর দাম না কমালে ভোক্তার অফিস ঘেরাও
অপরিহার্য সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
হাসিনাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস
দেশ সবার আগে: আদানির চুক্তি নিয়ে রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট
বাংলাদেশ গ্রাজুয়েট জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের শুভ যাত্রা
করাচি-চট্টগ্রাম রুটে নিয়মিত জাহাজ পরিচালনায় আগ্রহী মালিকরা
জেনিফার লরেন্সের প্রযোজনায় ২২ নভেম্বর মুক্তি পাবে আফগান নারীদের তথ্যচিত্র ‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’
সিরিয়ায় তুর্কি হামলার কারণে ১০ লাখ মানুষ পানিবঞ্চিত