সংখ্যালঘু নাকি স্বার্থ: বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের ঠিক মাথাব্যথাটা কোথায়?
০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
এ যেন চোর শোনাচ্ছে ধর্মের কাহিনী। যে দেশের উগ্র কট্টরপন্থী জঙ্গী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে হামলা করা হয় বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনারের অফিসে, এবার সেই দলেরই আরেক হিন্দুত্ববাদী জঙ্গী বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানওয়াত যেন কুমিরের কান্না কাঁদছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পুঁজি করে।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ভারতীয় গণমাধ্যমকে বারংবার বাংলাদেশে হিন্দুদের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সরজমিনে এসে প্রতিবেদন করার আহ্বান জানালেও তারা ভারত সরকার পাঠায়নি কোন প্রতিনিধিকে। কোন ধরনের তথ্য প্রমান ছাড়াই একের পর এক করে যাচ্ছে মিথ্যাচার। দলটির নাম ভারতীয় জনতা পার্টি না হয়ে বরং ভারতীয় মিথ্যাচার পার্টি হলে বোধ হয় আরও ভালো হতো। স্বভাবতই মানুষের মাঝে প্রশ্ন জেগেছে ভারতের এতো জ্বালার কারন কি আদৌও হিন্দুদের প্রতি অত্যাচার নাকি নিজেদের স্বার্থে আঘাত?
বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। বাংলাদেশের ভালো কখনই সহ্য হয়নি পাশের দেশ ভারতের। দেশে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা প্রাণ বিসর্জন দিলেও হাসিনাকে নিয়ে দাদা-বাবুরা খাচ্ছেন দিল্লিকা লাড্ডু। খাবেনই না কেন! কেননা, স্বৈরাচারী হাসিনা এবং তার দল আওয়ামীলীগই যে তাদের একমাত্র ট্রাম কার্ড। মেগা প্রজেক্টের নামে যে হাজার হাজার কোটি টাকা ভারত হাতিয়ে নিতো এখন তো সেটা পারছে না, পারছে না ফ্রি ট্রানজিট সুবিধা নিতে। তাইতো দাদারা প্রিয়তমাকে নিজের কাছে নিয়ে সকল প্রকার নোংরা রাজনীতিতে মেতেছে।
যেখানে এতো এতো মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সেখানে হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে স্থান করে নিলেন দাদা বাবুর কোলে। অথচ পাশ্ববর্তী দেশ হিসেবে সে দেশের সরকারের উচিত ছিল বাংলাদেশের জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করার। কিন্তু তা করতে পারেননি তারা কেননা এই পুরো পরিকল্পনাই তো ভারতের। পাশ্ববর্তী দেশের জনগণকে বাদ দিয়ে বিশেষ একজনকে যখন গুরুত্ব দেয়া হয় তখন বুঝতে হবে ভারত আসলে বাংলাদেশের জনগনের কখনই ভালো চাইতে পারে না, ভারত ভালো চাইছে নিজ দেশের। দীর্ঘ ১৭ বছর লুট করার অভ্যাস কিভাবে কয়েক মাসে পরিবর্তন করা যায় তাইনা!!
নিজ দেশের মুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর তাদের নির্যাতন এখনও অহরহ ঘুরে বেড়াচ্ছে অনলাইনে। মুসলিমদের শত শত মসজিদ ভেঙ্গে তৈরি করছে মন্দির। উগ্রতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে দেশটি তাতে কোন সমস্যা নেই। তাদের একটাই সমস্যা বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী হাসিনার সময়ের তুলনায় সনাতনীরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছেন। তা যেন কানেই তুলতে রাজি নন দাদারা। কেননা তাহলে তো তাদের সংখ্যালঘু ব্যবসা তলানীতে গিয়ে ঠেকবে।
বিশ্বব্যাপী প্রোপাগাণ্ডার শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখা দেশ ভারতের পশ্চাৎদেশে সম্ভবত পাইলসের ব্যাথা সারছেই না। তাই সেই ব্যথাকে কিছুটা প্রশমিত করতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে এবার মাথা ঘামালেন বলিউডের বিতর্কিত অভিনেত্রী ও বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত।
শুক্রবার কলকাতায় এসে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পারলে কেঁদে ফেলতেন তিনি। এই জঙ্গী নেত্রী বলেন, বাংলাদেশে পরিস্থিতি খুবই দুশ্চিন্তার। বিশেষ করে হিন্দুদের জন্য। এখানে হিন্দুরা ভালো নেই। শুধু তাই নয়, তিনি আরও মিথ্যাচার করেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে।
কেবল তাই নয় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে কেন আন্দোলন হচ্ছে না, সেটা নিয়েও বিজেপি মলম বিক্রেতাদের উস্কে দিয়ে তিনি বলেন, 'পার্শ্ববর্তী দেশের পরিস্থিতি নিয়ে এদেশে কোনো আন্দোলন চোখে পড়ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ লিখছে না অল আইজ অন বাংলাদেশ। বিষয়টা অবাক লাগছে।'
এসময় এই উগ্র কট্টরপন্থী কঙ্গনা বলেন, কেউ আওয়াজ না তুললেও বাংলাদেশের ওপর চোখ রাখছেন তিনি। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে যেন দেখতেই পারছেন না কঙ্গনা,চোখে প্রচুর জ্বালা-পোড়া, হয়তো দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিসে ভুগছেন তিনি, তাই ড.মুহাম্মদ ইউনুসকে আক্রমন করে কঙ্গনা বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছেন তখন থেকেই অশান্তি ছড়াচ্ছেন। এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশের পাশে রয়েছি। বিশেষ করে ওই দেশে যে হিন্দুরা রয়েছেন তাদের সঙ্গে রয়েছি। শ্রীকৃষ্ণ সবাইকে রক্ষা করুন।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে জঙ্গী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ। এরই মধ্যে ইসকনের চরিত্রহীন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সন্ত্রাসী ইসকন বাহিনী চট্টগ্রামে নৃশংসভাবে হত্যা করে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসকনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশের অনেক জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আপামর জনগণ।
এরপরই ইসকনের ১৭ জনের আর্থিক লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। আর তাতে যেন লেজে গোবরে অবস্থা দাদা-বাবুদের।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশকে নিয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রতিত্তরে বাংলাদেশ সরকারের ক্রীড়া ও শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে লিখেছেন, 'যদি ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য সহায়তা বাড়িয়ে সহযোগিতা করতে পারে বাংলাদেশ।'
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদালের ওপর গুলিবর্ষণ
খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু
বাড়তি মেদ কমাতে ‘খাওয়া কমানো’ কতটা কার্যকর
কিশোরগঞ্জে সড়ক সংস্কার দাবিতে মানববন্ধন
আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে বিক্ষোভ
নগর ভবনের দায়িত্বশীলদের অবহেলায় নগরবাসীর দূর্ভোগসহ ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে
গ্যাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থাকবে না যেসব এলাকায়
চিন্ময় দাস ইস্যুতে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্নে মামলার তথ্য নেই বলে জানালো যুক্তরাষ্ট্র