রেমিট্যান্সে খরচ কমাতে ডব্লিউটিওকে কার্যকরি উদ্যোগের তাগিদ #মন্ত্রী পর্যায়ের সিদ্ধান্তে অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার যৌথ প্রস্তাব
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম | আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৫ পিএম
রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমাতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চলমান ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে একটি কার্যকর সিদ্ধান্ত চেয়ে যৌথ প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে ক্রস বর্ডার রেমিট্যান্সের সুবিধার্থে একটি কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারত প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলো। বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা ভারতের এ প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে চারটি দেশ যৌথভাবে এটিকে মন্ত্রী পর্যায়ের সিদ্ধান্তে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। ডব্লিউটিও'র ১৩তম মন্ত্রি পর্যায়ের সম্মেলন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে আবুধাবি ন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টারে (এডিএনইসি) শুরু হওয়া চার দিনের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন আগামীকাল বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী মার্চ মাসে 'রেমিট্যান্সের খরচ'-এর উপর একটি বিষয়ভিত্তিক অধিবেশন আয়োজন করবে ডব্লিউটিও'র ট্রেড ইন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিটি। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এ চারটি দেশ চলমান সম্মেলনে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে রেমিট্যান্সের খরচ কমাতে ছয়টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একটি কর্মসূচি হাতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- সার্বিক উন্নয়নে আন্তঃসীমান্ত রেমিট্যান্সের প্রভাব পর্যালোচনা; রেমিট্যান্সের খরচ রিভিউ ও এর প্রভাব পর্যালোচনা; প্রযুক্তি ব্যবহার, নতুন বাজারের উত্থান, বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনা প্রদান। এক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ এবং রেমিট্যান্স পরিষেবাগুলো কিভাবে ভোক্তাদের প্রভাবিত করছে তা বিবেচনা করা; রেমিট্যান্সের খরচ কমালে এর প্রভাব পরিক্ষা নিরীক্ষা করা; ডিজিটালাইজেশন এবং নতুন প্রযুক্তির উদ্ভবসহ রেমিট্যান্সের খরচ কমানোর জন্য সুযোগ চিহ্নিত করা এবং এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার উপায় অন্বেষণ ও রেমিট্যান্স পরিষেবার খরচ কমানো সম্পর্কিত সুযোগগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা। আগামী মার্চে ডব্লিউটিও'র এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়টিতে একটি স্থায়ী আলোচ্য বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একটি বিশেষ সেশনের আয়োজন করে রেমিট্যান্সের খরচ কমানোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। যা পরবর্তীতে ডব্লিউটিও'র সাধারণ পরিষদে রিপোর্ট করারও সুপারিশ করা হয়। চারটি দেশ আরও বলেছে যে, মন্ত্রী পর্যায়ের ১৩তম সম্মেলন তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে এ সংক্রান্ত কর্মসূচীর ফলাফল সাধারণ পরিষদকে পর্যালোচনার নির্দেশ দেবে। যাতে যৌক্তিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১৪তম সম্মেলনে কর্মসূচিটি কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া সহজ হয়। প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, রেমিট্যান্স পরিবার এবং সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশসহ (এলডিসি) উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক অবদান রাখছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, গত বছরে মোট ৮৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে প্রায় ৭৮ শতাংশ বা মার্কিন ডলার ৬৬৯ বিলিয়ন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে গেছে। প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, যদিও সময়ের সাথে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য বিশ্বব্যাপী গড় ব্যয় কমে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তারপরও এর ব্যয় উচ্চ রয়ে গেছে। যা বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে পরিবর্তন হয়। এই হার জাতিসংঘের অনুমোদিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি।
জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রেমিট্যান্সের লেনদেন খরচ ৩ শতাংশেরও কম হওয়া উচিত। তাই রেমিট্যান্সের খরচ কমানোর বিষয়টিকে ডব্লিউটিও'র উন্নয়ন এজেন্ডায় সংযুক্ত করার প্রস্তাবও করা হয়। কম খরচে রেমিট্যান্সসহ সস্তা, দ্রুত, আরও স্বচ্ছ এবং সহজে আন্তঃসীমান্ত লেনদেনকে যৌথ প্রস্তাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে দ্রুত পেমেন্ট সিস্টেমসহ ডিজিটাল পেমেন্ট অবকাঠামোর আন্তঃকার্যকারিতার উপর জোর দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়, ডিজিটাল রেমিট্যান্সের বৈশ্বিক গড় খরচ ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ যা নন-ডিজিটাল রেমিট্যান্সের খরচের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এ প্রসঙ্গে জেনেভাস্থ স্থায়ী মিশনের মিনিস্টার কমার্শিয়াল ও ডব্লিউটিও'র ১৩ তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য দেবব্রত চক্রবর্তী ইনকিলাবকে বলেন, ভারত রেমিট্যান্স খরচ কমানো সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছে। যদি প্রস্তাবটি গৃহীত হয় তাহলে গেটওয়ে পর্যায়ে খরচ কমবে। এতে বাংলাদেশও উপকৃত হবে। কারণ বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স গ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই বাংলাদেশ নৈতিক ভিত্তিতে প্রস্তাবটিকে সমর্থন করছে। তিনি জানান, এই প্রস্তাবে স্বল্পোন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর বড় সমর্থন রয়েছে। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে রেমিট্যান্স এবং রেমিট্যান্স গ্রহণকারী দেশ উভয়ই উপকৃত হবে। বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকরা গত বছরে ২১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। সম্মেলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, এ উদ্যোগ কার্যকরের পাশাপাশি উত্তরণের পরও এলডিসি দেশগুলোকে বাড়তি সময়ের জন্য বাজার সুবিধা পাওয়ার জন্য দ্বিপক্ষীক উদ্যোগের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মনে হচ্ছে। ডব্লিউটিও'র আওতায় প্রয়োগযোগ্যভাবে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত আশার সম্ভাবনা কম। সুতরাং বাজার সুবিধা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য উদ্যোগ কার্যকরে বাংলাদেশেও সাইড লাইনে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দিপাক্ষীকভাবে আলোচনা করছে। পরবর্তীতেও এটি অব্যহত রখাতে হবে।
বিভাগ : প্রবাস জীবন
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান