এই শীতে শিশুর যত্ন
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম
এখন প্রচণ্ড শীত! এই নিম্ন তাপমাত্রার প্রথম শিকার হয় বৃদ্ধ ও শিশুরা। বড়দের মতো আবহাওয়ার দ্রুত তারতম্যের সঙ্গে শিশুরা নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক সময়ই পারে না। শিশুরা খুব বেশি স্পর্শকাতর, তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকাল তাদের জন্য বেশি কষ্টকর ও অসহনীয় হয়ে ওঠে। জ¦র, পেট খারাপ বা ডায়রিয়া, সর্দি, কাশিসহ শ^াসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যাসহ নিউমোনিয়ায় পর্যন্ত ভুগতে দেখা যায়। এ ছাড়া শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নানা ভাইরাল জ¦রও বেশি হয়। অতএব, শীতকালে শিশুদের একটু বাড়তি যতœ প্রয়োজন। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। শীতকাল তার মধ্যে অন্যতম। বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির নানা রূপ ও প্রস্তুতি এই শীতকে ঘিরে। সচেতন নাগরিকগণ মানসিকভাবে আনন্দে উদ্বেলিত, শীতের পুরোপুরি আনন্দটুকু নেয়ার জন্য। অধিকাংশ মানুষের নিকটই শীত কিন্তু দারুণ উপভোগ্য একটি ঋতু। তবে এ ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতে শিশু-কিশোর, আবালবৃদ্ধবণিতাসহ প্রায় সবার ওপরই সবচেয়ে বেশি রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা যায়। আর এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলোÑ
শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা, সর্দি-কাশি বা কমন কোল্ড। সমস্যার ধরন হিসেবে দেখা যায়, প্রায়ই দু-তিন দিন নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি ঝরে, গলা ব্যথা করে, শুকনো কাশি থাকে; সেই সাথে জ্বর ও মাথাব্যথা তো থাকেই। শীতের আগে ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে এ ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর বেশির ভাগ হয়ে থাকে মূলত ভাইরাসজনিত জীবাণুর প্রভাবে।
সিজনাল-ফ্লু বা ভাইরাসের কারণেই হয়ে থাকে ‘সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিসঅর্ডার (স্যাড)’। এই রোগের লক্ষণগুলোও কমন কোল্ডের মতোই। এর জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসার তেমন দরকার হয় না। সাধারণ সর্দি-গরমির তথা কমন কোল্ডের মতোই উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা দিলে এমনিতেই সেরে যায়।
এ সময় সাইনোসাইটিস এবং টনসিলাইটিস-জাতীয় রোগ সাধারণ সমস্যাগুলোর অভিযোগ নিয়েই রোগী চিকিৎসকের নিকট যায়। টনসিলের সমস্যা যে কারোই হতে পারে, তবে ছোট শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়। ঠা-া পানীয় বা আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতার কারণে, এমনকি শিশুরা স্কুলে বা অন্যান্য স্থানে ধুলাবালিতে খেলাধুলা করলেও এসব রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।
করণীয়- একটু সচেতন ও সাবধান হলেই কিন্তু এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত স্বাস্থ্য বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। আমাদের নবজাতক, কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জন্য বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন। তাদেরকে নিয়মনীতি শিখানো, প্রাকৃতিক প্রতিরোধের দিকে অভ্যস্ত করে তোলা, আত্মসচেতনতা সৃষ্টি করা, মটিভেশন দেয়া ইত্যাদি অভিভাবকদের প্রধান কাজ।
ওষুধ হিসেবে- বিভিন্ন ঘরোয়া উপকরণ, হাতের কাছে থাকা ভেষজ দিয়েই তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব। লক্ষণ ও উপসর্গভিত্তিক কিছু চিকিৎসা, এমনকি কোনো চিকিৎসা ছাড়াই এসব রোগ ভালো হয়, কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। তবে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যদি কখনো শুকনা কাশি কয়েক সপ্তাহ ভোগায় তবে কাশি নাশক শিরাপ খাওয়া যাবে এবং সাথে জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ দিনে দু-তিনবার আহারের পর খাওয়ালে সিজনাল জ্বর ও সর্দি-কাশি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। সাধারণ জ্বরনাশক ও অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণের পাশাপাশি টনসিলের ব্যথা ও সাধারণ গলাব্যথায় গরম পানির গড়গড়া খুবই উপকারী। পাশাপাশি গরম গরম চা বা গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসী পাতার রস ইত্যাদি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসের পরপরই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। কাশির সাথে হলুদ বা বিবর্ণ কফ বের হলে সাথে জ্বর থাকলে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ দরকার হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো অবস্থাতেই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ নিরাপদ নয়। কারণ আজকাল দেখা যাচ্ছে, অনেক অ্যান্টিবায়োটিকই শরীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে। শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী ও সক্রিয় রাখতে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এগুলো শিশুর দেহে আরো ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ত্বকের যতœ- শীতে নবজাতক ও শিশু-কিশোরদের ত্বকের সুরক্ষায় একটু বাড়তি যতœবান হওয়া দরকার। সে ক্ষেত্রে মায়েদের করণীয় অনেক। শীতের রুক্ষতা থেকে নবজাতক ও শিশুদের রক্ষার জন্য মৌসুম উপযোগী পোশাক পড়ানো। ত্বকের সুস্বাস্থ্যে বিশেষ কেয়াল নেয়া, বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকের ময়েশ্চারাইজার জন্য হিসেবে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে অলিভঅয়েল, দুধ, মধু, গ্লিসারিন, গোলাপ জলের মিশ্রণে ব্যবহার করলে কিংবা সরাসরি প্রয়োগ করলে রুক্ষ্ম ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসে। শিশুদের যে কোনো ধরনের চুলকানি থেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শিশুর ত্বকে যে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে শিশু বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের পরামর্শ ও সেবা গ্রহণ করতে হবে।
মো: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট,
মোবাইল-০১৭১৬-২৭০১২০
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আজ কিশোরগঞ্জের দানবীর, শিক্ষানুরাগী ওয়ালী নেওয়াজ খান এর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী
'দুর্বল' দলের বিপক্ষে পয়েন্ট হারাল ইউনাইটেড
সালাহর জোড়া গোলে লিভারপুলের জয়
গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত
কুরস্ক অঞ্চলের ৪০ ভাগ খোয়ানোর স্বীকারোক্তি ইউক্রেনের
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী: বাণিজ্য উপদেষ্টা
হাজীদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন
শরীয়তপুরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভা
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ড নিহত
পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে
১৫ দিন রিমান্ড শেষে কারাগারে আব্দুর রাজ্জাক
লক্ষ্মীপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৫০ জন
নির্বাচিত সরকারই দেশকে পুনর্গঠন করতে পারে : তারেক রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটিতে অচেনা ৭ জন
মৌলভীবাজারে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা শুরু
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মডেল উদ্ভাবন
ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু ব্যবসা
বাঘায় কৃষি শ্রমিককে গলা কেটে হত্যা
কেশবপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ
হামলার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছে না বোয়ালমারীর বহু পরিবার